Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বেলডাঙায় চিনা-যোগ

কারবারের পক্ষীরাজ কালো গাড়ি

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সিআইডি গত মঙ্গলবার মধুপুরের কারখানায় যাওয়ার আগের রাতে তিনটি লছিমন ভাড়া করে তুষারের তত্ত্বাবধানেই কারখানা থেকে সরিয়ে ফেলা হয় বেশ কিছু মেশিন।

শুভাশিস সৈয়দ
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৮ ০১:০২
Share: Save:

মধুপুরের চারকোল কারখানায় দরজা খোলার পরে সিআইডি’র জালে ধীরে ধীরে ধরা পড়তে শুরু করেছে মাদক-সুতোয় জড়িয়ে পড়া একের পর এক নাম।

তাদের কারও ঠিকানা নওদা তো কারও দিল্লি। তাদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় আড়ি পাতা থেকে পা-ও পড়তে শুরু করেছে সিআইডি’র।

সেই তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে তুষার অগ্রবালের নাম। চিনা ‘সাহেবদের’ সঙ্গে বিভিন্ন ভাষায় দড় তুষারের সখ্য যে নতুন নয়, তদন্তে তা উঠে এসেছে প্রথমেই। এখন খোঁজ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, দিল্লির কাছেই রয়েছে তুষারের কারখানা। সেখানে ‘অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস’-এর আড়ালে তিনি ঠিক কী কারবার চালাতেন তা নিয়েই ধন্দে রয়েছেন গোয়েন্দারা।

চিনারা বেলডাঙায় এলেই তুষারের দিল্লি থেকে পা পড়ত মুর্শিদাবাদের এই প্রান্তিক এলাকায়। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশের নম্বর লাগানো একটি কালো গাড়িতে এই সময়ে প্রায়ই তুষারকে দেখা যেত নওদা ও বেলডাঙায়। এই সূত্রে জিতু বর্মা এবং দাত্তু বর্মা নামে নামে আরও দুই প্রবাসী কারবারির নামও পেয়েছে সিআইডি। দাত্তু-ও প্রায়ই আসত নওদায়। কারখানার শ্রমিকদের কাছে সে ‘দাদু’ বলেই পরিচিত ছিল বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সিআইডি গত মঙ্গলবার মধুপুরের কারখানায় যাওয়ার আগের রাতে তিনটি লছিমন ভাড়া করে তুষারের তত্ত্বাবধানেই কারখানা থেকে সরিয়ে ফেলা হয় বেশ কিছু মেশিন।

তা প্রথমে ভাকুড়ি মোড়ে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে একটি টাটা-৪০৭ লরিতে মেশিনগুলি তুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্যত্র। স্থানীয় লছিমন চালক জাবেকুল শেখ এবং নওশাদ এবং জাহির নামে অন্য দুই লছিমন চালক পুলিশকে জানিয়েছে, তারা ভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার টাকাও পেয়েছিল তুষষারের কাছে। জাবেকুল গোয়েন্দাদের জানান, তাদের নির্দেশ ছিল ‘মাল’ ভাকুড়ি মোড়ে পৌঁছে দেওয়ার। তার পরে সেই লরি কোন দিকে ছুটেছে তা অবশ্য তারা জানাতে পারেননি।

নওদায় এলে চিনা নাগরিকেরা যে মোবাইল নম্বরটি ব্যবহার করতেন তারও হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ওই নম্বর থেকেই তাঁরা এ রাজ্যে তাদের যোগাযোগ রক্ষা করত বলে গোয়েন্দাদের অনুমান।

মধুপুরের কারখানায় তল্লাশি এবং এলাকার মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে সিআইডি’র হাতে। সিআইডি’র এক কর্তা বলেন, ‘‘তথ্য এসেছে অনেক, তা থেকে ছেঁকে তুলতে হচ্ছে আসলটা। তবে, এই ঝাড়াই বাছাইয়ের মধ্যে সতর্ক নজর রাখতে হচ্ছে কিছু বাদ গেল কিনা।’’ আর সে ব্যাপারে, স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলাটা জরুরি বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দাদারে অনুমান, কারখানার ভিতরে কী ঘটত, তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের তেমন স্পষ্ট ধারনা না থাকলেও কথাচ্ছলে অনেক তথ্যই উঠে আসতে পারে যা কুয়াশা অনেকটাই কাটিয়ে দেবে। তাই ছাই উড়িয়েই চলেছে সিআইডি। রতন না হোক ‘অমূল্য কোনও তথ্য’ যদি উঠে আসে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CID heroin trafficking Illegal Drug trade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE