Advertisement
E-Paper

গচ্ছিত টাকা কি মিলবে? ফের প্রশ্ন আমানতকারীদের

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বাসিন্দা ছোট ব্যবসায়ী মহম্মদ মেহমুদ আলম সঞ্চিত টাকা বেশি সুদের লোভে গচ্ছিত রেখেছিলেন একটি বেআইনি লগ্নি সংস্থায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৫
টাকা ফেরতের দাবিতে সারদার আমানতকারীদের মিছিল। —ফাইল চিত্র

টাকা ফেরতের দাবিতে সারদার আমানতকারীদের মিছিল। —ফাইল চিত্র

সারদা কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে ছ’বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার হাতে প্রতারিতদের বেশির ভাগই টাকা ফেরত পাননি। এ বার ফের অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে ফের টানাপড়েন শুরু হওয়ায় তাঁদের প্রশ্ন, টাকা কি তাহলে মিলবে? নাকি খালি হাতেই বসে থাকতে হবে তাঁদের?

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বাসিন্দা ছোট ব্যবসায়ী মহম্মদ মেহমুদ আলম সঞ্চিত টাকা বেশি সুদের লোভে গচ্ছিত রেখেছিলেন একটি বেআইনি লগ্নি সংস্থায়। তিনি বলছেন, ‘‘টাকা ফেরত পাব কি না, জানি না। টাকা খুইয়ে আমাদের গ্রামের অনেকেই ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করছে।’’ ইএম বাইপাসের কাছে একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে পরিচারিকার কাজ করা এক মহিলা সঞ্চয়ের বিশ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন একটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায়। তিনি সেই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি। আলিপুরদুয়ারের এক দম্পতি হাইকোর্টে এসেও মামলা না-করেই ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘যা লম্বা তালিকা তাতে এ জীবনে টাকা পাব বলে মনে হয় না।’’

ফেরতের হিসেব
শ্যামল সেন কমিশন

• ফেরত: প্রায় ১৪৯ কোটি টাকা
• ভাঁড়ারে: প্রায় ১৪১ কোটি টাকা

এস পি তালুকদার কমিশন

• ফেরত: ৫৪ লক্ষ টাকা
• ভাঁড়ারে: ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকা


সূত্র: কলকাতা হাইকোর্ট

সারদা কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশন তৈরি হয়েছিল। সূত্রের খবর, ওই কমিশন প্রায় ১৪৯ কোটি টাকা ফেরতও দেয়।

মামলার তদন্তভার সিবিআই নেওয়ার পরে ২০১৫য় সেই কমিশন উঠে যায়। এর পরে ২০১৬য় একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারের নেতৃত্বে কমিশন তৈরি করে ৪২টি অর্থলগ্নি সংস্থার টাকা ফেরতের দায়িত্ব দেয়।

ওয়েস্ট বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রূপম চৌধুরী বলছেন, ‘‘তালুকদার কমিশন থেকে অ্যালকেমিস্টের ৭৩০ জন আমানতকারী মোট ৫৪ লক্ষ টাকা পেয়েছে। বাকিরা কিছুই পায়নি।’’ সূত্রের খবর, কমিশন এমপিএস সংস্থার কিছু সম্পত্তি নিলাম করেছে। তা থেকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। চতুর্থ দফার নিলাম শীঘ্রই শুরু হতে পারে।

আমানতকারীদের একাংশের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলছেন, সারদা, রোজ ভ্যালি, এমপিএস, অ্যালকেমিস্ট-সহ সব অর্থলগ্নি সংস্থা ধরলে কয়েক লক্ষ আমানতকারী রয়েছেন। কিন্তু যাঁরা টাকা পেয়েছেন সেই সংখ্যা তুলনায় নগন্য। বহু ক্ষেত্রেই সংস্থার বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তি নিলাম করে ক্রেতা মিলছে না। যেটুকু টাকা নিলামে আসছে, তাও খুব বেশি নয়। বহু সংস্থার কোনও সম্পত্তির হদিসই নেই। তাঁদের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে কী ভাবে? এই পরিস্থিতিতে তাঁর অভিমত, ‘‘টাকা ফেরতের বিকল্প পদ্ধতি বের করা প্রয়োজন। কোনও সংস্থা আদালতের নজরদারিতে ব্যবসা করে টাকা ফেরত দিতে চাইলে সেই অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’’

কেন্দ্র-রাজ্য দ্বৈরথ সরিয়ে এমন কোনও বিকল্প পথের সন্ধান কি করবে প্রশাসন?

সেই দিকেই তাকিয়ে প্রতারিতরা।

Chit Fund Scam Sarada Scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy