Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রূপার জবাবে অখুশি সিআইডি

সূত্রের খবর, গত ২০ জুলাই রূপাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, মামলার এক জন সাক্ষী হিসেবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। রূপা শুক্রবার রাতেই টুইট করে জানান, তিনি সিআইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে রাজি।

সিআইডি জেরার শেষে বাড়িতে রূপা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

সিআইডি জেরার শেষে বাড়িতে রূপা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

জলপাইগুড়ির শিশু পাচার কাণ্ডে ধৃত বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী জুহি চৌধুরী জেরার মুখে যা জানিয়েছেন, তার সঙ্গে দলের সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য মিলছে না বলে দাবি করল সিআইডি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর— ধৃত জুহি জেরার মুখে দাবি করেছিলেন, বিজেপি নেত্রী রূপা তাঁর সঙ্গে দিল্লির প্রভাবশালী মন্ত্রীদের যোগাযোগ করিয়ে দেবেন বলেছিলেন। শনিবার সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে জুহির দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন রূপা।

শিশু পাচারের তদন্তকারী সিআইডি-র একটি দল শনিবার সকালে গল্ফ গ্রিন এলাকার প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোডে রূপার বাড়িতে যায়। ঘণ্টা দু’য়েক জিজ্ঞাসাবাদ করে বেলা দেড়টা নাগাদ দলটি ভবানী ভবনে ফিরে যায়। তদন্তকারীরা জানান— জুহি জলপাইগুড়ির হোম সম্পর্কে জেরায় যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে রূপার বয়ানের অসঙ্গতি রয়েছে। সিআইডি-র দাবি, বিজেপি সাংসদ অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন। প্রয়োজনে ফের নেওয়া হবে রূপার বয়ান।

আরও পড়ুন: রূপাকে সিআইডি জেরা, জুহির পাশেই নেত্রী

এ দিন দুপুরে সিআইডি-র দলটি তাঁর বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরে রূপাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তদন্তকারীরা তাঁর কাছে কী জানতে চাইলেন। উত্তরে বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঁদের কোনও অভিযোগ নেই। তবে কী প্রশ্ন করেছেন, আমি-ই বা কী জবাব দিয়েছি, তা জানাতে পারব না।’’ তবে, রাজনৈতিক কারণেই জুহিকে শিশু পাচারের ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে বলে এ দিনও অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ। রূপা বলেন, ‘‘জুহি নির্দোষ। সিআইডি যত বার খুশি আমায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে!’’

সূত্রের খবর, গত ২০ জুলাই রূপাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, মামলার এক জন সাক্ষী হিসেবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। রূপা শুক্রবার রাতেই টুইট করে জানান, তিনি সিআইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে রাজি।

গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জলপাইগুড়ির বিমলা শিশু গৃহে শিশু পাচারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ওই হোমের কর্ত্রী চন্দনা চক্রবর্তীকে ডিসেম্বরেই গ্রেফতার করা হয়। ওই হোমের আধিকারিক সোনালি মণ্ডল-কেও গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। পুলিশের দাবি, চন্দনাকে জেরা করেই জুহি চৌধুরী এবং রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম সামনে আসে। এর পরে জুহিকেও গ্রেফতার করে সিআইডি। পরে ধৃত সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও জমা দেন সিআইডির তদন্তকারীরা। চার্জশিটে রূপার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ না থাকলেও, চার্জশিটে বিজেপি সাংসদের নাম রাখা হয়।

সূত্রের খবর— জুহি জেরার মুখে জানিয়েছেন, জলপাইগু়ড়ির ওই হোমটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়ার পরে জুহি বিজেপি সাংসদের সাহায্য চান। দিল্লির প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার জন্য রূপাকে অনুরোধ করেন জুহি। জেরায় মূল অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তী দাবি করেন, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে জুহি তাঁকে আলাপ করিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিজয়বর্গীয়কেও চিঠি দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল সিআইডি। বিজয়বর্গীয়ের আবেদনে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট অবশ্য তাঁকে সিআইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করেছে।

কী ভাবে বন্ধ হোম খোলানোর পরিকল্পনা হয়েছিল, কত টাকা অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তা জানার জন্য প্রথম দফায় জুহিকে জেরা করেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা। জেরায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এ দিন নথিভুক্ত করা হয় রূপার বয়ান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE