E-Paper

পড়ুয়াদের শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ে সিআইএসসিই বোর্ডের নির্দেশ

সিআইএসসিই বোর্ডের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা সাধারণ কিছু খেলাধুলো পারে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষককে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৪৩

—প্রতীকী চিত্র।

পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়নই শুধু নয়, এক জন পড়ুয়া শারীরিক দিক থেকে কতটা সক্ষম, সেই মাপকাঠিতে সে কত নম্বর পাচ্ছে, কোথায় তার খামতি আছে, সেই খামতি পূরণে কী করণীয়— এমন নানা ক্ষেত্রেও এ বার স্কুলগুলিকে মূল্যায়ন করতে হবে। এর জন্য তৈরি করতে হবে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো। সম্প্রতি তাদের অধীনস্থ স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য এই নির্দেশিকা জারি করেছে সিআইএসসিই বোর্ড। তারা জানিয়েছে, জাতীয় শিক্ষা নীতিতে প্রত্যেক পড়ুয়ার সার্বিক উন্নতির কথা বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী তাদের স্বাস্থ্য সচেতন করতে উদ্যোগী হতে হবে স্কুলগুলিকে।

সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনে থাকা স্কুলগুলির অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, এমনিতে তাঁদের স্কুলে খেলাকে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। স্কুল স্তর থেকে শুরু করে রাজ্য স্তর পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা রয়েছে। তবে, সব পড়ুয়া তাতে অংশগ্রহণ করে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করতে পারে না। সেই পড়ুয়াদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে কী করতে হবে, মূলত সেই ভাবনা থেকেই বোর্ডের এমন উদ্যোগ।

সিআইএসসিই বোর্ডের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা সাধারণ কিছু খেলাধুলো পারে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষককে। এই ধরনের খেলার মধ্যে আছে ছোট জায়গায় দৌড়, জোরে হাঁটা, স্কিপিং করা, দু’হাতে ক্রিকেট বল লোফা, আন্ডার আর্ম বল ছোড়া ইত্যাদি।

এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘এই সব পরীক্ষার জন্য কিন্তু স্কুলে বড় মাঠের দরকার নেই। ছোট জায়গাতেও ২৫ মিটারের ট্র্যাক তৈরি করে দৌড়ের ব্যবস্থা করা যায়। একই ভাবে, নির্দিষ্ট কোনও জায়গায় করা যায় স্কিপিংয়ের ব্যবস্থাও।’’ বোর্ডের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা সাধারণ কিছু যোগব্যায়াম পারে কিনা, তা দেখতে হবে। প্রতিটি স্কুলে পড়ুয়াদের উচ্চতা এবং ওজন মাপার যন্ত্র রাখারও নির্দেশ দিয়েছে বোর্ড।

এক জন পড়ুয়ার ‘বডি মাস ইনডেক্স’ (বিএমআই) কত, তা নির্ধারণ করতে হবে স্কুলকেই। কী ভাবে তা করতে হবে, তার ভিডিয়ো লিঙ্ক দিয়েছে বোর্ড। এক শিক্ষকের মতে, কোনও পড়ুয়ার দেহের ওজন এবং উচ্চতা নির্ধারণ করে তার উচ্চতার নিরিখে ওজন বেশি কিনা, সেটা বোঝা যায় বিএমআই-এর মাধ্যমে। অতিরিক্ত ওজন হলে বিভিন্ন ধরনের অসুখ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। এখনকার পড়ুয়াদের মধ্যে খেলাধুলোর প্রবণতা কমে গিয়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, কম বয়স থেকে স্থূলতা চলে এসেছে। কারও ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সে ছোট থেকে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছে। এগুলি ঠেকাতেই বডি মাস ইনডেক্স নির্ধারণ করার পাশাপাশি কিছু যোগব্যায়ামের লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। যা দেখে পড়ুয়ারা নিজেরাই শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে পারবে। সেই সঙ্গে প্রত্যেক পড়ুয়ার হেল্‌থ কার্ড তৈরি করে বছরের শেষে তার শারীরিক সক্ষমতার মূল্যায়ন করতে হবে স্কুলগুলিকে।

সিআইএসসিই বোর্ডের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন স্কুলের অধ্যক্ষেরা। ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা, রামমোহন মিশন হাই স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাসেরা বলেন, ‘‘ন্যূনতম শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়বে পড়ুয়ারা। কারণ, পড়ার চাপ নিতে গেলে সবার আগে জরুরি সুস্থ থাকা। এখন অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী পড়ার জগতের বাইরে মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকে। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে অন্তত পক্ষে নিয়মিত খেলাধুলো ও ব্যায়াম করা দরকার।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Students Fitness

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy