সোমবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ পৌঁছোনো মাত্রই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সাংসদ এবং বিধায়কদের উপর হামলার খবর পেয়েছিলেন। কালক্ষেপ না করে এক্স হ্যান্ডলে লিখেছিলেন, ‘কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা কাম্য নয়।’ তার পর হাসিমারা, নাগরাকাটার বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে সেই তিনিই বার্তা দিলেন, এই পরিস্থিতিতে কেউ যেন প্ররোচনায় পা না-দেন।
নির্দিষ্ট ভাবে কাউকে উদ্দেশ্য করেননি মমতা। তবে রাজনৈতিক মহলের অনেকের বক্তব্য, দলের লোকজনকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি। মমতা লিখেছেন, ‘‘এখন আমাদের সকলকে, সকলের পাশে থাকতে হবে। মানুষের কথা শুনতে হবে। তাঁদের অভিযোগ-অনুযোগকে গুরুত্ব দিয়ে অনুধাবন করতে হবে। আমি সকলকে বলব, প্ররোচনায় পা দেবেন না।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘‘মানুষের পাশে থাকতে যা যা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার তা মা-মাটি-মানুষের সরকার ইতিমধ্যেই করেছে। আপনারাও যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। রাজনীতি নয়, মানবতাকে পাথেয় করে এই বিপর্যয়ের দিনে মানুষের পাশে থাকুন। আমি এবং মা-মাটি-মানুষের সরকার সর্বদা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে আছি।’
ইতিমধ্যেই সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ময়দানে নেমেছে পদ্মশিবির। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে হামলার নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এমনিতেই উত্তরবঙ্গ তৃণমূলের জন্য রাজনৈতিক ভাবে কঠিন জমি। সেখানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে বিজেপি যেমন তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করতে চাইছে, তেমন শাসকদলও চাইছে সমান্তরাল ভাবে প্রশাসন ও সংগঠনকে মাঠে নামিয়ে মানুষের আস্থা অর্জনের। সেই প্রেক্ষাপটে প্ররোচনায় পা না-দেওয়ার বার্তাকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই অভিহিত করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন:
দুপুরে উত্তরবঙ্গ পৌঁছে প্রথমে হাসিমারায় যান মমতা। তার পর সেখান থেকে যান নাগরাকাটায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা ধস বিধ্বস্ত মিরিকের পরিস্থিতি পরিদর্শনে। ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকা এবং এক জনকে হোমগার্ডে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা। সরকারি ভাবে তিনি জানিয়েছেন, সোমবার রাত পর্যন্ত ২৩ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে উত্তরবঙ্গের দুর্যোগে।