দার্জিলিং সবুজ থাকুক, সুন্দর থাকুক! পাহাড়ে গিয়ে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দার্জিলিঙের ম্যালে বুধবার দুপুরে তিনি বলেন, “দার্জিলিং সবুজ থাকলে তবেই পর্যটক বাড়বে!” ‘কুইন অব হিলস্’কে চিরসবুজ রাখার জন্যই এ দিনের সভায় বিভিন্ন পরিকল্পনা খাতে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দের ঘোষণা করেন তিনি। এই টাকা রাজ্য ও কেন্দ্র মিলিত ভাবে দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিছু টাকা বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া যায় কি না তারও চেষ্টা চলছে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, দার্জিলিং এত সুন্দর, কিন্তু ক্রমবর্ধমান দূষণ তার সৌন্দর্য কেড়ে নিচ্ছে। গাড়ির ধোঁয়ায়, বাড়তে থাকা জনসংখ্যার বর্জ্যে তার অতীত গৌরব দার্জিলিং হারাচ্ছে। ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন দার্জিলিং মিশন’-এ মুখ্যমন্ত্রী তাই শৌচাগার নির্মাণে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন। দার্জিলিঙে ৫৩ হাজার শৌচাগার গড়ে তুলবে সরকার। মমতা এ দিন দাবি করেন, “আমরাই নির্মল বাংলা গড়ার অভিযান শুরু করেছিলাম। আজ ভারত সেই পথে এগোচ্ছে। দার্জিলিঙেও আমরা প্রত্যেক ঘরে শৌচাগার বানাবো।” সারা দেশের মধ্যে পরিসংখ্যানের নিরিখে জনপ্রিয় শৈলনগরী হিসেবে দার্জিলিং রয়েছে চার নম্বরে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “আমি চাই, দার্জিলিং এক নম্বরে উঠে আসুক!”
পাশাপাশি, পাহাড়ের সৌন্দর্যায়ণের জন্য ঝোরা সাফাইয়ের উপর জোর দেন তিনি। তাঁর দাবি, দার্জিলিং জেলায় দৃষ্টি আকর্ষণের মতো ঝোরার অভাব নেই। কিন্তু, দূষণে শুকিয়ে গিয়ে তার অধিকাংশই পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ! তাই মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিংয়ের প্রত্যেকটি ঝোরার সংস্কার চান। চান, তার সামনে দোকানপাট বসুক। তা হলে দার্জিলিংয়ের পর্যটন শিল্প যেমন জোরালো হবে, তেমনই ঝোরার সংস্কার কাজ এবং পরবর্তী ধাপে সুরাহা হবে কর্মসংস্থানের। এই প্রসঙ্গে পাহাড়ে বৃষ্টির জল সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেন তিনি। এখানেই থেমে থাকেনি ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন দার্জিলিং মিশন’-এর কর্মসূচি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পাহাড়ে কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য ৪৭০ হেক্টর সংরক্ষিত জমিতে চায়ের চাষ করবে সরকার। সেই চা বিক্রি করে মুনাফা কাজে লাগানো হবে পাহাড়ের জনস্বার্থে।
শিক্ষার্থীদের জন্যও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। জানান, কার্শিয়াং-এ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এডুকেশন হাব গড়ে তোলা হবে। আগেই জানা গিয়েছিল, ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন দার্জিলিং মিশন’-এ বিভিন্ন ব্লক, গ্রামভিত্তিক কমিটি গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হবে। এ দিন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুঙ্গকে পাশে বসিয়ে ভুটিয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।