Advertisement
০৮ মে ২০২৪
অন্য ঘটনায় বাঁচাল পুলিশ

ডুবন্তকে তুললেন জাতীয় সাঁতারু

কলেজ ছাত্রকে গঙ্গায় ভেসে যেতে দেখে ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করলেন জাতীয় দলের প্রাক্তন এক সাঁতারু। আর, ব্রিজ থেকে এক তরুণীকে ঝাঁপ দিতে দেখে নৌকা নিয়ে মাঝগঙ্গায় পাড়ি দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে হাওড়ার দুই প্রান্তে গঙ্গায় ডুবে যাওয়ার আগেই এ ভাবে উদ্ধার করা হল ওই দুই জনকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৪
Share: Save:

কলেজ ছাত্রকে গঙ্গায় ভেসে যেতে দেখে ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করলেন জাতীয় দলের প্রাক্তন এক সাঁতারু। আর, ব্রিজ থেকে এক তরুণীকে ঝাঁপ দিতে দেখে নৌকা নিয়ে মাঝগঙ্গায় পাড়ি দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে হাওড়ার দুই প্রান্তে গঙ্গায় ডুবে যাওয়ার আগেই এ ভাবে উদ্ধার করা হল ওই দুই জনকে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনেই এখন সুস্থ।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ হাওড়া ল়ঞ্চঘাটের ২ নম্বর জেটিতে দাঁড়ানো যাত্রীরা হঠাৎ দেখেন এক যুবক জলে ভেসে যাচ্ছেন। হাত-পা ছুড়ে বাঁচার আর্তি জানাচ্ছেন তিনি। যাত্রীদের চিৎকারে লঞ্চের কর্মীরাও ছুটে আসেন। তখনই ভিড় ঠেলে এগিয়ে এসে জামা খুলে ঝাঁপিয়ে পড়েন সুরজিৎ ঘোষ নামে ওই ব্যক্তি। পরে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করে মোট ১৯টি পদক জিতেছেন প্রাক্তন জাতীয় সাঁতারু সুরজিৎবাবু। তার মধ্যে ১২টি সোনা। বর্তমানে সুরজিৎবাবু রেলের পদস্থ কর্মী। আগেও বহু বার লঞ্চ থেকে গঙ্গায় পড়ে ডুবে যাওয়া মানুষকে উদ্ধার করেছেন।

পুলিশ জানায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার হরিনগরের বাসিন্দা পীযূষ ময়রা নামের ওই যুবক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। লঞ্চ থেকে নামার সময় তিনি পা ফস্কে জলে পড়ে যান। এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ভাত মেখে তাঁকে খাইয়ে দিচ্ছেন সুরজিৎবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে ২২ জনকে উদ্ধার করলাম। কাউকে ডুবতে দেখলে স্থির থাকতে পারি না।’’ আর পীযূষ বলছেন, ‘‘কলেজ স্ট্রিট যেতে গিয়ে ভুল করে হাওড়ার লঞ্চে উঠে পড়েছিলাম। নামতে গিয়ে পড়ে যাই। এই কাকার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’

এর আগের ঘটনাটি ঘটে সকাল ৯টা নাগাদ বালি ব্রিজের কাছে। তখন বালি ঘাটে ডিউটি করছিলেন বালি ট্রাফিক গার্ডের ইনস্পেক্টর কল্যাণ চক্রবর্তী ও এএসআই প্রবীর হোড়। হঠাৎই ব্রিজের দিক থেকে এক ব্যক্তি এসে জানান, এক তরুণী ব্রিজের রেলিংয়ে উঠেছেন। দুই অফিসার দেখেন, ওই তরুণী রেলিং থেকে গঙ্গার দিকে ঝুঁকছেন। তাঁকে নামার জন্য সবাই চিৎকার করলেও জলে ঝাঁপ দেন ওই তরুণী। তবে সাঁতার জানায় ঝাঁপ দিয়েও ডুবে যাননি নিমতার বাসিন্দা ওই তরুণী। দু’হাত তুলে বাঁচানোর জন্য আর্তি জানাতে থাকেন। তা দেখেই তড়িঘড়ি নিমতলা ঘাটে এসে মাছ ধরার নৌকা নিয়ে জলে নেমে পড়েন প্রবীরবাবু। মাঝগঙ্গা থেকে উদ্ধার করা হয় ওই তরুণীকে।

ততক্ষণে বালি থানায় খবর পাঠান কল্যাণবাবু। তিনিই স্থানীয় মহিলাদের সহযোগিতায় ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ব্রিজ থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই তরুণীর একটি ব্যাগ। তাতে তরুণীর দু’টি ছবি এবং সুইসাইড নোট মিলেছে। পুলিশকে ওই তরুণী জানিয়েছেন, বাব-মা মারা যাওয়ার পর থেকে পরিবারের অন্যদের গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE