Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Bardhaman

মসজিদের উল্টো দিকে মাথা তুলছে ‘বৃন্দাবন’

বর্ধমান শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাজেপ্রতাপপুর ট্র্যাফিক কলোনি বারোয়ারি পুজো কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩০০ জন। তাঁদের মধ্যে প্রায় দু’শো জন সংখ্যালঘু পরিবারের। আগে পুজো হত মসজিদ থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে।

বর্ধমান শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। অদূরেই মসজিদ। ছবি: উদিত সিংহ

বর্ধমান শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। অদূরেই মসজিদ। ছবি: উদিত সিংহ

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪২
Share: Save:

এলাকায় অধিকাংশ পরিবারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। পাড়ার মাঝে রয়েছে প্রাচীন মসজিদ। তার উল্টো দিকের মাঠে তৈরি হচ্ছে ‘বৃন্দাবন’। হাতে আর মোটে কয়েকটা দিন। মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি নামছে। মণ্ডপের কাজ শেষ হবে কি না, চিন্তার শেষ নেই হায়দার খান, আমিরুল হকদের।

বর্ধমান শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাজেপ্রতাপপুর ট্র্যাফিক কলোনি বারোয়ারি পুজো কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩০০ জন। তাঁদের মধ্যে প্রায় দু’শো জন সংখ্যালঘু পরিবারের। আগে পুজো হত মসজিদ থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে। গত বছর, ৯৮তম বর্ষে আর্থিক সমস্যায় পুজো বন্ধের উপক্রম হয়। তা শুনে এগিয়ে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর নুরুল আলম। তৈরি হয় নতুন কমিটি। সে বার পুজোর থিম ছিল ‘কেদারনাথ’। এ বার ১৫ লক্ষ টাকা বাজেটে থিম ‘বৃন্দাবন’। সরকারি অনুদান, সদস্যদের চাঁদা ও বিজ্ঞাপনের টাকায় আয়োজন চলছে জোরকদমে।

প্রস্তুতিতে কাঁধ মিলিয়েছেন হায়দার, ফজরউদ্দিন, সুমন দত্ত, পলাশ নাগেরা। তবে সুমনেরা জানান, পুজোর চার দিন যাতে তাঁরা পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারেন, সে জন্য তখন বেশির ভাগ দায়িত্বটা নেন হায়দারেরাই। পুজোর সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, “মসজিদের সামনে বৃন্দাবন, নমাজের পরেই পুজো— এটাই তো আমাদের সংস্কৃতি।’’ পুজোর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা স্থানীয় গুরুদ্বারের প্রধান অমৃত সিংহেরও বক্তব্য, “এখানে মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার সবই আছে। পুজো, ইদ, ছটপুজো আমরা একই ভাবে পালন করি।”

পুজো উপলক্ষে বড় মেলা বসে। এ বারও তা বসবে কি না, খোঁজ নিচ্ছেন এলাকার অনেকে। সালমা সুলতানা, মারুফা খাতুনদের কথায়, ‘‘আগের বার ‘কেদারনাথ’ হয়েছিল। ছোটদের নিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। পাহাড়ের মতো মণ্ডপ, গুহায় প্রতিমা দেখে ওরা খুব আনন্দ পেয়েছিল। এ বারও অপেক্ষায় রয়েছি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা অমরদীপ গড়াই, রবিকুমার গুপ্তেরা বলেন, ‘‘দু’বছর সবাই মিলে খুব জাঁকজমকের সঙ্গে পুজো হচ্ছে।’’

বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই এলাকায় সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানই সুন্দর ভাবে হয়। মানুষের মধ্যে দৃঢ় বন্ধনই তা সম্ভব করে তোলে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Durga Puja 2022
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE