বিলের প্রিন্ট নিতে কম্পিউটার খুলেছিলেন খড়্গপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ দফতরের এক কর্মী। নিজে থেকেই ‘রি-স্টার্ট’ হওয়ার পরে পুরো স্ক্রিন কালো। কোনও ফাইল খোলা যাচ্ছে না। এর পর নিজের থেকেই খুলে যায় একটি ‘ডায়ালগ বক্স’। যা দেখে চক্ষু ছানাবড়া ওই কর্মীর। কারণ তাতে লেখা— কম্পিউটারের সব ফাইল ‘এনক্রিপ্ট’ করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে ‘বিটকয়েন’ বা ‘ভার্চুয়াল কয়েনে’র মাধ্যমে ৩০০ ডলার দিলে তবে ফের সচল হবে কম্পিউটার, দেখা মিলবে ফাইলের। তিন পরে গুনাগার দ্বিগুণ হবে। সাত দিনের মধ্যে না দিলে আর কোনও দিন ওই তথ্য পাওয়া যাবে না বলে হুমকি দিয়েছে ফাইল পণবন্দি করার সাইবার দস্যু ‘ওয়ানাক্রাই’।
উত্তর থেকে দক্ষিণ, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ দফতরের একাধিক অফিসের কম্পিউটারে সোমবার এমন বার্তা ভেসে ওঠায় শোরগোল পড়ে যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়্গপুর মহকুমা ও পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া মহকুমার ব্রজলালচক, চৈতন্যপুর ও কাঁথির বিদ্যুৎ দফতরের বেশ কিছু কম্পিউটার, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে জেলা বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের ৩টি কম্পিউটার অকেজো হয়ে পড়ে। একই সমস্যা দেখা দেয় পুরুলিয়ার ডিভিশন অফিসে।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকেই খড়্গপুর মহকুমার বেলদা ও নারায়ণগড়ে বিদ্যুতের সাব-স্টেশনে কয়েকটি কম্পিউটারে এই ভাইরাস হানা হয়। শনিবার বিদ্যুৎ দফতরের খড়্গপুর ডিভিশনের মূল কার্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিসের কম্পিউটারেও ভাইরাস হানা দিয়েছে। সবং সাব-স্টেশনের ৪টি কম্পিউটার, মালঞ্চ সাব-স্টেশন ও নিমপুরা সাব-স্টেশনেও কম্পিউটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খড়্গপুরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার তন্ময় মহাপাত্র বলেন, “ওই সব কম্পিউটারে কাজ করা যাচ্ছে না। ফাইল নষ্ট হয়েছে। অন্য কম্পিউটারে গ্রাহক পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।” বিদ্যুৎ দফতরের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে খবর, কলকাতায় বিদ্যুৎ ভবনের মূল সার্ভারে কোনও ভাইরাস হানা দেয়নি। মনে করা হচ্ছে, কোনও অফিসের কম্পিউটারে ই-মেল খোলার সময় এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে ল্যানে সংযুক্ত একের পর এক কম্পিউটারে। ওই সব কম্পিউটার আপাতত বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। তার পরে অ্যান্টিভাইরাস চালিয়ে মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে।