E-Paper

আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে, তবু আশঙ্কা বৃষ্টিতে

শনিবার টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, “পুজোর মধ্যে আনাজের দাম মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। তবে আনাজের ট্রাক শহরে ঢুকতে না-পারলে দাম বাড়তে পারে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:০৫

—প্রতীকী চিত্র।

পুজোর আগেই এক প্রস্ত জোরালো বৃষ্টি পেয়েছে গাঙ্গেয় বঙ্গ। পুজো শেষে ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। পুজোর আগে এমনিতেই আনাজের বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। তার উপর বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হলে দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরাও। যদিও রাজ্য টাস্ক ফোর্সের দাবি, তারা বাজারে নজর রাখছে। তবে আনাজ নিয়ে ট্রাক কলকাতা শহরে ঢুকতে না-পারলে দাম বাড়ার আশঙ্কা থাকছে বলেও জানিয়েছে তারা।

শনিবার টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, “পুজোর মধ্যে আনাজের দাম মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। তবে আনাজের ট্রাক শহরে ঢুকতে না-পারলে দাম বাড়তে পারে। কৃষি সচিবকে চিঠি লিখে জানিয়েছি, শিয়ালদহ অঞ্চলে পুজোর প্রবল ভিড়ের জন্য আনাজের ট্রাক ঠিক মতো ঢুকতে পারছে না। ট্রাক ঢুকতে না পারলে জোগানের ঘাটতি হবে, দাম বাড়বে।” পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

কলকাতার বিভিন্ন বাজারে চন্দ্রমুখী আলু বিকোচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা দরে। পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা, পটল ৬০-৮০, বেগুন ৮০, উচ্ছে ৭০, ঢেঁড়স ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক-একটি ফুলকপি ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন বাজারে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচালঙ্কার দর কেজিপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের বাঁধাকপি বিকোচ্ছে ৪০ টাকায়। এক কেজি বরবটির দাম পড়ছে ৮০ টাকা।

এ দিন উত্তর শহরতলির বাগুইআটি বাজারে গিয়েছিলেন সুতপা বসু। তিনি বললেন, “জ্যোতি আলু ২০ টাকা দরে এবং চন্দ্রমুখী ৩০ টাকা দরে বিকোচ্ছে। ডাঁটা বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। কুমড়োর দাম উঠেছে কেজি প্রতি ৫০ টাকা। কাঁচকলা এক-একটি সাত টাকা করে কিনেছি।” প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কিছুটা হলেও বেড়েছে আনাজের দাম। তবে কলকাতার গড়িয়াহাট বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ মণ্ডল বলেন, “জেলায় বৃষ্টি না হলে নতুন করে আনাজের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই।”

গত কয়েক দিনে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকলের হাটে-বাজারে আনাজের দাম বেড়েছে। পটল, ঢেঁড়স ৪০-৪৫ টাকা কেজি, করলা, কাঁকরোল, বরবটি, টোম্যাটো ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সিরাজ মণ্ডল নামে এক আনাজের কারবারি বলেন, “বৃষ্টির কারণে আনাজের জোগান কমেছে। তাই বাজার তুলনামূলক ভাবে চড়া।” আনাজ চাষের অন্যতম প্রধান জেলা নদিয়ায় তেমন ক্ষতি হয়নি। জেলার সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “নিয়মিত রোদ ওঠায় অতিবৃষ্টিতে আনাজের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, তা এই মুহূর্তে অনেকটা স্বাভাবিক।”

পূর্ব বর্ধমান জেলায় পূর্বস্থলী-সহ কয়েকটি এলাকায় ভাল আনাজ উৎপাদন হয়। ওই তল্লাটের পাইকারি বাজারের আড়তদারদের দাবি, টানা বৃষ্টির কারণে এ বার আনাজের উৎপাদনও কম। তাই দামও কিছুটা বেশি আছে। হুগলিতে অতিবৃষ্টির জেরে দাম একটু বেশি ছিল। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে দাম খুব বেশি বাড়েনি। হুগলির বিভিন্ন বাজারে ঝিঙে ৩০-৪০ টাকা কেজি, পটল ৪০-৪৫ টাকা কেজি, কুমড়ো ৪০-৪৫ টাকা কেজি, ফুলকপি ৮০-১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে। টোম্যাটো বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৬০ টাকায়। পেঁয়াজ ২০ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু ২২ টাকা কেজি প্রতি বিকিয়েছে।

শেওড়াফুলি কাঁচা আনাজ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুকল্যাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নাসিক থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ ও আলু আসছে। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিছু অসাধু খুচরো ব্যবসায়ী কৃত্রিম ভাবে দাম বাড়াচ্ছে। বাজারগুলিতে সরকারি নজরদারি দরকার।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে অবশ্য আনাজের দাম বেড়ে রয়েছে। বেগুন ৮০ টাকা কেজি, পটল ৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Vegetables Price Hike Heavy Rainfall West Bengal government Special Task Force

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy