সংঘর্ষে আহতকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে।
কলেজ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রক্ত ঝরল বীরপাড়া কলেজে। টিএমসিপি ও এবিভিপির ছাত্র সংঘর্ষে আহত দু’পক্ষের ১২ জন। ছাত্র বিক্ষোভে ভাঙল বীরপাড়ার বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার গাড়িও।
বুধবার বেলা বারোটা থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় থাকলেও তার অনেক আগে থেকে কলেজ গেটের আশপাশে জমা হয় দু’পক্ষের প্রার্থীরা সহ প্রচুর বহিরাগতরা। ছিল পুলিশও। বেলা পৌনে বারোটায় প্রথমে এবিভিপির প্রার্থীদের গেট দিয়ে ঢুকতে দেয় পুলিশ। টিএমসিপি তখন দাবি করে, প্রার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতরাও ঢুকছে। তখনই বচসা শুরু হয়। তারপর জোর করে টিএমসিপির প্রার্থীরাও কলেজে ঢুকতে থাকে। অভিযোগ, টিএমসিপির প্রার্থীদের সঙ্গে লাঠি নিয়ে দল বেঁধে ঢুকতে থাকে বহিরাগতরাও। টিএমসিপির পাল্টা অভিযোগ, কলেজের দ্বিতীয় গেট দিয়ে সেই সময় এবিভিপির সঙ্গে প্রচুর বহিরাগতরাও কলেজে ঢুকে তাঁদের এক প্রার্থীকে লোহার রড দিয়ে মারতে শুরু করে।
এরপরে শুরু হয় দু’পক্ষের লাঠি, কুকরি নিয়ে কলেজ মাঠে দাপাদাপি। কলেজে মোতায়েন পুলিশবাহিনীও কিছু ক্ষণ দু’পক্ষের পিছন পিছন দৌড়াদৌড়ি করে দাঁড়িয়ে পড়ে। কাঁদানে গ্যাসের সেল নিয়ে পুলিশ এগিয়ে গেলেও তা ফাটানো হয়নি। তারপরেই সারা কলেজ মাঠে দু’পক্ষের লাঠি দিয়ে শুরু হয়ে যায় মারামারি। দু’পক্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে প্রচুর বহিরাগতদের সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ।
কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামসুন্দর প্রধান অবশ্য বলেন, “এ দিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার তারিখ ছিল। দু’পক্ষই মাঠে ঢুকে দৌড়াদৌড়ি করে। ছাত্ররা তাদের কেরামতি দেখায় মাঠে। পুলিশ মোতায়েন ছিল। কোন ছাত্রের আহত হওয়ার কোনও রিপোর্ট নেই আমার কাছে।” পরে পুলিশের তৎপরতায় বহিরাগতরা কলেজ থেকে বের হয়ে গেলে বাইরে গিয়ে শুরু হয় গাড়ি ভাঙচুর। কলেজের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা বিধায়ক মনোজ টিগ্গার গাড়ি ও টিএমসিপি-র ছাত্র নিয়ে আসা একটি ছোট ট্রাক ভাঙচুর হয়। আরও দু’টি বেসরকারি গাড়ি ভাঙচুর হয়। পরে এবিভিপির পুলিশের ভূমিকা ও টিএমসির বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ভুটান রোড অবরোধ করে। বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে গ্রেফতারের দাবিতে বীরপাড়া পুরনো বাস স্ট্যান্ডে অবরোধ শুরু করে টিএমসিপিও।
ভাঙচুর হওয়া বিধায়কের গাড়ি।নিজস্ব চিত্র।
বিধায়ক মনোজবাবুর অভিযোগ, “টিএমসি প্রচুর গুণ্ডা এনে আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র ছিঁড়ে মারধর করে। ৭ প্রার্থী আহত হয়েছে। আমার গাড়ি ভাঙচুর করে।”
টিএমসির বীরপাড়া ব্লকের সহ সভাপতি উৎপল রায় জানান, “এবিভিপির নামে বিধায়ক মনোজবাবুই প্রচুর বহিরাগতদের কলেজে নিয়ে এসে আমাদের প্রার্থীদের প্রথমে মারধর করে। আমাদের ছাত্র সংগঠনের বেশ কয়েক জন আহত হন। একজন প্রার্থীর মাথা ফেটে গিয়েছে।”বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূলের সমর্থকেরাই এবিভিপির সমর্থকদের মারধর করেছে। খবর পেয়ে বিধায়ক মনোজবাবু অবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাস্তার মধ্যেই তাঁর উপরে হামলা হয়। তিন জনের নামে অভিযোগ হয়েছে। তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে অবিলম্বে। না হলে মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করুন।’’ সংঘর্ষে পর জয়গাঁও মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পার্থসারথি মজুমদার বলেন, “দু’পক্ষের ছাত্ররা কলেজে সংঘর্ষে জড়ায়। তাতে দু’একজন সামান্য আহত হয়। ভাঙা হয় বিধায়ক মনোজ টিগ্গার গাড়ি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy