বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
বাংলা থেকে রাজ্যসভায় বাম ও কংগ্রেসের জোট-প্রার্থী হচ্ছেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যই। সীতারাম ইয়েচুরিকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দলের পলিটব্যুরোর আপত্তিতে ফের খারিজ হওয়ার পরে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশবাবুকেই বিকল্প হিসেবে চেয়েছিল আলিমুদ্দিন। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরির আলোচনায় সোমবার বিকাশবাবুর নামই চূড়ান্ত হল।
রাহুলের সঙ্গে কথা বলার পরে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সবুজ সঙ্কেতের কথা এ দিন সন্ধ্যায় সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি। আবার বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ বাম প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে দু’দলের যৌথ ঘোষণা কখন কী ভাবে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তিন বছর আগে রাজ্যসভায় প্রার্থী হয়েও শেষ সময়ের কয়েক সেকেন্ড পরে অতিরিক্ত হলফনামা জমা পড়ায় বিকাশবাবুর মনোনয়ন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। এ বার কাগজপত্র গুছিয়ে নিতে আটঘাট বেঁধে নামছেন কংগ্রেস ও সিপিএম নেতৃত্ব। বিকাশবাবু বলছেন, ‘‘হোলির জন্য মঙ্গলবার ছুটি। চেষ্টা করব বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার।’’ তৃণমূলের ঘোষিত চার প্রার্থীর মধ্যে তিন জনের মতো বিকাশবাবুও গত বছর লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন। তাঁদের প্রাথমিক হলফনামার কাজ তাই তৈরি আছে।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে ১৬৩ আইসোলেশন বেড, সীমান্ত থেকে বিমানবন্দরে চলছে নজরদারি
এখন প্রশ্ন হল, বিকাশবাবুর জয় কি নিশ্চিত? বাম ও কংগ্রেস শিবির মনে করছে, তাঁদের প্রার্থীর রাজ্যসভায় যেতে বিশেষ সমস্যা হবে না। পরিষদীয় তথ্য অনুযায়ী, দলত্যাগীদের বাদ দিয়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের মিলিত বিধায়ক-সংখ্যা এখন ৫১। তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত বিধায়ক ২০৭ জন। শাসক দল যদি পঞ্চম আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে চার প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করে যে অতিরিক্ত ভোট তাদের হাতে থাকবে, তা বাম ও কংগ্রেসের মিলিত ভোটের চেয়ে অনেকটাই কম। বাম ও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন, এমন বিধায়কের সংখ্যা ১৭। আবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির পতাকা হাতে নিয়েছেন ১০ বিধায়ক। এই সব দলত্যাগী তৃণমূলকে ভোট দিলেও তাদের পঞ্চম প্রার্থীর জয় নিশ্চিত— এমন কথা বলা যায় না।
আইনজীবী বিকাশবাবুর সঙ্গে জোট বেঁধে সারদা-সহ একাধিক মামলায় তৃণমূল শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। অধুনা বিরোধী দলনেতা মান্নানের দাবি, ‘‘আমাদের প্রার্থীকে হারাতে গেলে দল ভাঙানোর খেলায় নামতে হবে তৃণমূলকে। নিতে হবে বিজেপিতে চলে যাওয়া বিধায়কদের সমর্থনও! এমন কাজ করতে গেলে তৃণমূলেরই মুখোশ খুলে যাবে!’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সোজা পথেই বিকাশদা জিতে আসবেন।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘জয়ের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেই পঞ্চম আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে দলনেত্রী উপযুক্ত সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ শাসক শিবিরের সূত্র বলছে, এক এক জন প্রার্থীর জন্য প্রয়োজনীয় ৪৯টি ভোটের চেয়ে সামান্য বেশি করেই দিতে হবে চার প্রার্থীর রাস্তা মসৃণ করার লক্ষ্যে। তার পরে পঞ্চম প্রার্থী নিয়ে ভাবনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy