Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
CPM

আলিমুদ্দিন ব্রিগেড সমাবেশ করতে চায় কংগ্রেসকে নিয়ে

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে জোট ভেঙে পৃথক লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুপক্ষই। কংগ্রেস দু’টি আসনে জিততে পারলেও, বামেদের ঝুলি ছিল শূন্য।

জোটবার্তা স্পষ্ট করতে ব্রিগেড সমাবেশে এআইসিসি-র শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

জোটবার্তা স্পষ্ট করতে ব্রিগেড সমাবেশে এআইসিসি-র শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ২২:১৫
Share: Save:

একুশের বিধানসভা ভোটের আগেই কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে ব্রিগেড সমাবেশ করবে সিপিএম। সোমবার আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য কমিটি বৈঠক বসে। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, ভোটের আগে আগামী ফেব্রুয়ারির শেষে কিংবা মার্চের শুরুতে ব্রিগেড সমাবেশ করবে সিপিএম। সেই ব্রিগেড সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে কংগ্রেস নেতাদের। জোটবার্তা স্পষ্ট করতে এই সমাবেশে এআইসিসি-র শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোটের কথা এআইসিসি সপ্তাহখানেক আগেই ঘোষণা করেছে। জোটের ক্ষেত্রে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাবে খুশি সিপিএমও পাল্টা সৌজন্য দেখিয়ে ব্রিগেড সমাবেশে কংগ্রেস নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে রাজ্য কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘জোটকে জনমানসে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে দু’দলের নেতাদের একসঙ্গে এক মঞ্চে আসা উচিত বলেই আমরা মনে করি। তাই ব্রিগেড সমাবেশে বামফ্রন্টের শরিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে।’’

এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে জোট ভেঙে পৃথক লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুপক্ষই। কংগ্রেস দু’টি আসনে জিততে পারলেও, বামেদের ঝুলি ছিল শূন্য। তাই লোকসভা ভোটপর্ব মেটার পর থেকেই জোট-সম্পর্ক জোড়া লাগাতে উদ্যোগী হন বাম-কংগ্রেস নেতারা। ঘন ঘন বৈঠক শুরু হয়। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের প্রয়াণের পর সেই উদ্যোগ ধাক্কা খায়।

আরও পড়ুন: কৃষি আইন বাতিল: বিধানসভা ডেকে প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত মমতার

আরও পড়ুন: বৈশাখীর গোসা ভাঙল না, এলেন না শোভনও, চরম বিব্রত বিজেপি

সম্প্রতি কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী ও বাম নেতৃত্বের মধ্যে আবারও আলোচনা শুরু হয়। বামেদের সঙ্গে জোট চূড়ান্ত করতে একটি কমিটিও গড়েন বহরমপুরের সাংসদ। কিন্তু সোমবার বামেদের সঙ্গে জোট তথা আসন সংখ্যার বিষয়টি আলোচনা করতে নতুন একটি কমিটির ঘোষণা করেছে এআইসিসি। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ ওই কমিটির কথা ঘোষণা করেন। সেই কমিটিতে রাখা হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের অভিজ্ঞ সব নেতাদের। ওই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে অধীরকে। বাকি সদস্যরা— রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য ও বাঘমুণ্ডির প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো।

২০১৬ সালে তড়িঘড়ি জোট সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কংগ্রেস-সিপিএম। সে বার জোটের ‘আন্তরিকতা’ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। কারণ পরস্পরের বিরুদ্ধেই ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। তা ছাড়া সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি ও বৃন্দা কারাটরা এক মঞ্চে উঠে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে প্রচার করতে চাননি। যদিও, ব্যতিক্রম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি পার্কসার্কাস ময়দানে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে এক জনসভায় অংশ নিয়েছিলেন।

কিন্তু হুগলির একটি সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর সভাস্থল ছেড়ে যাওয়ার পরেই মঞ্চে উঠেছিলেন সীতারাম ইয়েচুরী। আবার চন্দননগরে সিপিএম প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে মান্নানের সঙ্গে মঞ্চে উঠে প্রচার করতে চাননি বৃন্দা। সেই সীতারামের উপস্থিতিতেই রাজ্য কমিটি কংগ্রেস নেতৃত্বকে ব্রিগেড সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিল।

ব্রিগেডের মঞ্চে সিপিএমের আমন্ত্রণের সিদ্ধান্তে খুশি প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এআইসিসি জোটের বিষয়ে আগেই সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিল। তাই আন্দোলনও একসঙ্গে হবে, আসন সমঝোতা করে লড়াইও একসঙ্গে হবে। ব্রিগেড সমাবেশ যখন হবে, আশা করব দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা করেই হবে। আমরা সিপিএমের সিদ্ধান্তে খুশি। একসঙ্গে পথ চলতে কংগ্রেসও তো চায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Congress Brigade Rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE