Advertisement
০৫ মে ২০২৪
CPM Congress alliance

পঞ্চায়েতে অঘোষিত জোট বামেদের সঙ্গে, মত অধীরের

পঞ্চায়েত নির্বাচনের বাস্তবতাই হল, এই ধরনের ভোটে স্থানীয় ভিত্তিতে কার সঙ্গে কার জোট হবে, তার উপরে রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ স্তরের নিয়ন্ত্রণ থাকে না।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২২ ০৭:২২
Share: Save:

রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে অঘোষিত ভাবে সমঝোতা হতে পারে বলে মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর মতে, বাস্তবতার উপরে ভিত্তি করে নিচু তলার বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা মিলেমিশে লড়াই করতেই পারেন। সিপিএমও ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে সব মানুষকে পঞ্চায়েতে একজোট করাই তাদের লক্ষ্য। তাদের মূল স্লোগান দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়ার।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের বাস্তবতাই হল, এই ধরনের ভোটে স্থানীয় ভিত্তিতে কার সঙ্গে কার জোট হবে, তার উপরে রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ স্তরের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। নিচু তলার নেতৃত্বই পরিস্থিতি বুঝে তাঁদের মতো সমীকরণ তৈরি করে নেন। বাম আমলের শেষ দিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি পঞ্চায়েত ভোটে ‘মানুষের জোট’ গড়ার ডাক দিয়েছিলেন। সে বার তিনটি জেলা পরিষদে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। এখন রাজ্যের সব জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতিও কার্যত নিরঙ্কুশ ভাবে তৃণমূলের দখলে। শাসক দলের বিরুদ্ধেই দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগে সরব সব বিরোধী পক্ষ। ফলে, নিচু তলায় বিরোধী জোটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলেই রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত।

বিধানসভা নির্বাচনে গত বছর বাম ও কংগ্রেসের জোট ছিল। ভোটে বিপর্যয়ের পরে বাম ও কংগ্রেসকে যৌথ ভাবে আর পথে নামতে প্রায় দেখা যায়নি। দু’দলের নেতৃত্ব এই নিয়ে আর আলোচনাতেও বসেননি। বরং, পুরসভার ভোটে পৃথক ভাবে লড়েই ভোট বাড়িয়েছে সিপিএম, কলকাতায় বিধানসভার তুলনায় ভাল লড়াই দিয়েছে কংগ্রেসও। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কি আবার দু’পক্ষের জোট হতে পারে? এই প্রশ্নে বিধান ভবনে সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু বলেছেন, ‘‘নিচু তলায় কংগ্রেস, বামেরা মিলেমিশে করতে পারে। পঞ্চায়েতের বাস্তবতার উপরে সবটা নির্ভর করে। সেই বাস্তবতার উপরে দাঁড়িয়ে অঘোষিত ভাবে জোট হতেই পারে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, তাঁরা বিষয়টা স্থানীয় স্তরের উপরেই ছেড়ে রাখতে চান।

এই বিষয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেছেন, ‘‘বিজেপিকে আটকাতে তৃণমূলকে সাহায্য করলাম বা তৃণমূলকে রুখতে বিজেপিকে মদত দিলাম, এর কোনওটাই কাজের কথা নয়! বিজেপি এবং তৃণমূলের হাত থেকে পঞ্চায়েতকে রক্ষা করতে সব মানুষকে একজোট করতে চাই আমরা।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েতে লুট বন্ধ করতে হবে। লুটেরাদের হাত থেকে পঞ্চায়েতকে মুক্ত করে মানুষের অধিকার ফেরাতে হবে। সেই লক্ষ্যেই গ্রামে গ্রামে পদযাত্রা চলছে আমাদের। ‘গ্রাম জাগাও, চোর তাড়াও, রাজ্য বাঁচাও’— এটাই স্লোগান।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের নেতা ফিরহাদ হাকিম অবশ্য ইতিমধ্যেই কটাক্ষ করেছেন, ‘‘কংগ্রেসও ল্যাংড়া, সিপিএমও আর এক ল্যাংড়া। দুই ল্যাংড়া একে অপরকে জডিয়ে চলার চেষ্টা করছে! কিন্তু মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছেন, উন্নয়নের পক্ষে আছেন।’’

পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির পুনরাবৃত্তির আশঙ্কাও এ দিন ফের শোনা গিয়েছে অধীরবাবুর গলায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েতে অশান্তি তো হবেই। না হলে ভাগ পাবে কী করে! দু’টো ইলেকশন, দু’টো সিলেকশন হবে। পঞ্চায়েত-পুরসভা সিলেকশন! আর দু’টো ইলেকশন হল বিধানসভা ও লোকসভা।’’ রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, কংগ্রেস শূন্যে নেমে গিয়েছে। সংগঠন, জনসমর্থন নেই বলে এ সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE