বাংলায় ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধনের (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় সংশোধন ছাড়া ‘বিহার মডেল’ চাপিয়ে দেওয়া চলবে না বলে সরব হল কংগ্রেস। এসআইআর-বিজ্ঞপ্তি জারির আগেই সর্বভারতীয় স্তরে এবং বাংলা-সহ ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে রাজ্য স্তরে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করার দাবিতেও আবার সরব হয়েছে তারা। এসআইআর-প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বাংলায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর।
কংগ্রেস নেতা মীর, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার, দলের এসআইআর সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারপার্সন প্রসেনজিৎ বসু প্রমুখ শনিবার দলের রাজ্য দফতর বিধান ভবনে এসআইআর নিয়ে তাঁদের অবস্থানের কথা ফের ব্যাখ্যা করেছেন। বিহারের নানা অনিয়মের অভিযোগকে সামনে রেখে মীর বলেছেন, “মনে হচ্ছে কমিশন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করছে। দেশে এসআইআর চালুর আগে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মত শোনা দরকার ছিল। আমাদের বক্তব্য, ভোটার তালিকা থেকে বৈধ, জীবিত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া চলবে না এবং সেখানে মৃত ও ভুয়ো ভোটারের নাম রাখা যাবে না।” এই প্রেক্ষিতেই শুভঙ্করের দাবি, “অন্য রাজ্যেও এসআইআর হওয়ার আগে বিহারের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করার জন্য জাতীয় পর্যায়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হোক। এসআইআর-সূচি ঘোষণার আগে রাজ্য স্তরেও একই ধরনের বৈঠক হওয়া দরকার। প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সংস্কার ছাড়া বিহার মডেলটি অন্য রাজ্যেচাপানো অনুচিত।”
প্রসঙ্গত, এসআইআর প্রক্রিয়াকে যথাযথ করতে ইতিমধ্যেই কমিশনের কাছে ১৬ দফা দাবির কথা লিখিত আকারে জানিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে ২০০২-এর সঙ্গে ভোটারের নাম না-মিললে ২০২১ পর্যন্ত অন্য বছরগুলির তালিকা দেখা, পরিযায়ী শ্রমিক ও বিবাহিত মহিলাদের নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা দেওয়ার মতো বিভিন্ন বিষয়। এই সূত্র ধরে প্রসেনজিৎ বলেছেন, “বিহারে যত মানুষের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের অর্ধেকের বেশি মানুষের নাম অন্যায্য ভাবে বাদ গিয়েছে। তাঁদের অনেকে পরিযায়ী শ্রমিক। এটা যাতে বাংলায় না-ঘটে, তাই এসআইআর-বিজ্ঞপ্তির আগে সর্বদলীয় বৈঠক জরুরি।”
কংগ্রেসের পাশাপাশি ‘ভুয়ো ভোটারে’র বিষয়টিকে সামনে রেখে কমিশন, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস, সবাইকে নিশানা করেছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম পশ্চিম মেদিনীপুরে এ দিন বলেছেন, “ভোটার তালিকায় মৃত বা ভেজাল ভোটারের নাম থাকবে কেন? থাকলে এর দায় কমিশনের। আর এই ভেজাল ভোটেই তা হলে জিতেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুভেন্দু অধিকারীরা। আসলে দক্ষিণপন্থী রাজনীতি শুধু মানুষকে বাদ দেওয়ার কথাই বলে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)