Advertisement
E-Paper

দ্বিধা ঝেড়ে দিদির পাশে কংগ্রেস

তাপস পালের পরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে শুধু নয় রাজ্যে-রাজ্যে মোদীর প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনেরও সিদ্ধাম্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১০
কংগ্রেসের দলীয় মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা।

কংগ্রেসের দলীয় মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা।

সকলের আগে পাশে দাঁড়াল কংগ্রেস।

তাপস পালের পরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে শুধু নয় রাজ্যে-রাজ্যে মোদীর প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনেরও সিদ্ধাম্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মোদী-বিরোধী সব দলকেই তাতে পাশে চান তিনি। কিন্তু জাতীয় কোনও বিষয় হলে এক কথা, প্রসঙ্গ দুর্নীতি হলে অন্য দলের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে নিজের নিজের অঙ্ক মাথায় রাখে সব দলই। তৃণমূলের লোকসভা নেতা সুদীপ রোজভ্যালি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পরে কিন্তু কংগ্রেস, এনসিপি আজ প্রায় এক সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। একে মোদীর প্রতিহিংসার রাজনীতি বলে মনে করছে তারাও। তবে কংগ্রেস যে ভাবে আজ তড়িঘড়ি এগিয়ে এসে মমতার পাশে দাঁড়িয়েছে, সেটি লক্ষ্যণীয়।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, সুদীপের গ্রেফতারির পরেই মমতার সঙ্গে কথা বলেন সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল। গোটা বিষয়টি জেনে নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। স্থির হয়, এই ঘটনায় মমতার পাশেই দাঁড়াবে কংগ্রেস। এর পরে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মাধ্যমে প্রকাশ্য বিবৃতিতে কংগ্রেস তার অবস্থান জানিয়ে দেয়।

রাহুলের বার্তা নিয়ে রণদীপ বলেন, ‘‘রোজ আমরা দেখছি, সিবিআই, ইডির মতো সংস্থাগুলিকে চাপ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দফতর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পরিচয় দিচ্ছে। আর যে দিন থেকে রাহুল গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেছেন, তখন থেকেই যে কোনও উপায়ে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। আজ যে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হল, তা-ও বিরোধীদের আওয়াজ চাপা দেওয়ার চেষ্টা। এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি।’’

এখানেই থেমে থাকেনি কংগ্রেস। মমতার সুরেই কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, এর আগে তাপস পাল চিট-ফান্ড দুর্নীতিতে মোদী সরকারের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র ভূমিকা নিয়েও সিবিআইকে জানিয়েছেন। কিন্তু মোদী কি তাঁকে গ্রেফতার করেছেন? সিবিআই কি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে? কংগ্রেসের মুখপাত্র সুস্মিতা দেবের কথায়, ‘‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় নরেন্দ্র মোদী এখন যে ভাবে বিরোধী ঐক্য ভাঙতে চাইছেন, সেটি নিন্দনীয়।

কংগ্রেসের মতো আগ বাড়িয়ে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি না দিলেও অন্য বিরোধী দলগুলিও তাপস-সুদীপদের গ্রেফতারকে প্রতিশোধের রাজনীতি বলেই মনে করছে। এনসিপি-র সাংসদ তারিক আনোয়ার যেমন বলেছেন, ‘‘প্রতিশোধ নিতেই মোদী একের পর এক সাংসদকে গ্রেফতার করছেন। নোট বাতিলের বিরুদ্ধে মমতা আক্রমণাত্মক হয়েছেন বলেই বদলা নিচ্ছেন তিনি। উদ্বেগের বিষয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সিবিআই-ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার করা হচ্ছে।’’

কংগ্রেস সূত্রের খবর, সুদীপকে যেহেতু একটি দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা নিয়ে মমতার পাশে দাঁড়ানো নিয়ে দলে প্রাথমিক ভাবে দ্বিধা ছিল। আহমেদ পটেল প্রথমে মমতাকে ফোন করে বিষয়টি জেনে নেন। মমতা তাঁকে জানান, বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়দের মতো বিজেপি নেতারাও একই ভাবে দোষী। কিন্তু কেন্দ্র তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু করছে না। সুদীপ বহুদিনের সাংসদ। তার উপরে লোকসভায় দলের নেতা। শুধুমাত্র বিরোধীদের জোটকে ভাঙার জন্যেই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছেন নরেন্দ্র মোদী। এর পর সনিয়া ও রাহুলের সঙ্গে আলোচনা করেই কংগ্রেস নেতৃত্ব স্থির করে, দুর্নীতির থেকেও এ ক্ষেত্রে প্রতিহিংসার রাজনীতিটাই বড় বিষয়। তার পরেই স্থির হয়, কংগ্রেস পুরোদস্তুর মমতার পাশে দাঁড়াবে। মমতাকে ফের ফোন করে তা জানিয়েও দেন আহমেদ পটেল।

মমতা-ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, কাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল আন্দোলন তো শুরু করছেই, এর পর বিজেপি মন্ত্রী ও তাঁদের ব্যক্তিগত সচিবদের বিরুদ্ধেও রাজ্য সরকার পাল্টা পদক্ষেপ শুরু করবে। আসন্ন বাজেট অধিবেশনেও যাতে বিষয়টি নিয়ে একযোগে আন্দোলন করা যায়, তা নিয়েও কংগ্রেস-সহ বাকি দলগুলির সঙ্গে কথা বলছেন মমতা।

Congress Mamata Banerjee Sudip Bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy