Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘রোগ’ থামাতে কড়া দাওয়াই চায় কংগ্রেস

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড-সহ অন্যান্য রাজ্যের মতো গণপ্রহারের ‘রোগ’ যাতে এ রাজ্যেও জাঁকিয়ে না বসে, তার জন্য রাজ্য সরকারের কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলল প্রদেশ কংগ্রেস। তাদের আশঙ্কা, গণপিটুনির ঘটনা বিক্ষিপ্ত ভাবে এ রাজ্যে ঘটতে শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বড় অশান্তি বাধতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন।

মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগরের দরিয়াপুর ঘোষপাড়া গ্রামে বাইক চুরির অভিযোগে গত ২৬ জুন গণপিটুনি দেওয়া হয় এক যুবককে। গুরুতর জখম অবস্থায় মালদহ থেকে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই শনিবার মৃত্যু হয় সানাউল শেখ নামে ওই যুবকের। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবু রবিবার বিধান ভবনে বলেন, ‘‘আমরা ভাবতাম, গণপিটুনির এই রোগ থেকে আমরা মুক্ত। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, তা নয়! কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে বৈষ্ণবনগরের ওই ঘটনায় মৃতপ্রায় যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যেতে তাঁর মাকে বলেছিল পুলিশ। এই রকম চলতে থাকলে ছোট ছোট ঘটনা থেকেই বড় অশান্তি বাধবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সোমেনবাবুর দাবি, ‘‘ওই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে এই রোগ বন্ধ করা যায়। মৃত্যুর কোনও ক্ষতিপূরণ হয় না। তবু গরিব পরিবারটিকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়া হোক।’’

ব্যান্ডেলে শনিবারই তৃণমূলের এক নেতা গুলিতে নিহত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী-সহ তৃণমূল নেতারা বলছেন, ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে শাসক দলই বেশি আক্রান্ত। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী শুধু তৃণমূলের নন, রাজ্যের সাড়ে ৯ কোটি মানুষের। রং না দেখে হিংসা থামাতে কড়া ব্যবস্থা নিন। ব্যবস্থা নিতে না পারলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দেওয়া উচিত। রেল দুর্ঘটনার দায় নিয়ে লালবাহাদুর শাস্ত্রী যেমন রেলমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দৃষ্টান্ত রেখেছিলেন।’’ কংগ্রেসের মতে, সরকারে থাকা সত্ত্বেও তৃণমূলের কর্মীদের রক্ষা করতে না পারার ‘দায়’ মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘‘বিজেপির সুরেই ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইছেন। এ সব ’৭২ সালের সংস্কৃতি! যাঁরা তরুণ প্রজন্মকে সুযোগ দিতে চাননি, মানুষের দাবি বোঝেননি, তাঁরাই এখন কথায় কথায় ইস্তফা চাইছেন। এঁদের গুরুত্ব কত, মানুষ তা জানেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Lynching Somen Mitra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE