Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কংগ্রেস নেতার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ

পঞ্চায়েত সমিতির দু’বারের প্রতিদ্বন্দ্বী তথা বহরমপুরের স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতার বিবাহিতা মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে। ওই কংগ্রেস নেতার দাবি, প্রলোভন, হুমকির মুখেও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেননি তিনি। সেই রাগেই তাঁর মেয়ের উপরে অত্যাচার করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০৪:০১
Share: Save:

পঞ্চায়েত সমিতির দু’বারের প্রতিদ্বন্দ্বী তথা বহরমপুরের স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতার বিবাহিতা মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে। ওই কংগ্রেস নেতার দাবি, প্রলোভন, হুমকির মুখেও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেননি তিনি। সেই রাগেই তাঁর মেয়ের উপরে অত্যাচার করা হয়েছে। লুঠ করা হয়েছে টাকা ও গয়নাও। শনিবার রাতের ওই ঘটনায় মোট ন’জন তৃণমূলকর্মীর বিরুদ্ধে রবিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের কাউকেই এ দিন রাত অবধি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, অভিযোগ মিথ্যা। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর জানান, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বহরমপুর-রামনগর রাজ্য সড়ক লাগোয়া এলাকায় ওই কংগ্রেস নেতার বাড়ি। কাছেই তাঁর গুদাম ঘর। শনিবার বিকালে সেখানেই ছিল জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেনের দলীয় কর্মিসভা। অভিযোগ, সেই সভাতে যাওয়ার জন্যও ওই কংগ্রেস নেতার উপরে চাপ আসে। তাঁর গুদামের সামনে সভা করা নিয়েও বচসা হয়। এরপরে সন্ধ্যায় আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে ওই কংগ্রেস নেতা চলে যান ভরতপুর থানা এলাকায়। বাড়িতে ছিলেন কেবল তাঁর মেয়ে-জামাই। বিকেলের ওই বচসার জেরে স্থানীয় এক তৃণমূলকর্মী ওই কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। রাত ৯টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে ওই নেতাকে না পেয়ে ফিরে আসে।

ওই কংগ্রেস নেতার জামাইয়ের অভিযোগ, এরপরে রাত ১১টা নাগাদ তাঁদের বাড়িতে চড়াও হন তৃণমূলকর্মীরা। তাঁর স্ত্রীর দাবি, ‘‘আলমারি ভেঙে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা এবং ১২ ভরি সোনার গয়না লুঠ করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। আমায় ধর্ষণের চেষ্টা করে। বাধা দিলে বেধড়ক মারধর করা হয়। আমার মুখে কাপড় গুঁজে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।’’ চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়। দুই সন্তানের মা ওই মহিলাকে রাতেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দ্রুত তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে।

মান্নান হোসেনকে এই প্রসঙ্গে ফোন করা হলে অন্য একজন ফোন ধরে বলেন, ‘‘মান্নানদার ডায়ালিসিস চলছে। তিনি কথা বলতে পারবেন না।’’ তাঁর ছেলে তথা রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক হোসেন বলেন, ‘‘স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য কলকাতায় রয়েছি। ওই বিষয়ে কিছু জানা নেই।’’ তবে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, ‘‘বানভাসি সাটুই-চৌরিগাছা অঞ্চলে ত্রাণের কাজ সুষ্ঠু ভাবে চলছে। তা ভেস্তে দিতে এই সব মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’

ওই কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, বহু দিন ধরেই তাঁকে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে ‘চাপ’ দিচ্ছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে দলবদল করাতে পারেনি। সেই রাগ থেকে মেয়ের উপরে অত্যাচার করা হয়েছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকে দল ভাঙাতে প্রথমে নানা রকমের প্রলোভন দেখাচ্ছে। তাতে কাজ না হলে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নিগ্রহ করছে। রেয়াত করছে না বাড়ির মহিলাদেরও। উল্টে নানা ক্ষেত্রে আক্রান্তদের নামে মিথ্যে মামলা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE