Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Congress

Congress: সংগঠনে ঝাঁকুনি দিতে পঞ্চনীতির বার্তা কংগ্রেসে

পিএসি-র দু’টি পদের মধ্যে একটি থেকে তাঁর সরে দাঁড়ানো সময়ের অপেক্ষা বলেই কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

 সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২২ ০৬:২৩
Share: Save:

সিপিএমের পরে এ বার পরিবর্তনের হাওয়া কংগ্রেসের অন্দরে!

উদয়পুরে দলের ‘নব সঙ্কল্প’ শিবিরের পরে সংগঠনে বড়সড় রদবদল আনতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। টানা পাঁচ বছরের বেশি কোনও পদে থাকলে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া বা ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনে চলার বার্তার পাশাপাশি এ বার সর্ব স্তরের কমিটি তৈরি বা পদাধিকারী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ৫০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ৫০% জায়গা রাখার কথা বলা হচ্ছে। যে ভাবে সিপিএম এবং সিপিআইয়ের মতো বাম দল তরুণ মুখকে সংগঠনে তুলে আনছে, কংগ্রেসের ভাবনাও অনেকটা সেই রকম। এই পরিকল্পনা কত দূর কার্যকর হবে, তা নিয়ে অবশ্য কংগ্রেসের অন্দরেই প্রশ্ন রয়েছে। তবে বাস্তবে প্রয়োগ শুরু হলে বেশ কিছু রদবদল হবে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেসেও।

নব সঙ্কল্প শিবিরে বিভিন্ন স্তরের সাংগঠনিক নিয়োগের ক্ষেত্রে যে সব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, তার ভিত্তিতে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল চিঠি পাঠিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মধুসূদন মিস্ত্রিকে। দেশ জুড়েই কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন আসন্ন। বিভিন্ন স্তরে সাংগঠনিক নিয়োগের সময় যাতে ওই সব নীতি ও সিদ্ধান্ত মাথায় রাখা হয়, মধুসূদনকে তা-ই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বেণুগোপাল। এআইসিসি-র নির্দেশিরা মেনেই রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস সঙ্কল্প শিবির শুরু করেছে। বাংলায় যে শিবির হওয়ার কথা আগামী ৪-৫ জুন।

এআইসিসি যে পাঁচ দফা সাংগঠনিক নীতির রূপরেখা তৈরি করেছে, সেখানে বলা হয়েছে: একই পদে পাঁচ বছরের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না। ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতিও মেনে চলতে হবে। এই নীতি মেনে মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতাও পদ ছেড়ে দিয়েছেন। এ রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এখন লোকসভার বিরোধী দলের নেতা, সেই সঙ্গে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিরও (পিএসি) চেয়ারম্যান। সম্প্রতিই পিএসি-র পদে তিনি ফের নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি দু’টি পদের মধ্যে একটি থেকে তাঁর সরে দাঁড়ানো সময়ের অপেক্ষা বলেই কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি।

সঙ্কল্প শিবিরের ‘সঙ্কল্প’ মেনে এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত প্রদেশ কংগ্রেসের আইন ও মানবাধিকার শাখার চেয়ারম্যান ঋজু ঘোষাল শুধু স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন। শঙ্কর মালাকার, নেপাল মাহাতো, মোহিত সেনগুপ্ত, তাপস মজুমদারের মতো নেতারা দীর্ঘ দিন জেলা সভাপতি পদে আছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে এই নতুন সাংগঠনিক নীতি কার্যকর করার কোনও পদক্ষেপ হয় কি না, তা নিয়ে চর্চা চলছে কংগ্রেসের অন্দরে।

পদ বা কমিটির ক্ষেত্রে ৫০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ৫০% জায়গা বরাদ্দ করা, মহিলা, তফসিলি জাতি ও জনজাতি ও সংখ্যালঘুদের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব রাখা এবং ব্লক কমিটি ছাড়াও মণ্ডল কংগ্রেস কমিটি (এ রাজ্যের ক্ষেত্রে যা পঞ্চায়েত স্তরের সমতুল) গড়ার কথা বলা হয়েছে এআইসিসি-র সাংগঠনিক রূপরেখায়। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, এ রাজ্যে বহু ব্লক কমিটি আছে, যেখানে দীর্ঘ দিন নেতৃত্বে কোনও বদল হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শ মানলে ব্লক স্তরে এখন প্রদেশ কংগ্রেসকে নজর দিতে হবে, গড়তে হবে ব্লক ও জেলার মধ্যবর্তী কমিটিও।

এমন রূপরেখার প্রেক্ষিতে এ রাজ্যের কংগ্রেসে কোনও বার্তা উঠে আসে কি না, সেই প্রশ্নেই নজর থাকছে সঙ্কল্প শিবিরে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘পরিকল্পনা কত দূর কার্যকর হবে, জানা নেই। তবে হলে বড়সড় ঝাঁকুনিই আসবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE