Advertisement
E-Paper

সতর্কতাই হৃদ্‌রোগের আসল দাওয়াই

শরীর তার মতো করে জানান দিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু অসচেতনতার জন্য রোগী বা তাঁর আশেপাশে থাকা কেউ বুঝতেই পারলেন না যে, তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৮

শরীর তার মতো করে জানান দিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু অসচেতনতার জন্য রোগী বা তাঁর আশেপাশে থাকা কেউ বুঝতেই পারলেন না যে, তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে সময়মতো চিকিৎসাও শুরু হল না। মৃত্যুকে তখনকার মতো হয়তো রুখে দেওয়া যেত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা আর করা গেল না।

হৃদ্‌রোগের উপসর্গ সম্বন্ধে সচেতন হতে হবে। বেরিয়ে আসতে হবে হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে চলতি ধারণা থেকে। একমাত্র বুকের বাঁ দিকে ব্যথা মানেই হার্ট অ্যাটাক নয়। হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন ‘সোসাইটি ফর কার্ডিয়াক ইন্টারভেনশন’ বা এসসিআইয়ের এক আলোচনাসভায় বারবার জানালেন চিকিৎসকেরা।

তা হলে আর কী ধরনের শারীরিক লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে?

চিকিৎসকেরাই জানালেন:

• চোয়ালে বা কাঁধ থেকে হাতে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

• বুকে ভারী পাথর চাপিয়ে দেওয়ার অনুভূতি হতে পারে।

• কোনও কোনও সময় আক্রান্তের শুধু দমের কষ্ট হয়।

• ঘাম হয় দরদরিয়ে।

• নাড়ির গতির হেরফের ঘটে।

• বমি-বমি ভাব হয়।

এমন উপসর্গ দেখা গেলে কোনও রকম ঝুঁকি না-নিয়ে রোগীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি, হার্ট অ্যাটাক কম বয়সেও হয়। হতে পারেই।

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কাদের বেশি, হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে কী খাওয়া উচিত, দিনযাপনে কী পরিবর্তন আনা উচিত, পেসমেকার বসানো বা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির পরে কোন কোন ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে— এ-সবই ছিল ২৫ জুলাইয়ের ওই সভার আলোচ্য। ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট প্রকাশচন্দ্র মণ্ডল যেমন জানালেন, ছেলেদের হৃদ্‌রোগের সম্ভাবনা মেয়েদের তুলনায় বেশি। আবার যাঁদের বংশে হৃদ্‌রোগের ইতিহাস রয়েছে, যাঁরা উচ্চাকাঙ্ক্ষী বা খুঁতখুঁতে এবং নিজেদের স্বভাবের জন্যই জীবনে ‘স্ট্রেস’ ডেকে
আনেন, যাঁরা ধূমপান করেন বা মদ্যপান করেন, যাঁদের ওজন বেশি এবং শারীরিক পরিশ্রম কম, যাঁরা ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাঁদের সব সময়েই হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।

প্রতিকারে কী কী করা দরকার?

ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট দেবদত্ত ভট্টাচার্যের পরামর্শ:

• পরিমাণে কম, কিন্তু বারে বারে খেতে হবে।

• ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

• রোজ সকালে হাঁটা বা ব্যায়াম করা দরকার।

• ভাত-রুটি কমিয়ে রোজের খাবারে যতটা সম্ভব শাকসব্জি-ফল বাড়াতে হবে

• ডিপ ফ্রাইয়ের বদলে ‘স্যালো ফ্রাই’ অর্থাৎ অল্প তেলে খাবার সেঁকে নিতে হবে।

• ছাড়তে হবে কাঁচা নুন।

• প্রাতরাশে খাবারের পরিমাণ সব চেয়ে বেশি আর রাতে সব চেয়ে কম খেতে হবে।

• অল্প মাখন খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু কখনওই মার্জারিন নয়।

মোবাইল ফোন সম্পর্কে বিশেষ ভাবে সতর্ক করে দিলেন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট মনোতোষ পাঁজা। তিনি জানান, যাঁদের পেসমেকার আছে, মোবাইল ব্যবহারের সময় সেটি যেন পেসমেকারের থেকে অন্তত ছ’ইঞ্চি দূরে থাকে। যে-দিকে পেসমেকার রয়েছে, তার উল্টো দিকের কানে ও হাতে মোবাইল ধরতে হবে। বুকপকেটে মোবাইল রাখা যাবে না। ‘‘মেটাল ডিটেক্টর লাগানো গেট এড়াতে হবে। সে-জন্য হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছ থেকে ‘পেসমেকার আইডেন্টিফিকেশন কার্ড’ করিয়ে নিতে হবে এবং সেটি সঙ্গে রাখতে হবে,’’ বললেন মনোতোষবাবু।

parijat bandyopadhyay heart attack cardiac arrest cardiac diseases alertness consciousness
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy