Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩
Kanthi Rape case

মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ! ধর্ষণে অভিযুক্ত কাঁথির ছাত্রনেতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে

মঙ্গলবারই এই মামলার তদন্তকারী পুলিশকে ধমক দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেননি কেন? তিনি কোথায় জানেন না?’’

বুধবার সকালে তৃণমূল ছাত্রনেতার আইনজীবী উপস্থিত হন হাই কোর্টে। বিচারপতি মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান।

বুধবার সকালে তৃণমূল ছাত্রনেতার আইনজীবী উপস্থিত হন হাই কোর্টে। বিচারপতি মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:০২
Share: Save:

কাঁথি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করতে বলেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সেই সিদ্ধান্তকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন কাঁথির অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্রনেতা শুভদীপ গিরি। বুধবার তাঁকে মামলা করার অনুমতিও দিয়েছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

মঙ্গলবারই নিজের এজলাসে এই মামলার তদন্তকারী পুলিশকে ধমক দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেননি কেন? তিনি কোথায় জানেন না?’’ বিচারপতির সেই প্রশ্নের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বুধবার সকালে তৃণমূল ছাত্রনেতার আইনজীবী উপস্থিত হন হাই কোর্টে। বিচারপতি মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করার অনুমতি চান তিনি। আদালত সেই মামলা করার অনুমতি দিয়েছে গিরিকে।

মঙ্গলবার কাঁথির ধর্ষণ মামলাটি বিচারপতি মান্থার একক বেঞ্চে উঠলেও এ নিয়ে নতুন কোনও নির্দেশ দেননি বিচারপতি। তিনি শুধু এই মামলার তদন্তকারী কাঁথি থানার মহিলা অফিসার রুমা মণ্ডলকে তাঁর নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। একই সঙ্গে শুভদীপের আইনজীবীর কাছেও জানতে চান, হাই কোর্টের গ্রেফতারির নির্দেশ সত্ত্বেও কেন শুভদীপের আইনজীবী নিম্ন আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। বুধবার সেই আগাম জামিনের মামলারও শুনানি হওয়ার কথা নিম্ন আদালতে। তবে তার আগেই ধর্ষণে অভিযুক্ত কাঁথির তৃণমূল ছাত্রনেতা হাই কোর্টের গ্রেফতারির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাজির হলেন হাই কোর্টেই।

কাঁথির ধর্ষণের মামলায় নির্যাতিতার পরিবার অভিযোগ এনেছিল কাঁথির তৃণমূলের ছাত্রনেতা শুভদীপের বিরুদ্ধে। গত ১০ জানুয়ারি কাঁথি থানায় অভিযোগ জানান নির্যাতিতার বাবা-মা। তার ঠিক ন’দিনের মধ্যেই কাঁথি পুলিশের তদন্তে ভরসা নেই জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। গত ১৯ জানুয়ারি কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হয় মামলা। তার পর পাঁচ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। আদালত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার নির্দেশও দিয়েছে। তার পরও শুভদীপকে পুলিশ গ্রেফতার না করায় মঙ্গলবার পুলিশের তদন্ত নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। মঙ্গলবার তদন্তকারী পুলিশকর্তাকে তিনি বলেন, ‘‘আপনি সঠিক ভাবে তদন্ত করছেন না... । যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে (শুভদীপকে) গ্রেফতার করুন।’’

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত গত অক্টোবরে। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, শুভদীপ তাঁদের কন্যার সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছিলেন। মোবাইলে একান্ত মুহূর্তের বেশ কিছু ছবিও তুলে রেখেছিলেন। কিন্তু পরে শুভদীপ বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতিতা তাঁকে সেই সব ছবি মুছে ফেলতে বলেন। গত ১৪ অক্টোবর সেই ছবি মোছার অজুহাতে প্রাক্তন বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে দিঘার একটি হোটেলে যান শুভদীপ। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, সেখানেই তাঁদের কন্যাকে ধর্ষণ করেন ওই তৃণমূল ছাত্রনেতা। যার জেরে গত ১ নভেম্বর ওই নির্যাতিতা আত্মহত্যা করতে যান। নির্যাতিতার বাবা-মা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কাঁথির থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকি, আদালত তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বললেও তা মানা হয়নি। আইন বাঁচানোর জন্য শুধু এক কনস্টেবলকে রাখা হয়েছিল বাড়ির বাইরে। কিন্তু তার পরও বাড়িতে ইট ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, রাতে এসে হুমকিও দিয়ে গিয়েছেন অজ্ঞাতপরিচয় কিছু ব্যক্তি। মঙ্গলবার এই অভিযোগ শোনার পর বিচারপতি মান্থা নির্যাতিতার বাড়ির সামনে পুলিশ পিকেট বসানোর নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.