E-Paper

ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে বিকট শব্দে আতঙ্ক

পুলিশের তরফে দাবি, বিভিন্ন থানার কর্মীদের নিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের লঞ্চপ্যাড এলাকায় বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকেই আওয়াজ এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:০৪
জুনপুট কোস্টাল থানার সামনে বিক্ষোভ মৎস্যজীবীদের।

জুনপুট কোস্টাল থানার সামনে বিক্ষোভ মৎস্যজীবীদের। — নিজস্ব চিত্র।

রবিবারের ছুটির দুপুর। আচমকা বিকট আওয়াজে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির জুনপুট। তাতে আতঙ্কিত এলাকার মৎস্যজীবীরা। কারণ, অদূরেই তৈরি হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। সকলের মনেই প্রশ্ন— সেখানে কিছু হল না তো! পরে জানা যায়, ওই এলাকায় চলছে জেলা পুলিশের ‘অ্যানুয়াল মাস্কেটিং’ প্রশিক্ষণ শিবির। দাবি, আওয়াজ এসেছে সেই শিবির থেকে। তত ক্ষণে মৎস্যজীবীরা জুনপুট উপকূল থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। উত্তেজিত জনতা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের লঞ্চপ্যাডে ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। দাবি, সেখানে একটি টিনের দরজাও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

কাঁথি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে জুনপুট। সেখানে ‘ডিআরডিও’ গড়েছে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। উৎক্ষেপণের সময়ে ক্ষতির আশঙ্কায় কাঁথি-১ ব্লকের বিরামপুট এবং দেশপ্রাণ ব্লকের চেচড়াপুটের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই আবহে এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ ওই এলাকায় বিকট শব্দ শোনা যায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মৎস্যজীবীরা। অনেকেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান। স্থানীয়দের দাবি, এক শিশু ও দুই মহিলা সংজ্ঞা হারান।

এর পরই শুরু হয় বিক্ষোভ। জুনপুট, হরিপুর-সহ আশপাশের এলাকার মৎস্যজীবীরা জুনপুট উপকূল থানায় বিক্ষোভ দেখান। কাঁথি থেকে জুনপুটগামী রাজ্য সড়ক প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরোধ করেন তাঁরা। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র করতে দেওয়া চলবে না বলে স্লোগানও ওঠে। স্থানীয় মৎস্যজীবী শ্রীপতি দোলই এবং জাহেদ আলির কথায়, ‘‘শুনেছি ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ এখানে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হবে। তার মধ্যে এ দিন বিকট আওয়াজ।’’ এ দিন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন কাঁথি-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূল নেতা আমিন সোহেল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখানের মানুষকে মরতে দেব না। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র যাতে না হয়, সে জন্য আন্দোলন হবে।’’

পুলিশের তরফে দাবি, বিভিন্ন থানার কর্মীদের নিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের লঞ্চপ্যাড এলাকায় বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকেই আওয়াজ এসেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জেলা পুলিশের প্রশিক্ষণের অঙ্গ হিসেবে এ দিন জুনপুটে শিবির হয়েছিল। এলাকাবাসী ভুল ভেবেছিলেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটেছে।’’ কিন্তু যে জমি কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ডিআরডিও’-কে হস্তান্তর করা হয়েছে, সেখানে কী ভাবে জেলা পুলিশের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গিয়েছে।

এলাকাবাসীকে সরানো নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন। তা জেলাশাসকের মাধ্যমে ডিআরডিও’র কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক তনবীর আফজল বলেন, ‘‘কবে উৎক্ষেপণ করা হবে, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ডিআরডিও চূড়ান্ত কিছু জানায়নি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Contai noise East Midnapore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy