Advertisement
E-Paper

মেধা তালিকায় টক্কর দিল কোচবিহার আর বাঁকুড়া, দারুণ ফল উত্তরবঙ্গের

শহুরে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ ইদানীং আইসিএসই অথবা সিবিএসই বোর্ডের অন্তর্গত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি হয়। কাজেই বেশির ভাগ মেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীই ওই বোর্ডের হয়ে পরীক্ষা দেয়। আর সে জন্যই মাধ্যমিকে মেধার বিচারে কলকাতার থেকে জেলার ছাত্রছাত্রীরা অনেকটাই এগিয়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ১৭:৫০
মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারা। মেদিনীপুরের একটি স্কুলে বুধবার।ছবি- সৌমেশ্বর মণ্ডল

মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারা। মেদিনীপুরের একটি স্কুলে বুধবার।ছবি- সৌমেশ্বর মণ্ডল

মাধ্যমিকের ফলে কলকাতার থেকে অনেকটাই এগিয়ে রাজ্যের জেলাগুলি। বুধবার ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, মেধাতালিকার প্রথম দশে রয়েছে মোট ৫৬ জনের নাম। তার মধ্যে কলকাতার মাত্র দু’জন। বাকি ৫৪ জনই বিভিন্ন জেলার। কলকাতার ফল কেন এত খারাপ, বিশেষজ্ঞ কমিটি তা খতিয়ে দেখবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর।

জেলাগুলির মধ্যে আবার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দেখা গিয়েছে বাঁকুড়া এবং কোচবিহারের মধ্যে। মেধাতালিকায় প্রথম দশে রয়েছে বাঁকুড়ার ১০ পরীক্ষার্থীর নাম। তার মধ্যে বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাই স্কুল এবং বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুলের তিন জন করে পড়ুয়া রয়েছে। প্রথম স্কুলটি থেকে এ বারের মাধ্যমিকে পঞ্চম হয়েছে সৃজা পাত্র, অষ্টম হয়েছে অনমিত্র মুখোপাধ্যায় এবং দিশা মণ্ডল। অন্য স্কুলটি থেকে শ্রুতি সিংহ মহাপাত্র ষষ্ঠ হয়েছে। অষ্টম হয়েছে দেবারতি পাঁজা এবং দশম হয়েছে অন্বেষা দেওঘরিয়া।

আরও খবর : ‘পথের পাঁচালী পড়ার ভাললাগাটুকু ছাপিয়ে গেল আজ আমার’

আরও খবর : মাধ্যমিকে প্রথম সঞ্জীবনী, দ্বিতীয় শীর্ষেন্দু, মেধা তালিকায় জেলার জয়জয়কার

অন্য দিকে মেধাতালিকায় প্রথম দশে রয়েছে কোচবিহারের ৯ জন। তার মধ্যে আবার ৪ জন একই স্কুলের। সুনীতি অ্যাকাডেমি থেকে প্রথম হয়েছে সায়ন্তনী দেবনাথ। ওই একই স্কুল থেকে তৃতীয় হয়েছে ময়ূরাক্ষী সরকার, পঞ্চম হয়েছে অঙ্কিতা দাস এবং নবম হয়েছে ঐতিহ্য সাহা। জেলার অন্যান্য স্কুল থেকে আরও ৫ জনের নাম মেধাতালিকায় রয়েছে।

কলকাতা-সহ রাজ্যের ২৩ জেলার মধ্যে ৭টি বাদে বাকে সব জেলা থেকেই এক বা একাধিক করে নাম মেধাতালিকায় রয়েছে। যেমন, মালদহের ৭ জন, পূর্ব-পশ্চিম বর্ধমানের ৫ জন, হুগলির ৪ জন, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম এবং জলপাইগুড়ি থেকে ৩ জন করে, দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনা থেকে ২ জন করে, দার্জিলিং এবং পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ১ জন করে পরীক্ষার্থীর নাম রয়েছে। উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, মুর্শিদাবাদ এবং পুরুলিয়া জেলা থেকে কোনও পরীক্ষার্থীর নাম এ বারের মেধাতালিকায় নেই।

সব মিলিয়ে মেধা তালিকায় এ বার দারুণ ফল করেছে উত্তরবঙ্গ। মেধা তালিকায় ৫৬ জনের মধ্যে ২৪ জন উত্তরবঙ্গের। বাকি ৩২ জন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের।

কলকাতা কিন্তু এ বারের মেধা তালিকায় অনেকটাই পিছিয়ে। মেধাতালিকার প্রথম দশের ৫৬ জনের মধ্যে কলকাতার রয়েছে মাত্র দু’জনের নাম। বরাহনগর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র সার্থক তালুকদার সপ্তম হয়েছে। আর টাকি বয়েজ স্কুলের পবিত্র সেনাপতি হয়েছে দশম। এ বাদে কলকাতার আর কোনও স্কুলপড়ুয়ার নাম নেই। কিন্তু, কলকাতার ফল এত খারাপ কেন? প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, মেধার বিচারে এ ভাবে কলকাতা এবং জেলাকে আলাদা করা ঠিক নয়। নম্বরের হিসাবে কলকাতা খুব একটা পিছিয়ে নেই বলেই তাঁদের মত।

এঁদেরই কেউ কেউ আবার একটা অন্য ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, শহুরে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ ইদানীং আইসিএসই অথবা সিবিএসই বোর্ডের অন্তর্গত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি হয়। কাজেই বেশির ভাগ মেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীই ওই বোর্ডের হয়ে পরীক্ষা দেয়। আর সে জন্যই মাধ্যমিকে মেধার বিচারে কলকাতার থেকে জেলার ছাত্রছাত্রীরা অনেকটাই এগিয়ে যায়। অনেকে যদিও এই মতের সঙ্গে ঐকমত্য নন।

প্রশ্ন উঠছে, যে বার কলকাতার ফল জেলার থেকে ভাল হয়, তখন মেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীরা কোথা থেকে আসে? স্কুলগুলির বক্তব্য, এ বারের ফল ভাল করিয়ে খতিয়ে দেখার পর সেটা পরিষ্কার হতে পারে।

পাশের হারে অবশ্য কলকাতা আছে উপরের দিকেই। সবচেয়ে বেশি পাশের হার পূর্ব মেদিনীপুরে (৯৬.১৩ শতাংশ)। তার পর পশ্চিম মেদিনীপুর (৯১.৭৫ শতাংশ)। তার পরেই কলকাতা (৯১.১১ শতাংশ)।

Madhyamik result happiness Midnapore Madhyamik Result 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy