Advertisement
E-Paper

ভূমিকম্পে নজরদারির যন্ত্র কোচবিহারেও

দক্ষিণবঙ্গে ভূকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার যন্ত্র আছে খড়্গপুর আইআইটি-তে। কিন্তু সেই সুযোগ এখনও নেই উত্তরবঙ্গে। এই অবস্থায় এ রাজ্যের হিমালয় এবং সংলগ্ন এলাকার মাটির নীচের অবস্থার দিকে নজর রাখতে এ বার কোচবিহারে স্বয়ংক্রিয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গড়তে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিল কেন্দ্র।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০২

দক্ষিণবঙ্গে ভূকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার যন্ত্র আছে খড়্গপুর আইআইটি-তে। কিন্তু সেই সুযোগ এখনও নেই উত্তরবঙ্গে। এই অবস্থায় এ রাজ্যের হিমালয় এবং সংলগ্ন এলাকার মাটির নীচের অবস্থার দিকে নজর রাখতে এ বার কোচবিহারে স্বয়ংক্রিয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গড়তে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিল কেন্দ্র।

সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের অধীন সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি বা জাতীয় ভূমিকম্প কেন্দ্রের অধিকর্তা বিনীত গহলৌত ওই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ার জন্য রাজ্য সরকারের সাহায্য চেয়েছেন। ওই চিঠিতে গহলৌত লিখেছেন, কেন্দ্রটি কোথায় হতে পারে, সেই বিষয়ে কোচবিহারের জেলাশাসকের সঙ্গে মন্ত্রকের অফিসারদের আলোচনা হয়েছে। কয়েকটি জায়গাও দেখা হয়েছে। জায়গার ব্যাপারে মুখ্যসচিব যাতে দ্রুত অনুমতি দেন, চিঠিতে সেই অনুরোধও করেছেন গহলৌত।

ভূস্তরের নীচের নানা তথ্য এবং ভূকম্প সংক্রান্ত উন্নত গবেষণার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন নতুন ভূকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। দিন-রাত ভূস্তরের গভীরে নজর রাখবে তারা। খড়্গপুর আইআইটি-র পর্যবেক্ষণ যন্ত্রটি আছে সেখানকার ভূতত্ত্ব ও ভূপদার্থবিদ্যা বিভাগের দায়িত্বে। ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, হিমালয় এবং সংলগ্ন এলাকা ভূকম্পপ্রবণ। তাই সেই এলাকায় নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। সেই জন্যই কোচবিহারে নতুন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ার জন্য প্রথমে কোচবিহার ও জলপাইগুড়িকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জলপাইগুড়িতে তেমন মনপসন্দ ও নিরাপদ জায়গা না-মেলায় শেষ পর্যন্ত বেছে নেওয়া হয়েছে কোচবিহারকেই। জেলাশাসকের দফতর বা অন্য কোনও প্রশাসনিক ভবনে এই ধরনের যন্ত্র বসানো হবে।

ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এত দিন ভূকম্প পর্যবেক্ষণ যন্ত্রগুলি ‘ব্রডব্যান্ড সিস্টেম’-এ চলত। এ বার থেকে তা হবে ‘আল্ট্রা ব্রডব্যান্ড’। এগুলির নজরদারির ক্ষমতাও বেশি। যন্ত্রগুলি ভূস্তরীয় প্লেটের যে-কোনও ধরনের নড়াচড়া এবং ছোট ছোট ভূকম্পের তথ্যও ধরতে পারবে। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে ভূকম্পের উৎস, তার কম্পনপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার চরিত্র-সহ নানা বিষয়ে নতুন ভাবে আলোকপাত করতে পারবেন বিশেষজ্ঞেরা। এই নতুন ব্যবস্থায় ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা জারি করা যায় কি না, তা নিয়েও গবেষণা চলছে।

ভূবিজ্ঞানীরাই তো বলে থাকেন, ভূমিকম্প কোথায় কখন হবে, তার আগাম আঁচ মেলে না। তাই পূর্বাভাস বা সতর্কতা জারি করা যায় না। তা হলে সতর্কতা জারির ব্যাপারটি কী?

ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের অধীন এই আগাম সতর্কতা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আইআইটি খড়্গপুরের অধ্যাপক শঙ্করকুমার নাথ জানান, ভূমিকম্পে প্রাথমিক ভাবে একটি ধাক্কা আসে। সেই ধাক্কার পিছু পিছু আসে পরের ধাক্কাগুলি। এবং পরের ধাক্কাগুলিই বেশি মারাত্মক। অনেক সময় এই দু’টি ধাক্কার মাঝখানে এক থেকে পাঁচ মিনিট সময় মেলে। ফলে প্রথম ধাক্কা যন্ত্রে টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যদি সতর্কবার্তা দেওয়া যায়, তা হলে প্রাণহানি কম হতে পারে। ‘‘ওই সতর্কতা পেলে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে খোলা জায়গায় গিয়ে দাঁড়াতে পারবেন,’’ বলছেন শঙ্করবাবু। ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই পরিকল্পনা অবশ্য তৃণমূল স্তরে রয়েছে। শঙ্করবাবুর কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে রুরকিতে এই ধরনের একটি যন্ত্র বসিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেটি সফল হলে এই ব্যবস্থা তৈরির কাজে আরও এগোনো সহজ হবে।’’

Earthquake National Center For Seismology
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy