Advertisement
E-Paper

সংক্রমণ প্রতিরোধে সব লক-আপে আইসোলেশন

করোনায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসার ও কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য ও শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০৩:৩১
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডাক্তার-নার্সদের মতো প্রথম সারির যোদ্ধা পুলিশ। করোনার ছোবল থেকে সেই পুলিশকর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে এ বার লক-আপে উপসর্গযুক্ত অভিযুক্তকে ‘আইসোলেশন’ বা পৃথক ভাবে রাখার ব্যবস্থাপত্র দিল প্রশাসন। পুলিশের কর্মী-অফিসারদের মধ্যে কোভিড সংক্রমণের হার ক্রমশ বাড়তে থাকায় এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।

করোনায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসার ও কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। অথচ আইনশৃঙ্খলার দেখভাল থেকে লকডাউন বিধি রূপায়ণের পুরো দায়দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে পুলিশকেই। এই অবস্থায় প্রয়োজন অনুযায়ী লক-আপেও আইসোলেশন বিধি মানা দরকার বলে প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত সোমবারের ভিডিয়ো-বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানান, কোভিড-যুদ্ধ সামলাতে গিয়ে শতাধিক ডাক্তার, চিকিৎসাকর্মী, নার্স সংক্রমিত হয়েছেন। করোনা-আক্রান্ত ২৩০০ পুলিশকর্মীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশে সংক্রমিতের সংখ্যা ১১০০ ছাড়িয়েছে। রাজ্য পুলিশেও সংখ্যাটা হাজারের কাছাকাছি।

করোনা-যুদ্ধে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য-সুরক্ষা বিধি মানার ব্যবস্থা রয়েছে সকলের জন্যই। তার উপরে আইনশৃঙ্খলা সামলানোর প্রশ্নে অতিরিক্ত বেশ কিছু বিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। ধৃতকে লক-আপে রাখা ও জিজ্ঞাসাবাদের ব্যবস্থায় সুরক্ষার উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। লালবাজারের খবর, ধৃতকে লক-আপে ঢোকানোর আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপ তো বটেই, সব থানার লক-আপে ঢোকানোর সময় ধৃতকে জীবাণুমুক্ত করিয়ে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। লক-আপে বন্দিদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখতে উপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে কারও কোভিড উপসর্গ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষার আগে তাকে পৃথক ভাবে রাখার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।

জেলা পুলিশ ও কমিশনারেটেও ধৃতদের থেকে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লক-আপে দূরত্ব রক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, “লক-আপে আলাদা ভাবে রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই যথাসম্ভব সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে রাজ্যের সব থানাকেই।”

লালবাজারের এক কর্তা জানান, কিছু দিন আগে একটি মামলায় ধৃত ছ’জনের মধ্যে এক জনের কোভিড উপসর্গ দেখা দেয়। তাকে আলাদা রেখে লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ আসায় দ্রুত তাকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। তবে অনেক থানারই অফিসারদের বক্তব্য, ধৃত উপসর্গহীন হলেই সমস্যা বাড়ছে। লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপ অনেক বড়, তাই সেখানে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা সম্ভব। কিন্তু অধিকাংশ থানাতেই জায়গার সমস্যা রয়েছে।

লকডাউন পর্বে অপরাধের হার হ্রাস পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। অন্য সময়ের চেয়ে এখন ধৃতের সংখ্যা কম থাকায় লক-আপগুলি ভরে যাচ্ছে না। ফলে লক-আপে বিধি মানতে ততটা ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে না পুলিশকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, হেফাজতে থাকা প্রত্যেক অভিযুক্তের দৈনিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাধ্যতামূলক হয়েছে। লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপ, সব থানার লক-আপ জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে নিয়মিত।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

Coronavirus in West Bengal Jail Isolation Ward
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy