Advertisement
E-Paper

প্রোটোকলে বেপরোয়া হাসপাতাল বাড়াচ্ছে উদ্বেগ

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, পুজো পরিক্রমার হাত ধরে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির শঙ্কা সত্যি হলে শুধু কোভিড হাসপাতালের ভরসায় থাকলে চলবে না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২০ ০৫:১৭
Share
Save

করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই। কিন্তু ঘটনার পাকেচক্রে কোভিড রোগী ভর্তি থাকছেন না, তা কিন্তু নয়। সারা রাজ্যে এ ধরনের হাসপাতালগুলিই বঙ্গের করোনা-চিত্রকে বিপজ্জনক করে তুলছেন বলে মত ‘প্রোটোকল ম্যানেজমেন্ট টিমে’র সদস্যদের একাংশের।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের কোনও হাসপাতালে কোভিডে আক্রান্ত চিকিৎসাধীন ব্যক্তির মৃত্যু হলে, তার কারণ জানার চেষ্টা করছে ‘প্রোটোকল ম্যানেজমেন্ট টিম’ (পিএমটি)। সেই সূত্রে স্বাস্থ্য দফতরের কোভিড হাসপাতালের তালিকায় নাম নেই এমন হাসপাতালে করোনা প্রোটোকলের হাল দেখে বিচলিত হয়ে পড়েছেন নজরদারি দলের চিকিৎসক সদস্যেরা। তাঁদের বক্তব্য, এ ধরনের হাসপাতালে অন্য রোগের চিকিৎসা করাতে আসা রোগীরা অনেক সময় কোভিডের শিকার হচ্ছেন। স্বাস্থ্য দফতরের নিয়মানুযায়ী, এক্ষেত্রে রোগীদের স্থিতিশীল করে কোভিডের পরিষেবা যুক্ত হাসপাতালে স্থানান্তর করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানান, রোগী স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না-হওয়া পর্যন্ত প্রোটোকল মেনে আক্রান্তের চিকিৎসা করতে হবে। কিন্তু সেটিই হচ্ছে না বলে মত নজরদারি দলের সদস্য চিকিৎসকদের।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, বাগুইআটি থানার অন্তর্গত একটি নার্সিংহোমে পরিদর্শনে গিয়ে নজরদারি দলের চিকিৎসকেরা দেখেন, করোনা সন্দেহভাজনদের ওয়ার্ডের পাশেই সদ্যোজাত শিশুকে রাখা হয়েছে। একজন নার্সই দু’টি বিভাগ দেখাশোনা করছেন! নার্সরা যে শৌচাগারে পিপিই খোলা-পরার কাজ করছেন, তা রোগীরাও ব্যবহার করছেন। প্রোটোকল ম্যানেজমেন্ট টিমের এক সদস্য চিকিৎসকের বক্তব্য, অন্য রোগের চিকিৎসা করাতে এসে করোনা ধরা পড়ার বিষয়টি এখন খুব স্বাভাবিক ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে কোভিড তালিকায় নেই এমন হাসপাতালে রোগীদের যে পরিস্থিতিতে রাখা হচ্ছে তা অস্বাভাবিক। তাঁর কথায়, ‘‘একজন রোগীকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তর করতে ৪-৬ ঘণ্টা সময় লাগছে। তার বেশিও লাগতে পারে। ওই সময়ে আক্রান্তকে যদি বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয় তাতে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বাগুইআটি, লেলিন সরণি, যাদবপুর এলাকায় অবস্থিত একাধিক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আক্রান্তদের কার্যত কোনও চিকিৎসা না করে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ‘প্রোটোকল ম্যানেজমেন্ট টিমে’র পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে অবহিত স্বাস্থ্য দফতরের এক চিকিৎসক-আধিকারিক বলেন, ‘‘এ ধরনের হাসপাতালে প্রতি মাসে গড়ে ১৫-২০ জন রোগী করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। পজ়িটিভ হওয়ার তথ্য মিললেও সেই রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে। কোভিড হাসপাতালে নাম না থাকার সুযোগ নিয়ে ওই হাসপাতালগুলি একেবারেই কোভিড প্রোটোকল মানছে না।’’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, পুজো পরিক্রমার হাত ধরে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির শঙ্কা সত্যি হলে শুধু কোভিড হাসপাতালের ভরসায় থাকলে চলবে না। রাজ্যের সবক’টি হাসপাতালেই তখন কোভিড ওয়ার্ড চালুর প্রয়োজন হতে পারে। অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘এখনই মানুষ যেভাবে অসতর্ক হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাতে পুজোর সময় সংক্রমণের সংখ্যাবৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রবল। এরকম পরিস্থিতিতে নজরদারি দলের পর্যবেক্ষণ সত্যি হলে তা দুর্ভাগ্যজনক। স্বাস্থ্য দফতরের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।’’

Protocol Coronavirus COVID-19 Hospital

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}