Advertisement
E-Paper

বার বার একই রোগীর সংক্রমণ, চিন্তায় স্বাস্থ্য মহল

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার এবং নার্সিং স্টাফের দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০৪:১২
ছবি এএফপি।

ছবি এএফপি।

পজ়িটিভ-নেগেটিভ-পজ়িটিভের ঘটনাক্রমে বছর ষাটের এক বৃদ্ধের নামও যুক্ত হল বঙ্গে। রক্তের ক্যানসারে রোগী দু’দফায় কোভিডের শিকার হওয়ার পাশাপাশি আরও এক ধরনের ভাইরাল সংক্রমণ গুলেনবারি সিন্ড্রোমেও আক্রান্ত। বীরভূমের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের মেয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। আপাতত নিজের কাছে রেখে বাবাকে সুস্থ করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়ে নাজমা সুলতানা।

এ দিন নাজমা জানান, মুম্বইয়ের টাটা ক্যানসার হাসপাতালে চারটে কেমোথেরাপি শেষে ফলো-আপ চলাকালীন ৮ মে বৃদ্ধের করোনা ধরা পড়ে। মাসখানেক মুম্বইয়ে চিকিৎসাধীন থাকার পরে বাবাকে নিয়ে বাড়ি চলে আসেন মেয়ে।

গত ২৬ জুন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির আগে করোনা পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে দিন দশেকের মাথায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ থেকে বৃদ্ধকে এনআরএসে স্থানান্তরিত করানো হয়। এনআরএসে চিকিৎসা শুরুর আগে করোনা পরীক্ষা করানো হলে ৭ জুলাই বৃদ্ধের কোভিড রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। দ্বিতীয় দফায় কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পরে রোগীকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়।

আরও পড়ুন: হাসপাতাল যেতে দেরি, তাই করোনায় বিপত্তি: মুখ্যসচিব

মেডিক্যালে ‘নার্ভ কনডাকশন টেস্ট’ করে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হন রোগী গুলেনবারি সিনড্রোমে আক্রান্ত। কোভিড আক্রান্ত বৃদ্ধকে সুস্থ করে তুলতে তাঁর ‘প্লাজমাফেরেসিস’ করা হয়। প্লাজমাফেরেসিস হল অনেকটা ডায়ালিসিসের মতো। এই পদ্ধতিতে অ্যান্টিবডির পৃথকীকরণে শরীরে থেকে রক্ত বার করে তা আবার দেহে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বৃদ্ধের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ সেই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রয়োগে সুফল মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

কোভিড হাসপাতালে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার এবং স্নায়ুরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সন্দীপ পালের তত্ত্বাবধানে সপ্তাহ দুয়েক থাকার পরে ধীরে ধীরে হাত ও পায়ের আঙুল নাড়ানো শুরু করেন বৃদ্ধ। কোভিড হাসপতাল হওয়ায় সেখানে রোগীকে রেখে চিকিৎসার পরবর্তী ধাপগুলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বৃদ্ধ এখন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।

আরও পড়ুন: ভারতে মোট করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ২০ লক্ষ পেরোল

বুধবারই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার এবং নার্সিং স্টাফের দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। তার আগে জলপাইগুড়ির এক স্বাস্থ্যকর্মীর একই অভিজ্ঞতা হয়। চিকিৎসক অরুণাংশুবাবুর কথায়, ‘‘ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম সেটা একটা কারণ হতে পারে। কিন্তু পুরনো ভাইরাস থেকে দ্বিতীয়বার সংক্রমণ নাকি নতুন ভাইরাসের প্রবেশ এটা ঘটল তা নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’

প্রথমবার আক্রান্ত হওয়ার পরে আরটি-পিসিআরে নেগেটিভ হলেও দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হওয়ার কারণ কী? এ প্রসঙ্গে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’র ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সারা পৃথিবীতে এরকম কোনও ঘটনার নজির নেই। সেখানে পশ্চিমবঙ্গে বার বার এ ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসা নিয়ে নিশ্চয় ভাবনার অবকাশ রয়েছে। তবে তা থেকে কোনও সিদ্ধান্তে আসার আগে নমুনা পরীক্ষার প্রক্রিয়া ভাল ভাবে ভ্যালিডেট করা উচিত। এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে কী ভাবে, কী প্রক্রিয়ায় টেস্ট করা হয়েছিল তা যা চাই করা উচিত। তাহলেই অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করি।’’

Coronavirus in West Bengal Coronavirus COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy