Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

জোগান কম, চ্যালেঞ্জ এখন টিকা বাঁচানো

স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যাখ্যা, দু’টি প্রতিষেধকেরই প্রতিটি ভায়াল থেকে ১০টি করে ডোজ় হয়। কিন্তু যথাযথ ভাবে ব্যবহার করলে কয়েকটি ডোজ় বেশি হতে পারে

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ০৬:১২
Share: Save:

এ বারেও ‘চ্যালেঞ্জ’ নিতে হবে!

রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তের প্রশিক্ষিত কর্মীদের কাছে এমনই বার্তা স্বাস্থ্য ভবনের। চ্যালেঞ্জটা কী? স্বাস্থ্য দফতর বলছে, এ চ্যালেঞ্জ প্রতিষেধক বাঁচানোর। পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার অনুপাতে কেন্দ্রের তরফে যে-টিকা পাওয়া গিয়েছে, চাহিদার তুলনায় সেটা অনেকটাই কম। পাশাপাশি রাজ্য সরকারও কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক কিনতে শুরু করেছে। কয়েক দিন আগেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের একটি হিসেবে দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রের পাঠানো দু’টি প্রতিষেধক থেকে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ ডোজ় বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল। যা বঙ্গের টিকা-টানাটানির সংসারে কিছুটা হলেও রসদ জুগিয়েছে।

স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যাখ্যা, দু’টি প্রতিষেধকেরই প্রতিটি ভায়াল থেকে ১০টি করে ডোজ় হয়। কিন্তু যথাযথ ভাবে ব্যবহার করলে কয়েকটি ডোজ় বেশি হতে পারে। কারণ, ব্যবহারের সময় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখেই প্রতিটি ভায়ালে কিছুটা বেশি পরিমাণে প্রতিষেধক দিয়ে রাখে প্রস্তুতকারী সংস্থা। রাজ্যে টিকাকরণের দায়িত্বে থাকা কর্তা তথা পরিবার কল্যাণ আধিকারিক অসীম দাস মালাকার বলেন, ‘‘প্রতিটি ভায়াল থেকে শতকরা ২-৩টি করে ডোজ় বাঁচানো গিয়েছে। আবার ডোজ় বাঁচাতে পারলে খুবই ভাল হবে। ওই কয়েক লক্ষ ডোজ়ে আবার বেশ কিছু মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে।’’

রাজ্যের প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য নিযুক্ত প্রশিক্ষিত কর্মীদের জন্যই টিকা বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে জানাচ্ছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "যাঁরা প্রতিষেধক দেন, তাঁদের সকলেই প্রশিক্ষিত। তাঁরা আবার প্রতিষেধকের ডোজ় বাঁচানোর বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবেন বলেই আশা করছি। কারণ, মনে রাখতে হবে, সংক্রমণ কমাতে অন্য সব কিছুর পাশাপাশি প্রতিষেধক দেওয়াটাও আমাদের মূল লক্ষ্য।" প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে প্রায় এক কোটি ৩৮ লক্ষ ডোজ় বরাদ্দ করা হলেও রবিবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে প্রায় এক কোটি ২৮ লক্ষ ডোজ়। আগামী ৩১ মে-র মধ্যে কেন্দ্রের তরফে আরও কয়েক লক্ষ ডোজ় কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক পেতে পারে রাজ্য।

অন্য দিকে, ১ মে থেকে প্রতিষেধক কেনার জন্য সরাসরি প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। রাজ্যও প্রতিষেধক কিনতে শুরু করেছে। সেই অনুযায়ী গত ৯ মে কোভ্যাক্সিনের এক লক্ষ ডোজ় প্রথম আসে বাংলায়। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, এ-পর্যন্ত কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে প্রায় ন’লক্ষ ৩০ হাজার ডোজ় কিনেছে রাজ্য সরকার। এই মুহূর্তে দু’টি প্রতিষেধক মিলিয়ে প্রায় ১৮ লক্ষ ডোজ়ের বরাত দেওয়া আছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার পর্যন্ত রাজ্যে এক কোটি ২৬ লক্ষ ৭১ হাজার ২২৯ জন টিকা নিয়েছেন। ওই দিন স্বাস্থ্য দফতর প্রতিষেধকের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছিল। সেখানে প্রতিষেধক কেন্দ্রের ভিড় কমানোর রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে, প্রতিষেধক কেন্দ্রে এসে যাতে মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য বজায় থাকে, জোর দিতে বলা হয়েছে তার উপরেও। বলা হয়েছে, প্রতিষেধক কেন্দ্রের বাইরে পানীয় জল, বসার ব্যবস্থা করতে হবে। রোদে যাতে দাঁড়িয়ে থাকতে না-হয়, তার জন্য বন্দোবস্ত করতে হবে ছাউনির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE