বাস ধরার দৌড়। বৃহস্পতিবার এয়ারপোর্ট ১ নম্বর গেট-এর কাছে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
লকডাউনের জের কাটিয়ে গত তিন দিন ধরে ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হলেও ভাড়া নিয়ে টানাপড়েনে রাস্তায় নামেনি বেসরকারি বাস। ফলে কাজে বেরিয়ে হয়রান হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। অবশেষে বুধবার বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলি জানায়, পুরনো ভাড়াতেই বৃহস্পতিবার থেকে বাস চালাবে তারা। সেই মতো এ দিন পর্যাপ্ত বেসরকারি বাসের দেখা মিলেছে। হাঁফ ছেড়েছে আমজনতা। তবে একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি রুটে বেসরকারি বাসে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এ দিন বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সরকারি বাস চলেছে ৯০০টি। গত কালের থেকে ২০০ বেশি। বৃহত্তর কলকাতায় বেসরকারি বাস চলেছে ১০০০-র মতো। সোমবার মানুষের ভোগান্তি খুব বেশি ছিল। পরের দিনগুলোতে কিছুটা কমে। আজ পার্যাপ্ত পরিমাণ বাস চলায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি প্রায় নেই বললেই চলে।’’
তবে এ দিন মিনিবাস কার্যত দেখাই যায়নি। এয়ারপোর্ট-যাদবপুর, এয়ারপোর্ট-বিবাদী বাগ রুটের মিনিবাস কর্মীরা জানান, কবে থেকে বাস চলবে সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি জানায়, এ দিন পরিবহণ-আধিকারিকদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। আজ, শুক্রবার থেকে মিনিবাস পথে নামার কথা।
কাঠগড়ায় যে সব রুট
• ২৩০: কামারহাটি–আলিপুর
• ২২৭: বিএনআর–বাঙুর
• ২০২: বেকবাগান– নাগেরবাজার
• ৪৪: বাগুইহাটি–হাওড়া স্টেশন
• ২৩৪: বেলঘরিয়া–গল্ফগ্রিন
• ৭৯বি: বাবুঘাট–বারাসত
• ৯৩: শ্যামবাজার–খড়িবাড়ি
পথে ছিল (শহর ও শহরতলি)
• সরকারি বাস: ৯০০
• বেসরকারি বাস: ১০০০
বেসরকারি বাস যথেষ্ট সংখ্যায় চলায় সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেলেও বেশ কিছু রুটে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীরা জানান, বিভিন্ন পর্যায়ে ১০, ১৫, ২০ টাকা করে ভাড়া নিয়েছেন কন্ডাক্টরেরা। যা পুরনো ভাড়ার থেকে ২-৩ টাকা বেশি। যেমন, হাওড়া-বাগুইআটি রুটের এক যাত্রী বুবুন রায় বলেন, ‘‘উল্টোডাঙা থেকে বাগুইআটি আট টাকা ভাড়া। কিন্তু এ দিন নিল ১০ টাকা। পরে যদি বাস না-পাই এই ভেবে বেশি ভাড়া দিতে বাধ্য হলাম।’’ বেশি ভাড়া নেওয়া নিয়ে কোথাও কোথাও যাত্রীদের সঙ্গে কন্ডাক্টরদের গোলমালও বাধে। অভিযোগ, যে সব বাস উত্তর কলকাতা থেকে বিভিন্ন রুটে যাচ্ছে, তারাই বেশি ভাড়া নিয়েছে। কয়েকটি রুটে বাস বেশি ভাড়া নিচ্ছে জানতে পেরে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
আরও পড়ুন: বাসে উঠলেই দিতে হচ্ছে ১০ টাকা! বিরক্ত যাত্রীরা
বেশি ভাড়া নেওয়া প্রসঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘‘বেসরকারি বাসে বেশি ভাড়া নেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আমাদের টিম রাস্তায় ঘুরছে। পুলিশকে বলেছি বিষয়টা দেখতে। এ রকম কোনও অভিযোগ পেলে, সেই রুটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’’ বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সহ-সভাপতি টিটো সাহার দাবি, ‘‘আমরা বেশি ভাড়া নেওয়ার বিরুদ্ধে। আমরা পুরনো ভাড়াই নিচ্ছি।’’
বৃহস্পতিবার কলকাতায় তুলনায় বেশি বাস চললেও এ দিন সকালে অফিস টাইমে কয়েকটি রুটের বাসে বেশ ভিড় ছিল। সরকারের নির্দেশ, বাসে আসন সংখ্যার চেয়ে বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না। কিন্তু এ দিন কয়েকটি রুটের বাসে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে যেতে দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে কন্ডাক্টারেরা নিষেধ করলেও যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যান। শ্যামবাজার থেকে হাওড়াগামী একটি বাসের কন্ডাক্টর অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা বারণ করা সত্ত্বেও কোনও যাত্রী বাসে উঠলে আমরা তাঁদের নামিয়ে দিচ্ছি। কারণ, পুলিশ মাঝে মাঝে বাসে উঠে দেখছে কত যাত্রী আছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy