ফাইল চিত্র।
আমপান ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ বিলি নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ আসায় প্রশাসনিক ও পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশের উপর ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রাণ বিলি নিয়ে দলবাজি বা দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই হুগলি, হাওড়া এবং দুই ২৪ পরগনার ৫-৬ জন বিডিও-কে ত্রাণ বিলি নিয়ে অভিযোগ পেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। হুগলির এক পঞ্চায়েত প্রধানকে তো দল থেকে বিতাড়নও করা হয়েছে। সেই বহিষ্কারের খবর প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে। শো-কজের জবাব সন্তোষজনক না হলে সংশ্লিষ্ট বিডিও-দের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ত্রাণ বণ্টনের অব্যবস্থার বিষয়টি দেখছেন বলে তাঁর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
নবান্নের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রায় ২০০০ অভিযোগ জমা পড়েছে। তাঁর নিজস্ব সূত্র মারফৎ অভিযোগগুলি তিনি পেয়েছেন বলে মমতা মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে জানিয়েছেন। প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত, বাড়ি ও চাষির টাকা বিলি নিয়েই অভিযোগ বেশি। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অনেকে ঘর ভাঙার ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন। অনেক পঞ্চায়েত কর্তার আত্মীয় টাকা পেয়েছেন। কোথাও কোথাও একটি বিশেষ পাড়ার সবাই সাহায্য পেলেও পাশের পাড়ার কেউ পাননি। কোথাও কোথাও আবার বিদ্যুতের লাইন সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও পক্ষপাতিত্ব হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানতে পেরেছেন। সরকারি কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কাছে ত্রাণ বিলি নিয়ে যে সব অভিযোগ এসেছিল, সেগুলিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছে।
সরকারি কর্তাদের দাবি, যে সংখ্যক উপভোক্তার কাছে ৬৫০০ কোটি টাকা গিয়েছে, তার তুলনায় অভিযোগের সংখ্যা নেহাত কম। দ্রুত উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে কোথাও নামের বানান ভুল, অ্যাকাউন্ট নম্বর বা ব্যাঙ্কের আইএফএসসি কোড ভুল বসানো হয়েছিল। তাতে প্রথম পর্বে প্রায় ৪০ ভাগ উপভোক্তার কাছে টাকা পৌঁছয়নি। পরে সে সব ঠিক করা হয়েছে। তার মধ্যে থেকে ত্রাণ বা আর্থিক সুবিধা না-পাওয়ার যে অভিযোগ এসেছে, সেগুলি তদন্ত করে দেখা হবে। কর্তাদের আরও দাবি, ত্রাণ ও সরকারি সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে উপভোক্তা বাছাইয়ে বিডিও-র সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের যুক্ত করে কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। সেই কমিটি যে নামের তালিকা দিয়েছে সেই হিসাবে অর্থ দফতর টাকা বিলি করেছে। এখন যদি অভিযোগ ওঠে তা হলে বিডিও-র পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদেরও দায় রয়েছে বলে কর্তাদের অভিমত। তাই বিডিওদের শো-কজ করার পাশাপাশি পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: দালালচক্র রুখতে করোনা-চিকিৎসায় কোন হাসপাতালে কত বেড খালি জানাচ্ছে রাজ্য
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy