Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
প্রাথমিক টেট

প্রশিক্ষিত ও সাধারণ প্রার্থীদের ক’জন পাশ, হিসেব চায় কোর্ট

মামলা হয়েছিল বেশ কয়েকটি। তাই প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের অগ্রাধিকারের নির্দেশ এবং ফল ঘোষণার পরেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বা টেট নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা যেন কেটেও কাটছে না!

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৮
Share: Save:

মামলা হয়েছিল বেশ কয়েকটি। তাই প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের অগ্রাধিকারের নির্দেশ এবং ফল ঘোষণার পরেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বা টেট নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা যেন কেটেও কাটছে না!

প্রাথমিকে টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা টেটে ক’জন প্রশিক্ষিত ও প্রশিক্ষণহীন উত্তীর্ণ হয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের কাছে সেই পরিসংখ্যান চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ঠিক ক’জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং ক’জন প্রশিক্ষণহীন প্রার্থী ওই নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছিলেন, তা-ও জানাতে হবে সরকারকে।

শিক্ষক নিয়োগে প্রশিক্ষিত আর প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের মধ্যে অগ্রাধিকারের প্রশ্নটাই ছিল অন্যতম মূল সমস্যা। প্রশিক্ষিত প্রার্থীদেরই অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে বুধবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়ে সেই প্রশ্নের নিরসন করে দেয়। তুলে নেয় টেটের ফল ঘোষণার উপরে যাবতীয় স্থগিতাদেশও। কালবিলম্ব না-করে রাজ্য সরকারও প্রাথমিক টেটের ফল প্রকাশ করে। কিন্তু উত্তীর্ণদের মধ্যে ক’জন প্রশিক্ষিত আর ক’জন প্রশিক্ষণহীন, সরকার ওই দিন তা না-জানানোয় আবার নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তারই মধ্যে প্রাথমিক টেট নিয়ে দায়ের হওয়া অন্য একটি মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান বৃহস্পতিবার সরকারকে নির্দেশ দেন, টেট-উত্তীর্ণদের ক’জন প্রশিক্ষিত এবং ক’জন প্রশিক্ষণহীন, আগামী সোমবার তা জানাতে হবে।

টেট নিয়ে দায়ের হওয়া অজস্র মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে নানা কারণে ফল প্রকাশের উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল আদালত। বিচারপতি কারনান সব স্থগিতাদেশ তুলে দিয়ে রাজ্যকে নির্দেশ দেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিতদের অগ্রাধিকার দিতে হবে ঠিকই। তবে সেই সব প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়ার পরেও পদ ফাঁকা থাকলে প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের সুযোগ দিতে হবে। হাইকোর্ট সব স্থগিতাদেশ তুলে দেওয়ার পরেই ফল প্রকাশ করে রাজ্য। কিন্তু ঝামেলা যে মেটেনি, বিচারপতির এ দিনের নির্দেশে সেটা স্পষ্ট। কারণ, আদত পরীক্ষাতেই নিয়মভঙ্গ হয়েছে বলে অভিযোগ। যে-মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যকে প্রশিক্ষিত আর প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীর সবিস্তার পরিসংখ্যান দিতে বলা হয়েছে, সেটির আবেদনকারীদের অভিযোগ, প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন বা এনসিটিই-র নির্দেশিকা মেনে। কিন্তু এ রাজ্যের ওই টেটের ক্ষেত্রে সেটা মানা হয়নি।

টেট নিয়ে দায়ের হওয়া ওই মামলায় কোন নির্দেশিকা লঙ্ঘনের অভিযোগ করছেন আবেদনকারীরা?

ওই মামলার আবেদনকারীদের আইনজীবী সৌমেন দত্ত জানান, টেটে একটি বিষয় বেমালুম বাদ পড়ে গিয়েছে। এনসিটিই-র নির্দেশিকা অনুযায়ী টেটে শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়টি থাকতেই হবে। অথচ গত বছরের ১১ অক্টোবর এ রাজ্যে প্রাথমিকের যে-টেট হয়, তাতে শিক্ষাবিজ্ঞান আদৌ ছিল না। এনসিটিই-র সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, যাঁরা টেটে বসবেন, উচ্চ মাধ্যমিকে তাঁদের অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। অথচ গত বছরের পরীক্ষায় এমন অনেক প্রার্থী ছিলেন, যাঁরা উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর পাননি। এ দিন সেই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি কারনান রাজ্যকে ওই নির্দেশ দেন।

রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্ত জানান, আদালতের কাছে মামলাকারীদের আবেদন ছিল, এই মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত যাতে তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষকপদ ফাঁকা রাখা রাখা হয়, বিচারপতি সেই মর্মে নির্দেশ দিন। বিচারপতি কারনান সেই আবেদন রাখেননি।

সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TET high court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE