আবার জামিন খারিজ হল কেষ্টর। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জামিন নিয়ে উত্তপ্ত আসানসোলের কোর্ট রুম। শনিবার দীর্ঘ সওয়াল জবাবের সময় সিবিআই তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারক। তদন্তকারীদের কাছে একটি সম্ভাব্য তারিখ চায় আদালত। অন্য দিকে, অনুব্রতের আইনজীবী অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁর মক্কেলকে হয়রানি করা হচ্ছে। যদিও শেষ পর্যন্ত জামিন খারিজ হয় তৃণমূল নেতার।
শনিবার সিবিআই তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অনুব্রতর আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত আদালতে বলেন, ‘‘গরু পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত এনামুল হক। উনি শুল্ক ও বিএসএফে প্রভাব খাটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু এখন সিবিআই তদন্ত করে দেখছে এই পাচারে টাকা কত হয়েছে। দেখা হচ্ছে, শাসক দলের জেলা সভাপতি হয়ে অনুব্রত গরু পাচারে প্রভাব খাটিয়েছেন কি না। এখানে তদন্ত চলছে একটি রাজনৈতিক দলকে লক্ষ্যবস্তু করে!’’ আবার সিবিআই চার্জশিটে রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে আপত্তি তোলেন আইনজীবী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে রাজনৈতিক দল না বদলানো পর্যন্ত জামিন পাবেন না (অনুব্রত)?’’ তিনি জানান, অতিরিক্ত চার্জশিট নিয়ে মোট ৫টি চার্জশিট জমা করেছেন তদন্তকারীরা। একের পর এক চার্জশিট দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জামিন আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে।
অন্য দিকে, সিবিআই দাবি করে, জেলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় চুপ থাকছেন অনুব্রত। তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। যার প্রেক্ষিতে অনুব্রতের আইনজীবীর সওয়াল, ‘‘সিবিআয়ের এই অভিযোগ সঠিক নয়। উনি (অনুব্রত) জানলে, তবেই না সে বিষয়ের উত্তর দেবেন!’’ অর্থাৎ, গরু পাচার-কাণ্ডে অনুব্রতের কাছে কোনও তথ্য নেই বলে জানান তিনি। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘উনি দল বদলালে বা রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিলে তবেই কি ‘প্রভাবশালী’ তকমা সরে যাবে? তবেই কি মিলবে জামিন?’’
প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় গত ১১ অগস্ট গ্রেফতার করা হয় অনুব্রতকে। জামিনের আবেদন করা হলেও তা খারিজ হয়েছে। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে গত ২১ সেপ্টেম্বর শেষ বার জামিনের আবেদন খারিজ হয় কেষ্টর। তার পর ছিল পুজোর ছুটি। ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত জেলেই রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এর মধ্যে চার্জশিটও জমাও হয়ে গিয়েছে। সেখানে তদন্তকারীরা দাবি করেছে, গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করতে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছাড়াও অনুব্রত ব্যবহার করেছেন বাড়ির কাজের লোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। স্কুল সার্ভিস কমিশনের মামলাতেও তাঁর নাম শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি এই সব ক্ষেত্রে অনুব্রতের তাঁর দেহরক্ষী সহগল হোসেনের ফোন ব্যবহার করতেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
দুই তরফের সওয়াল জবাবের পর অনুব্রত মণ্ডলের জেল হেফাজতে নির্দেশ দেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ১১ই নভেম্বর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy