বিপর্যয় ডেকে এনে তৃণমূল কংগ্রেস এখন বাম জমানা নিয়ে ভুল প্রচারের কৌশল নিয়েছে বলে অভিযোগ তুলল সিপিএম। ‘ইতিহাস’ সামনে আনতে পাল্টা প্রচারে নেমে পড়ল দলের শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)। তাদের বক্তব্য, জ্যোতি বসুর আমলের একটি ঘটনাকে সামনে রেখে একেবারেই ‘অসত্য’ প্রচার চলছে। জনমানসে সরকার-বিরোধী প্রতিক্রিয়া আঁচ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই তৃণমূল এই পথ নিয়েছে বলে তাদের দাবি। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল ১৯৯২ সালের যে সরকারি সিদ্ধান্তের উল্লেখ করছে, তা নিয়েও সবিস্তার ব্যাখ্যা দিয়েছে তারা।
নিয়োগ-দুর্নীতির দায়ে সম্প্রতি ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণের মুখে পড়ে বাম আমলের একটি ঘটনাকে প্রচারে এনেছে তৃণমূল। ওই সিদ্ধান্তে ‘অবসরের বয়সসীমা কমিয়ে রাতারাতি ৭৩ হাজার শিক্ষককে কর্মহীন’ করা হয়েছিল বলে দাবি করে দলের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রচারে নামতে বলেছে শাসক দল। তার জবাবেই এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন শুক্রবার বিবৃতিতে দাবি করেছেন, বামফ্রন্ট আমলে ‘শুরু থেকেই নতুন বিদ্যালয় স্থাপন, শিক্ষার্থীদের একশো শতাংশ নথিভুক্তির অভিযান, শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগে স্বচ্ছতা ও চাকরির নিরাপত্তা ও পেনশন সুনিশ্চিত’ করা হয়েছে।
জ্যোতিবাবুর আমলে যে সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল প্রচার শুরু করেছে, তার প্রেক্ষিতে এবিটিএ-র তরফে বলা হয়েছে, ‘১৯৯০ সালে নতুন বেতনক্রম চালু হয় এবং তা কার্যকর হয় ১৯৮৬ সাল থেকে। ১৯৮১ ও তার আগে অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছরই ছিল। অবসরের পরে তাঁদের আর্থিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে পরপর পাঁচ বার এক বছর করে এক্সটেনশনের সুযোগ দেওয়া হতো।’ পরে বেতন বৃদ্ধির পরে বলা হয়, বর্ধিত বেতন গ্রহণ করলে ওই ‘এক্সটেনশনে’র সুযোগ পাওয়া যাবে না এবং ৬০ বছরেই অবসর বাধ্যতামূলক হবে। নতুন কর্মপ্রার্থীদের সুযোগ দিতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গেই তৃণমূলের ‘রাতারাতি কর্মহীন’ করার অভিযোগ খারিজ করে এবিটিএ বলেছে, এই প্রক্রিয়ার জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। কসবায় আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষকদের উপরে পুলিশি নিগ্রহের কথা মনে করিয়ে তাদের আরও দাবি, জেলে পাঠানো দূরে থাক, তখন কারও উপরে এই রকম নির্যাতন হয়নি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)