Advertisement
E-Paper

অন্য মঞ্চে পঞ্চায়েত সম্মেলনে সিপিএম

শাসকের পাল্টা এ বার বিরোধীদের পঞ্চায়েত সম্মেলন। এবং তা নিয়েও এক প্রস্ত বিতর্ক! রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে আগামী বছর। সেই দিকে খেয়াল রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই সরকারি স্তরে পঞ্চায়েত সম্মেলন আয়োজন করে ফেলেছেন।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৬

শাসকের পাল্টা এ বার বিরোধীদের পঞ্চায়েত সম্মেলন। এবং তা নিয়েও এক প্রস্ত বিতর্ক!

রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে আগামী বছর। সেই দিকে খেয়াল রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই সরকারি স্তরে পঞ্চায়েত সম্মেলন আয়োজন করে ফেলেছেন। যে মঞ্চ থেকে পঞ্চায়েত সদস্যদের বেতন বাড়ানোর ঘোষণা করেছিলেন তিনি। প্রশাসনিক স্তরে হলেও সেই সম্মেলনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল গ্রামবাংলার মানুষকে বার্তা দেওয়া। কিন্তু সেখানে ডাক পাননি বিরোধীদের হাতে থাকা পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা। তাঁদের জন্য এ বার পাল্টা সম্মলনের পথে যাচ্ছে বিরোধীরা। যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ও গণতন্ত্র’ বিষয়ক কনভেনশন।

পঞ্চায়েত স্তরে গণতন্ত্রের হাল নিয়ে ওই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্যোক্তা ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরাম’। সেই মঞ্চে গোড়া থেকেই প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যদের পাশাপাশি কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান এবং সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীরা একসঙ্গে আছেন। আগামী ৬ মার্চ ওই মঞ্চের আয়োজনে পঞ্চায়েত সম্মেলনে দলের সব নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যাতে যোগ দেন, তার জন্য লিখিত নির্দেশ জারি করেছে সিপিএম। সেই নির্দেশিকা দেখেই দলের মধ্যে একাংশ ফের প্রশ্ন তুলেছে, পঞ্চায়েত ভোটের নাম করে আবার কি তা হলে কংগ্রেসেরই হাত ধরার কৌশল নেওয়া হচ্ছে?

দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, সেখানে পরিষ্কারই বলা হয়েছে— ‘আগামী ৬ মার্চ কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ও গণতন্ত্র বিষয়ক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। সমস্ত জেলা থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ করতে হবে’। যার প্রেক্ষিতে জলপাইগুড়ির সলিল আচার্যের মতো কয়েক জন নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র মতো মঞ্চের সঙ্গে দলকে জড়িয়ে আবার সেই কংগ্রেসের পাশেই দাঁড়ানো কেন? পঞ্চায়েত ভোটের পরের বছরই লোকসভা নির্বাচন আসছে। দীর্ঘমেয়াদি সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই কৌশল ঠিক করার পক্ষপাতী দলের এই অংশ। উত্তর ২৪ পরগনার তড়িৎ তোপদারের মতো দলের নেতাদের অন্য একাংশ অবশ্য উত্তরপ্রদেশে বামেদের কৌশলকেই ঠিক বলে যুক্তি দিচ্ছেন। উত্তরপ্রদেশে যেখানে বামেদের প্রার্থী নেই, সেখানে বিজেপি-কে হারাতে যাকে প্রয়োজন, তাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাতেও বিজেপি ও তৃণমূলকে রুখতে একই কৌশল নেওয়ার দাবি তুলছেন সিপিএমের বেশ কিছু নেতা।

অন্য সংগঠনের নামে হলেও বিরোধীদের পঞ্চায়েত সম্মেলন আয়োজন অনেককে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির কথা মনে পড়িয়ে দিচ্ছে। অসুস্থ হয়ে পড়ার আগে এ রাজ্যে প্রিয়বাবুই ২০০৯ সালের অগস্টে পঞ্চায়েত সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। ভিড়ে-ঠাসা যে সম্মেলনে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছিলেন, সিপিএমকে রুখতে নিচু তলায় যেমন ভাবে পারুন, জোট বাঁধুন! সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যও বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে এমনিতেই স্থানীয় স্তরে জোট হয়ে যায়। সেখানে বাম-বিজেপি’কে একসঙ্গে বোর্ড চালাতেও দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের বাস্তবতা মাথায় রেখেই যে কোনও ভোটের কৌশল চূড়ান্ত করতে হবে।’’

‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র তরফে প্রাক্তন বিচারপতি অশোকবাবু অবশ্য জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত স্তরে গণতন্ত্র্রের উপরে হামলা এবং দল ভাঙানোর খেলার প্রেক্ষিতেই তাঁরা এমন সম্মেলনের পরিকল্পনা করেছেন। তবে কাদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হবে, এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

CPIM Panchayat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy