Advertisement
E-Paper

বরাহনগরে সিপিএম প্রার্থী তন্ময়, তৃণমূলের সায়ন্তিকা ও পদ্মের সজলের বিরুদ্ধে বাম-বাজি ‘ঘরের ছেলে’

তন্ময় এর আগে উত্তম দমদমের বিধায়ক ছিলেন। ২০১৬ সালে তৃণমূলের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও বিজেপির অর্চনা মজুমদারকে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২১ সালের ভোটে হেরে যান।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৩১
তন্ময় ভট্টাচার্য, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সজল ঘোষ।

তন্ময় ভট্টাচার্য, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সজল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

বরাহনগরে ‘ঘরের ছেলে’কে প্রার্থী করল সিপিএম। লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম দফায় বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ও বিজেপি সজল ঘোষকে। বামেরা প্রার্থী করল দলের প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যকে।

তন্ময় এর আগে উত্তম দমদমের বিধায়ক ছিলেন। ২০১৬ সালে তৃণমূলের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও বিজেপির অর্চনা মজুমদারকে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। এর পর ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তন্ময়কে আবার উত্তম দমদমেরই প্রার্থী করে দল। কিন্তু সে বার চন্দ্রিমার কাছে পরাজিত হন তিনি। সম্প্রতি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাপস রায়। লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থীও তিনি। এর ফলে বরাহনগরের আসনটি বিধায়কশূন্য হয়ে পড়ে। তাই সেখানে উপনির্বাচন হচ্ছে। তন্ময় বরাহনগরের বাসিন্দা হওয়ায় তাঁকেই ওই আসনে প্রার্থী করল বামেরা।

সিপিএমের একটি সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটে দমদম আসনের প্রার্থী হিসাবে তন্ময়ের নাম ভাবা হয়েছিল। তন্ময়ের নিজেরও ইচ্ছা ছিল। কিন্তু জেলায় দলের তন্ময়-বিরোধী গোষ্ঠীর চাপে তা সম্ভব হয়নি। সেই কারণেই ‘বাইরে থেকে’ সুজন চক্রবর্তীকে প্রার্থী করা হয়। একই ভাবে ব্যারাকপুরেও দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয়টি নজরে রেখে প্রার্থী করা হয় অভিনেতা দেবদূত ঘোষকে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের বেনজির বিপর্যয়ের পরে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন তন্ময়। প্রকাশ্যে দলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় তিন মাস মুখ খুলতে নিষেধ (সেন্সর) করা হয়েছিল তাঁকে। বিধানসভা নির্বাচনে ব্যর্থতার দায় দলীয় নেতৃত্বের ঘাড়ে চাপিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘দলের এই ব্যর্থতার দায় নেতৃত্বের। আমাদের নয়। নিচুতলার কর্মীদেরও নয়। লোকসভায় শূন্য হয়ে যাওয়ার পরেও সেই দায় কেউ নেননি। বিধানসভায় হারের পরেও কেউ দায় নেবেন না। শুধু স্তালিন কপচালে হবে না। এটা স্তালিনের যুগ নয়।’’ বামফ্রন্টের সঙ্গে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর জোট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তন্ময়। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দলীয় মুখপত্রে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল সিপিএম। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদকের নামে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘তন্ময় ভট্টাচার্য যা বলেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত মত। পার্টি পরিচালনা বা নেতৃত্বের বিষয়ে যা বলেছেন সে ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’। তবে এই বিবৃতি প্রকাশের পরেও নিজের মন্তব্যে অটল ছিলেন তন্ময়।

সিপিএম উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা পাওয়া নিয়েও বছর দুয়েক আগে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন তন্ময়। জেলা সম্মেলনের পরে উত্তর ২৪ পরগনায় যে জেলা সম্পাদকমণ্ডলী গঠিত হয়েছিল, সেখানে পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবেই জায়গা পেয়েছিলেন তন্ময় ও অশোকনগরের নেতা বাবুল কর। কিন্তু দলের সর্ব ক্ষণের কর্মী না হওয়া সত্ত্বেও তন্ময়কে কেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে রাখা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দলের মধ্যেই। যদিও তন্ময় আগেও ওই কমিটিতে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করে জানিয়েছেন, তাঁরা সর্ব ক্ষণের কর্মীর নীতিই মানবেন। এর পর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে জেলা কমিটির বৈঠকে তন্ময় ও বাবুলকে পূর্ণাঙ্গ সদস্য থেকে সরিয়ে আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়। দলীয় সূত্রে খবর, ওই সিদ্ধান্তের কথা শুনে তিনি আর সক্রিয় রাজনীতি করতে চান না জানিয়ে হাতজোড় করে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাঁর সঙ্গে কথা বলেন রাজ্য নেতৃত্ব। সাম্প্রতিক সময়ে টিভির পর্দায় দেখা যায় তন্ময়কে। অংশ নেন বিতর্ক সভাগুলিতে। সেই তন্ময়কে বরাহনগর উপনির্বাচনে প্রার্থীও করল সিপিএম।

Baranagar Tanmoy Bhattacharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy