E-Paper

সীতারাম-বুদ্ধ স্মরণ, ১১ যুব-মুখে শাসককে নিশানায় সিপিএম

দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রথম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার হুগলির কোন্নগরে ‘নবীনের কথায়’ নামে ওই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল সিপিএম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:৫৪
(বাঁ দিকে) সীতারাম ইয়েচুরি এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) সীতারাম ইয়েচুরি এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বাংলা-বাঙালি-নাগরিকত্বের প্রশ্ন, রাজ্যের নারী নির্যাতনের বিভিন্ন অভিযোগ, রাজনৈতিক সন্ত্রাস — সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতিতে চর্চিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নবীন প্রজন্মের ভাবনার কথা তুলে ধরতে ১১ জন ছাত্র-যুব মুখকে সামনে আনল সিপিএম। প্রত্যেকেই বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রের বিজেপি ও রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসকে এক পঙ্‌ক্তিতে বসিয়ে সরব হয়েছেন। দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রথম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার হুগলির কোন্নগরে ‘নবীনের কথায়’ নামে ওই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল সিপিএম।

পরিযায়ী শ্রমিকের সমস্যা, আদিবাসী-শিক্ষা, গ্রামীণ অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান, বেকারত্ব, নারী নিরাপত্তার হাল, দেশ-দুনিয়ার গতিপ্রকৃতির মতো নানা বিষয়ে তাঁদের মতামতের কথা তুলে ধরেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, সংগঠনের নেত্রী দীপ্সিতা ধর, প্রতীকউর রহমান, অয়নাংশু সরকার, প্রণয় কার্য্যি, আমজাদ হোসেন প্রমুখ।

মঞ্চ থেকে বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন মীনাক্ষী। এই সূত্রেই তিনি বলেছেন, “দেশে ২০২২-এর পরে থেকে নারী নিরাপত্তা হাল নিয়ে তথ্য নেই। এখনও আর জি কর-কাণ্ডের বিচার অধরা। নিহতের মা’কে মেয়ের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আগলে রাখতে হচ্ছে। পুলিশ, সিবিআই, সিআইডি এতটাই ব্যর্থ!” এই সূত্র ধরেই, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার ‘সন্ত্রাসে’র অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রতীকউর। বর্তমান রাজনৈতিক ‘আখ্যানে’র দিকে তাকিয়ে তাঁর বক্তব্য, “আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করে তোমরা পারবে না। আমরা লড়াই বন্ধ করে দিলে তৃণমূলের অত্যাচারের শৃঙ্খলে আটকে থাকতে হবে।”

পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে বাংলা-বাঙালি বিরোধী, নাগরিকত্ব, ধর্ম নিয়ে রাজনীতির যে অভিযোগগুলি বিরোধীরা করছে, সেই প্রেক্ষিতে ‘পরিচয়ের রাজনীতি’র কথা তুলে ধরেছেন দীপ্সিতা। তিনি বলেছেন, “বিজেপি-আরএসএস পরিচিতির রাজনীতিই করছে। সেটা সংখ্যাগুরুর রাজনীতি। এটা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র তৈরির রাজনীতি।” এই সূত্র ধরে, বিজেপি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলসে’র মাধ্যমে দেশভাগ ও দাঙ্গার স্মৃতিকে উস্কে দিতে চাইছে বলেও তাঁর অভিযোগ।

এই অবস্থা থেকে ‘মুক্তি’র উপায় হিসেবে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এসএফআই নেতা সৃজন। তিনি বলেছেন, “২০১৪-য় সুশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি দেশে ক্ষমতায় এল। আর তার পরে হিন্দু-মুসলমান করল। আসলে উগ্র ডানপন্থার হাতে মানুষের রুটি-রুজির সমস্যার সমাধান নেই। আর এ দিকে, পঞ্চায়েত থেকে সর্বত্র লুটের মডেল চলছে। বিকল্প একমাত্র সমাজতন্ত্র।”

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনিও বলেছেন, “সীতারাম, বুদ্ধদেবরা শিক্ষার অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। আর আজ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক নেই। দেশে ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র আক্রান্ত। তারই অংশ হিসেবে রাজ্যে চলছে লুট ও সন্ত্রাসের রাজনীতি।”

অনুষ্ঠান থেকে সীতারাম ও বুদ্ধদেব স্মরণে যে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল, তার স্থানাধিকারীদের পুরস্কৃত করা হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CPIM Sitaram Yechury Buddhadeb Bhattacharjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy