Advertisement
E-Paper

পোষ্যদের জন্য শ্মশান হচ্ছে হলদিবাড়িতে

পোষ্য বড় আদরের। কিন্তু সে মারা যাওয়ার পরে কোথায় ফেলবেন দেহ? খোদ কলকাতার মানুষেরও এই নিয়ে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হয়। এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীকে পিছনে ফেলে দিল উত্তরবঙ্গের ছোট্ট জনপদ হলদিবাড়ি। শীঘ্রই সেখানে চালু হতে চলেছে পোষ্যদের জন্য শ্মশান।

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯

পোষ্য বড় আদরের। কিন্তু সে মারা যাওয়ার পরে কোথায় ফেলবেন দেহ? খোদ কলকাতার মানুষেরও এই নিয়ে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হয়। এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীকে পিছনে ফেলে দিল উত্তরবঙ্গের ছোট্ট জনপদ হলদিবাড়ি। শীঘ্রই সেখানে চালু হতে চলেছে পোষ্যদের জন্য শ্মশান।

অন্য শহরের মতো হলদিবাড়িতেও গবাদিপশু থেকে শুরু করে পোষা কুকুর-বেড়াল মারা গেলে ভাগাড়ে ফেলে দেওয়ার প্রথা ছিল। কিছু ক্ষেত্রে লোকজন কবর দিত পোষ্যদের। কিন্তু সেই কবর খুঁড়ে কুকুর-শিয়ালেরা তুলে আনে দেহ। ফলে দুর্গন্ধে ভরে যায় এলাকা। রোগ-ব্যাধি সংক্রমণের আশঙ্কাও বেড়ে যায়। এই অবস্থা থেকে বাঁচতে চ্যাংরাবান্দা উন্নয়ন পর্ষদ সম্প্রতি হলদিবাড়ি পুরসভার কাছে প্রস্তাব রেখেছে, সেখানে পোষ্যদের জন্য একটি শ্মশান করা হোক। হলদিবাড়ি পুরসভা শুধু রাজি হওয়াই নয়, শ্মশানের জন্য জমিরও ব্যবস্থা করেছে।

ঠিক হয়েছে, সেই শ্মশানে বসবে বায়োমাস গ্যাসিফায়ার চুল্লি। উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান অর্ঘ্য রায়প্রধান বলেন, ‘‘কোনও রকম দূষণ ছড়ানোর ভয় এই চুল্লিতে থাকবে না।” কী ভাবে? এই পদ্ধতিতে কাঠ ও বাঁশের টুকরো, খড়, পাটকাঠি, আখের ছিবড়ে, ভুট্টার ভেতরের অংশ, গোবরের মতো জৈব বস্তু ব্যবহার করা হয় এই চুল্লিতে। সরকারি সূত্রে দাবি, বৈদ্যুতিকের মতো এই চুল্লিতেও এক ঘণ্টার মধ্যেই দেহাবশেষ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।

হলদিবাড়ি পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কাছে ফিরিঙ্গির ডাঙা গ্রামে পুরসভার যে জমি আছে, সেখানেই বসবে এই চুল্লি। চ্যাংরাবান্দা উন্নয়ন পর্ষদ সুত্রে জানা গিয়েছে, চুল্লি হবে দু’ধরনের। একটি গরু-মোষের মতো বড় চেহারার প্রাণীর জন্য। অন্যটি ছাগল, কুকুর, বেড়ালের জন্য। সব মিলিয়ে চুল্লি তৈরি করতে খরচ হবে ৪৯ লক্ষ টাকা। আগামী মার্চের মধ্যে এটি চালু হবে বলে মনে করছে উন্নয়ন পর্ষদ।

এমন চুল্লির ব্যবস্থা রাজ্যে তো বটেই, গোটা দেশেই বিরল। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুতে পোষ্যদের শেষকৃত্য করার জন্য কিছু জায়গা আছে। বেশির ভাগই কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার। এবং প্রায় সবগুলিতেই পোষ্যের দেহ কবর দিতে হয়। কলকাতার বিবিরহাটেও এমনই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত করবখানা রয়েছে। কিন্তু এমন শ্মশানের ব্যবস্থা? কলকাতারও বেশির ভাগ লোকই মনে করতে পারলেন না।

চ্যাংরাবান্দা উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রে বলা হচ্ছে, এটি তাই একটি পথপ্রদর্শক শ্মশান হবে। এতে যেমন এক দিকে ভাগাড়ে দেহ ফেলে রেখে তৈরি করা দূষণ কমবে, অন্য দিকে পোষ্যের শেষকৃত্যেও কোনও খাদ থাকবে না। কেউ কেউ বলছেন, ‘‘বাড়ির গবাদিপশু মারা গেলে ভাগাড়ে ফেলতে খারাপই লাগত। এখন আর সেই ভাবনা থাকবে না।’’

অন্যত্র পোষ্যকে কবর দিতে গেলে টাকা লাগে। এখানে তেমন কোনও চার্জ রাখছে না হলদিবাড়ি পুরসভা। শুধু শ্মশানে হাজির ডোমের হাতে কিছু টাকা দিলেই হবে, জানালেন পুরসভার এক কর্তা।

Crematorium Pets
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy