Advertisement
E-Paper

‘শ্রেণিচ্যুত’ সিপিএমে কি ফিরছেন গরিব মানুষ? ক্ষেতমজুর সমাবেশে ভিড় দেখে নেতারা তো খুশি

সিপিএম তাদের দলীয় দলিলে সাম্প্রতিক সময়ে বারবার স্বীকার করেছে, গরিব মানুষের সঙ্গে দলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। আলিমুদ্দিন মনে করে, তোবড়ানো গালের বদলে বেড়ে গিয়েছে চকচকে মুখ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৪
CPM Rally

(বাঁ দিকে) সিপিএমের ক্ষেতমজুর সমাবেশে জমায়েতের একাংশ। সমাবেশে আসা এক সংগঠক (ডান দিকে)। — ছবি সিপিএমের ফেসবুক ও নিজস্ব চিত্র।

সভা হল। তাতে ভিড়ও হল। সেই সভা থেকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার ও রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে আক্রমণও শানানো হল। কিন্তু আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে অন্য স্বস্তি দিয়ে গেল রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ। সোমবারের ক্ষেতমজুর সমাবেশে গরিব মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। গত বুধবার একই জায়গায় সভা করেছিল সিপিএমের কৃষক সংগঠন প্রাদেশিক কৃষকসভা। সেই সভাতেও অর্থনৈতিক ভাবে প্রান্তিক অংশের ভিড় দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সোমবার গোটা জমায়েতটাই ছিল দিন-আনা, দিন-খাওয়া মানুষের। সেই সভা থেকে ১০০ দিনের কাজ চালু করার দাবিতে নবান্ন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিল বাম ক্ষেতমজুর সংগঠন। ১০০-র বদলে ২০০ দিনের কাজ নিশ্চিত করারও দাবি উঠল এ দিনের সমাবেশ থেকে।

সাম্প্রতিক সময়ে সিপিএম তাদের দলীয় দলিলে বার বার স্বীকার করেছে, গরিব মানুষের সঙ্গে দলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘অনেকে বলেন, আমাদের দল জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। আমি মোটেই তা মনে করি না। আমার মনে হয় সিপিএম শ্রেণিবিচ্ছিন্ন হয়েছে। যে অংশের মানুষের আমাদের সঙ্গে থাকা উচিত, তাঁরা সরে গিয়েছেন। উল্টো দিকে কিছু চকচকে মুখের জটলা বেড়েছে।’’

২০১৭ সালে কৃষক সভার থেকে ক্ষেতমজুর সংগঠনকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি। কারণ, তারা মনে করে, ক্ষেতমজুরদের কাজের ধরন পাল্টে গিয়েছে। তাদের সঙ্গে কৃষকদের সম্পৃক্ত করে দেখা ঠিক নয়। সোমবার ক্ষেতমজুর সমাবেশের ভিড়ে দলের নেতারা সন্তুষ্ট। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ভিড় কি ভোটে রূপান্তরিত হবে? এ ব্যাপারে সমাবেশে দাঁড়িয়েই পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের এক নেতা হুগলির চণ্ডীতলার এক কৃষক নেতাকে বলছিলেন, ‘‘আমাদের জমায়েতে আসা অনেকেই গত লোকসভা, বিধানসভায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতে তাঁদের অনেককে আমরা ফেরাতে পেরেছি। ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ।’’

বাম সমাবেশে আসা ক্ষেতমজুরেরা।

বাম সমাবেশে আসা ক্ষেতমজুরেরা। —নিজস্ব চিত্র।

যে ১০০ দিনের কাজ ফেরানোর দাবিতে ক্ষেতমজুর সংগঠনের সভা ছিল সোমবার, সেই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতেই আগামী ২ অক্টোবর দিল্লি অভিযানের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পায়ের সমস্যার কারণে সেই কর্মসূচিতে অনিশ্চিত। ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন। রাজঘাটে প্রার্থনায় বসবেন তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাধিপতিরা। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে তৃণমূলের বক্তব্য, ভোটে জিততে না পেরে বাংলার গরিব মানুষকে ভাতে মারার ছক করেছে কেন্দ্র। পাল্টা বিজেপির বক্তব্য, এই প্রকল্পের টাকা চুরি হয়েছে বাংলার গ্রামগঞ্জে। আগের টাকার হিসাব না-দিলে নতুন করে টাকা দেওয়া হবে না। সোমবারের সভা থেকে এ নিয়ে তৃতীয় স্বর তুলতে চাইল সিপিএমের ক্ষেতমজুর সংগঠন। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘বকেয়া মজুরি কেন্দ্রীয় সরকারকে দিতে হবে। যারা রেগার টাকা চুরি করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। সেই সঙ্গে, পুজোর আগে ১০০ দিনের কাজ বাংলায় চালু করতে হবে।’’ অর্থাৎ, এই পরিস্থিতির জন্য দু’পক্ষকেই দায়ী করে নিজেদের বক্তব্য সামনে আনতে চাইছেন তাঁরা। ধর্মতলার সভা থেকে বাম ক্ষেতমজুর নেতৃত্ব বলেন, পুজোর আগে ১০০ দিনের কাজ চালু না-হলে তাঁরা মামলা করবেন। পাশাপাশি, উৎসব মিটলেই নবান্ন অভিযানের পথে যাবেন তাঁরা। যদিও তার কোনও দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি।

CPM Kolkata Rally West Bengal Left
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy