আপমানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা যাচ্ছিল। এ বার সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির মৈপীঠ এলাকা। শুক্রবার রাতে তৃণমূলের এক নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে খুন করার পর, এসইউসিআই-এর এক নেতার বাড়ি জ্বালিয়ে তার চাল থেকে তাঁকে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি ক্ষতিপূরণ বিলির ক্ষেত্রে শাসক দলের ওই এলাকার নেতাদের ভূমিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন এসইউসিআই নেতারা। অভিযোগ, ক্ষতিগ্রস্থের বদলে তৃণমূল নেতাদের ঘনিষ্ঠদের পকেটে চলে যাচ্ছে সরকারি টাকা ও ত্রাণের জিনিসপত্র। প্রতিবাদে শামিল হন স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। দফায় দফায় তাঁরা এ বিষয়ে মৈপীঠ কোস্টাল থানায় স্মারকলিপি জমা দেন। কিন্তু, তার কোনও প্রতিকার মিলছিল না। ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে মৈপীঠের তৃণমূল নেতা গোপাল মাঝির অনুগামী বলে পরিচিত অশ্বিনী মান্নাকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় এসইউসিআই-এর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতাদের। নাম জড়িয়ে যায় সুধাংশু জানা নামে এক ব্যক্তির। এই ঘটনার পরেই শনিবার একদল যুবক উত্তর বৈকুণ্ঠপুরে সুধাংশুর বাড়িতে হামালা করেন। লন্ডভন্ড করে পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর বাড়ি। এর পর ওই বাড়ি থেকেই ওই এসইউসিআই নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এসইউসিআই কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য ত্রাণ নিয়ে লড়ছিলেন সুধাংশু। তাই তাঁকে এ ভাবে খুন করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অশ্বিনীকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে সুধাংশু এবং তাঁর অনুগামীরা। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাঁর বাড়িতে চড়াও হন। ভয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
শনিবার দিনভর এই ঘটনায় উত্তপ্ত কুলতলির মৈপীঠ এলাকা। বারুইপুর জেলা পুলিশের বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে রয়েছে। এই ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশিও। ইতিমধ্যে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।