বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড়ের রেশ কাটতে না কাটতে নতুন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে বৃহস্পতিবারই জন্ম নিয়েছে ঘূর্ণিঝড়় দিটওয়া। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি কোনও প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের উপর পড়ছে না। তবে একধাক্কায় বেশ খানিকটা তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। আগামী কয়েক দিনও পারদ থাকবে ঊর্ধ্বমুখী।
শুক্রবার মৌসম ভবন জানিয়েছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় দিটওয়া ভারতের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। গত ছ’ঘণ্টায় তার গতি ছিল ঘণ্টায় আট কিলোমিটার। এই মুহূর্তে তা শ্রীলঙ্কার বাট্টিক্যালোয়া থেকে আট কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম, ভারতের পুদুচেরী থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব এবং চেন্নাই থেকে ৫৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন:
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এই ঘূর্ণিঝড় শ্রীলঙ্কার উপকূল বরাবর আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোবে এবং তামিলনাড়ুর উপকূলের কাছে পৌঁছোবে। ৩০ নভেম্বর, রবিবার উত্তর তামিলনাড়ু, পুদুচেরী এবং সংলগ্ন দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলের কাছে এই ঘূর্ণিঝ়ড় আছড়ে পড়তে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে তামিলনাড়ুতে। বেশ কিছু এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ কোথাও কোথাও ২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি হতে পারে। রাজ্য জুড়ে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে তৈরি থাকতে বলেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। একই ভাবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পুদুচেরীও। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া আপাতত নিষিদ্ধ।
বাংলার ক্ষেত্রে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি বাড়তে পারে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে। তার পরের চার দিন আর তাপমাত্রায় তেমন হেরফেরের সম্ভাবনা নেই। আপাতত রাজ্যের সর্বত্র আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক। সম্প্রতি কলকাতার তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছিল। তা সামান্য বেড়েছে। শুক্রবার সকালে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে ০.২ ডিগ্রি কম। এ ছাড়া, বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৪ ডিগ্রি কম। দিনভর শহরের আকাশ মূলত পরিষ্কার থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় দিটওয়ার নামকরণ করেছে ইয়েমেন। কিছু দিন আগেই দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার। তার প্রভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে আছড়ে পড়েছিল সেই ঘূর্ণিঝড়। তবে দিটওয়া আছড়ে পড়বে ভারতের উপকূলেই।