Advertisement
E-Paper

ফের ভাঙল সমুদ্র-বাঁধ

এ দিন দুপুর নাগাদ ভাটা শুরু হতেই জলোচ্ছ্বাসের দাপট কিছুটা কমে। ক্ষতিগ্রস্ত মেরিন ড্রাইভের উপর থেকে বাঁধের  কালো পাথর সরানোর কাজ শুরু করে সেচ দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০১:০৩
জলছবি: রামনগর-১ ব্লকের চাঁদপুর এলাকায় ফের সমুদ্র বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে লোকালয়ে। —নিজস্ব চিত্র

জলছবি: রামনগর-১ ব্লকের চাঁদপুর এলাকায় ফের সমুদ্র বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে লোকালয়ে। —নিজস্ব চিত্র

রাখি পূর্ণিমার পরে কৌশিকী অমাবস্যা। দু’সপ্তাহের ব্যবধানে ফের ভাঙল সমুদ্রের বাঁধ।

বৃহস্পতিবার সকালে জোয়ার চলাকালীন সমুদ্রের বাঁধ এবং ভাঙাচোরা মেরিন ড্রাইভ অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরের নোনাজল ঢুকে ভাসিয়ে দিল রামনগর-১ ব্লকের তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম। বেশ কিছু পরিবারকে স্থানীয় আয়লা কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত ৪ অগস্ট রামনগরের চাঁদপুরে একটি বেসরকারি হোটেলের কাছে যেখানে পূর্ণিমার কোটালে সমুদ্রের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল, সেখান থেকে কয়েক হাত দূরে একাধিক জায়গায় সমুদ্র বাঁধে বড় বড় ভাঙন তৈরি হয়। তাজপুর থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের একাধিক জায়গায় বিশাল এলাকাজুড়ে ফাটল তৈরি হয়েছে। সেই ফাটল দিয়ে বঙ্গোপসাগরের জল গ্রামগুলিতে ঢুকছে। এদিন চাঁদপুর, জামড়া, ক্ষীরপাল, কায়মা এবং জলধার কিছু অংশে জল ঢুকেছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। উপকূলবর্তী একাধিক বাড়ি জলোচ্ছ্বাসে সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। নোনা জলে প্লাবিত পুকুর এবং ধান জমি। এলাকার মানুষের অভিযোগ, এমনিতেই পূর্ণিমার কোটালে সমুদ্র বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। তারপরেও অমাবস্যার আগে প্রশাসন সতর্ক হয়নি। ফলে বারবার বাড়িঘর, ধান জমি এবং পুকুরের মাছ নষ্ট হচ্ছে।

এ দিন দুপুর নাগাদ ভাটা শুরু হতেই জলোচ্ছ্বাসের দাপট কিছুটা কমে। ক্ষতিগ্রস্ত মেরিন ড্রাইভের উপর থেকে বাঁধের কালো পাথর সরানোর কাজ শুরু করে সেচ দফতর। একই সঙ্গে আগের কোটালে যে অংশের বাঁধ ভেঙেছিল, সেখানেও যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে কালো পাথর ফেলা শুরু হয়েছে। তবে এবার নতুন জায়গায় সমুদ্রের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আরও আতঙ্কিত উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। শনিবারও নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ দিন রাত এবং শনিবার সকালেও বাঁধ অতিক্রম করে সমুদ্রের জল ফের এলাকায় ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা।

সমুদ্রের জল ঢুকে প্লাবিত চাঁদপুর এলাকা। —নিজস্ব চিত্র

শঙ্করপুরের বোল্ডারের বাঁধ অতিক্রম করে এ দিন মৎস্য খটিতে জল ঢোকায় বেশ কিছু মৎস্যজীবীর বাড়ি ভেঙেছে। এদিন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ তদারকি করছিলেন তালগাছাড়ী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ জানা। তাঁর দাবি, ‘‘এফের সমুদ্রের বাঁধ ভেঙে চারটি গ্রাম প্লাবিত। দুটি গ্রামের ঘরবাড়ি ভেঙেছে। বেশ কয়েকটি পরিবারকে স্থানীয় আয়লা কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে ভাটা শুরু হতেই তাঁরা বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন।’’ যদিও এদিন জল ঢোকার কথা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অখিল গিরি। তাঁর দাবি, ‘‘কোথাও জল ঢোকেনি। বাঁধ ছাপিয়ে জল মেরিন ড্রাইভে এলেও তা ফের সমুদ্রের দিকে ফিরে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সমুদ্র বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ জোরকদমে চলছে।’’

তৃণমূল বিধায়কের এ হেন মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তপন মাইতি বলেন, ‘‘এলাকার খোঁজ-খবর শাসকদলের বিধায়ক কেমন রাখেন তা তাঁর কথাচতেই স্পষ্ট। বারবার উপকূলের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অথচ সমুদ্র বাঁধ মেরামতি নিয়ে হেলদোল নেই রাজ্য সরকারের।’’

এদিন উত্তাল ছিল দিঘার সমুদ্রও। সকাল থেকেই গার্ডওয়াল টপকে বঙ্গোপসাগরের জল ঢুকে পড়ে দিঘার সিবিচে। প্রায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে যায় সৈকতে উপরে। হকার পুনর্বাসন স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে উত্তাল সমুদ্র উপভোগ করেন উৎসাহী পর্যটকেরা।

High Tide Depression Dams
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy