Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
ধৃত শাশুড়ি-ননদ

লুকোচুরি শেষ, উদ্ধার পায়েলের সন্তান

ঘটনার ১০ দিন পরেও অভিযুক্ত শাশুড়ি ও ননদকে কেন ধরা হচ্ছে না —এ নিয়ে রিষড়া থানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন মৃতা পায়েল পালের পড়শিরা। এর কিছু পরেই মঙ্গলবার ধরা পড়লেন তাঁরা।

পাকড়াও পায়েলের শাশুড়ি ও ননদ। প্রকাশ পালের তোলা ছবি।

পাকড়াও পায়েলের শাশুড়ি ও ননদ। প্রকাশ পালের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রিষড়া শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৯
Share: Save:

ঘটনার ১০ দিন পরেও অভিযুক্ত শাশুড়ি ও ননদকে কেন ধরা হচ্ছে না —এ নিয়ে রিষড়া থানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন মৃতা পায়েল পালের পড়শিরা। এর কিছু পরেই মঙ্গলবার ধরা পড়লেন তাঁরা। বারুইপুরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁদের ধরেছে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে পায়েলের ৬ মাসের শিশুকন্যাকেও উদ্ধার করা হয়েছে। নাতনিকে ফিরে পেয়ে স্বস্তিতে পায়েলের বাপের বাড়ির লোকজন। তাঁরা জানিয়েছেন, শিশুটিকে তাঁরা নিজেদের কাছেই রাখতে চান।

এ দিন ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত দিয়েছেন শ্রীরামপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম রোহিনী রাই। পরে ননদ মৌসুমী এবং শাশুড়ি রঞ্জনা বলেন, ‘‘আমরা নির্দোষ। সব অভিযোগ মিথ্যে।’’

গত ৬ অক্টোবর রিষড়ায় শ্বশুরবাড়িতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় নদিয়ার ধুবুলিয়ার মেয়ে পায়েলের। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দাবি করেন, শৌচাগারের শাওয়ারের পাইপের সঙ্গে ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন পায়েল। তাঁরাই তাঁকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখােন তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

পায়েলের বাপের বাড়ি অবশ্য আত্মহত্যার তত্ত্ব মানতে চাননি। তাঁদের অভিযোগ, পায়েলকে খুন করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই আত্মহত্যার নাটক ফেঁদেছেন। মেয়ের স্বামী, শ্বশুর, শাশু়ড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে রিষড়া থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন পায়েলের মা নমিতা হাজরা। পুলিশ জানায়, ওই রাতেই গ্রেফতার হন পায়েলের স্বামী কৃষ্ণেন্দু এবং শ্বশুর দীপক পাল। তখনই পায়েলের শাশুড়ি-ননদ তাঁর ৬ মাসের মেয়ে অঙ্গিরাকে নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার দশ দিন পরেও তাঁরা ধরা না পড়ায় সোমবার কৃষ্ণেন্দুদের পড়শি মহিলারা রিষড়া থানায় বিক্ষোভও দেখান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশ শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সূত্রে খবর, রঞ্জনা এবং ননদ মৌসুমী পাল দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় মোবাইলের টাওয়ার দেখে তাঁদের অবস্থান জানতে পারেন তদন্তকারী অফিসাররা। রাতেই পায়েলের বাপের বাড়ির লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে রিষ়ড়া থানার একটি দল বারুইপুরে যায়। হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌরব লাল জানান, মঙ্গলবার ভোরে সেখান থেকেই মা-মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়।

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ রিষ়ড়া থানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, পায়েলের বড়দি দোলা চৌধুরীর কোলে খেলছে ছোট্ট অঙ্গিরা। দোলাদেবী বলেন, ‘‘ওকে আমাদের কাছে রেখে বড় করে তুলতে চাই। যে পরিবার ওর মাকে মেরেছে, সেখানে পাঠাতে চাই না।’’ পুলিশ অবশ্য আইন মোতাবেক বাচ্চাটিকে হুগলি জেলা চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দিয়েছে। চাইল্ড লাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটর গোপীবল্লভ শ্যামল জানান, নিয়ম অনুযায়ী আজ, বুধবার শিশুটিকে জেলা শিশুকল্যাণ কমিটিতে পেশ করা হবে। শিশুটির দেখভালের বিষয়ে তাঁরাই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Infant In-law arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE