বুধবার হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়ার দফতরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহ দুয়েক ধরে হুগলি জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের রেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী নয়। তবে জেলার বাসিন্দারা সচেতন হলে তবেই ডেঙ্গিতে পুরোপুরি রাশ টানা যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন। ডেঙ্গি মোকাবিলায় হুগলিতে হটস্পটগুলি চিহ্নিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই এলাকাগুলিতে কী কী করণীয়, তারও দিকনির্দেশ করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়ার দফতরে ডেঙ্গি মোকাবিলায় একটি বৈঠক করা হয়। তাতে জেলাশাসক ছাড়া উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী, সদর মহকুমাশাসক সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়া-সহ পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে জেলাশাসকের দাবি, ‘‘হুগলি জেলার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, রিষড়া, ডানকুনি, বৈদ্যবাটি, ভদ্রেশ্বর পুরসভার যে সব এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেই জায়গাগুলিকে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শ্রীরামপুর এবং উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর ও রিষড়া, চণ্ডীতলার মশাট, শিয়াখালা, মগরার দেবানন্দপুর, ব্যান্ডেল, পোলবার সুগন্ধা, রাজহাট, বলাগড়ের শ্রীপুর ও জিরাট, খানাকুলের চিংড়া গ্রাম পঞ্চায়েত হটস্পট।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৮ নভেম্বর হুগলিতে ৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ৫,৯৫৯ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই মুহূর্তে জেলায় ৫৩৩ জন সক্রিয় রোগী রয়েছেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আক্রান্তদের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়া বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও ৬ হাজার ছোঁয়নি। প্রতি দিন ৮০-র মতো আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। পরীক্ষাও বাড়ানো হয়েছে। ১৮টা ব্লক হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক কাজ করছে। হটস্পট এলাকাগুলিতে যদি কারও জ্বর হয়, তবে ৩ দিনের মধ্যে রক্তপরীক্ষা করতে হবে। সব হাসপাতালে এলাইজা পদ্ধতিতে বিনামূল্যে রক্তপরীক্ষা করা হচ্ছে।’’
জেলার হটস্পটগুলিতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ওই সব এলাকার জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ডেঙ্গি মোকাবিলায় কী করণীয় তারও দিকনির্দেশ দেওয়া হয় বুধবারের বৈঠকে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘রিভিউ মিটিংয়ে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুজোর পর ডেঙ্গি কিছুটা বেড়েছিল। তবে গত দু’সপ্তাহে তা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মানুষজন আরও সচেতন হলে ডেঙ্গি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। জ্বরের রোগীদের খোঁজ নিয়ে তাঁদের উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। শহরাঞ্চলে যেখানে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি, সেখানে ঘুরে ঘুরে রক্তপরীক্ষা করবে মোবাইল ভ্যান। হটস্পট এলাকায় স্বাস্থ্যশিবির করতে বলা হয়েছে। বাজার এলাকার মতো জায়গায় যেখানে মানুষের ভিড় বেশি, সেখানে মাইকের মাধ্যমে প্রচারে জোর দিচ্ছি আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy