E-Paper

পুজোর পরেও কমেনি প্রকোপ, রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত প্রায় ৯০ হাজার! মুখে কুলুপ স্বাস্থ্য দফতরের

মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৯০ হাজার বলে যে খবর মিলেছে, তা দেশের মধ্যে প্রথম বলেই মত চিকিৎসকদের একাংশের। তথ্য বলছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৪,১৯৮ জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:৫১
An image of Dengue

—প্রতীকী চিত্র।

রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের মোট সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার! পরিস্থিতি যে দিকে চলেছে, তাতে চলতি বছরে এ রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে যাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তবে, রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি ভাবে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও শহরের সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে এখনও প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গি আক্রান্তেরা। কিছু জায়গায় পুজোর পরে রোগী ভর্তির হার সামান্য হলেও বেড়েছে। চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে চলতি মাস পার হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৯০ হাজার বলে যে খবর মিলেছে, তা দেশের মধ্যে প্রথম বলেই মত চিকিৎসকদের একাংশের। ‘ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজ়িজ় কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’-এর তথ্য বলছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৪,১৯৮ জন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সেই সংখ্যা লক্ষের ঘরে প্রবেশ করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওই পোর্টালে পশ্চিমবঙ্গের অবশ্য কোনও তথ্য নেই।

সূত্রের খবর, এ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। যার মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের ১৬টি জেলা ও স্বাস্থ্য জেলা মিলিয়ে আক্রান্ত মোট ৭৩,৩১৮ জন। তালিকার শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (আক্রান্ত ১৭,৩৭৪ জন)। এর পরে রয়েছে কলকাতা (আক্রান্ত ১১,৯৮৫ জন), মুর্শিদাবাদ (৯,৩৮৬ জন)। যদিও স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, এখন আর তেমন ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে না।

সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলেন, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা কমে গিয়েছে, এটা বলা যায় না। এখনও রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে সঙ্কটজনকও রয়েছেন। মনে হচ্ছে, ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে নভেম্বরের শেষ হয়ে যাবে। আবহাওয়ার পরিবর্তনেও মশার বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এর মধ্যে যদি আবার কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে। ফর্টিস হাসপাতালের ফেসিলিটি ডিরেক্টর আশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রোগী খুব বেড়ে গিয়েছে, যেমন বলা যায় না, তেমনই একেবারে কমে গিয়েছে, এটাও নয়। এখনও কিন্তু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তবে সঙ্কটজনক কেউ নেই।’’ মঙ্গলবারও ওই হাসপাতালে ১০ জন ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অনেকেরই তীব্র জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পরে পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। পুজোর পরে সেই প্রবণতা বেড়েছে। এ দিন পিয়ারলেস হাসপাতালে ৩১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন। সেখানকার এক কর্তা, চিকিৎসক সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘‘শেষ কয়েক সপ্তাহ ধরে গড়ে ২৫-৩০ জন করে রোগী ভর্তি থাকছেন। সংক্রমণের চিত্রটা পুরোপুরি বদলায়নি।’’ ক্রিটিক্যাল কেয়ারে দু’-তিন জন থাকলেও সাধারণ শয্যা মিলিয়ে সামগ্রিক ভাবে দৈনিক ১৫-২০ জন করে চিকিৎসাধীন থাকছেন বলে জানাচ্ছেন উডল্যান্ডস হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা। তিনি বলেন, ‘‘ফুসফুসের চার পাশে ও পেটে জল জমছে অনেকের। তাঁদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্য সিসিইউ-তে রাখা
হচ্ছে। এঁদের প্লেটলেটও অনেক কম থাকছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue Dengue Death Dengue Fear

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy