মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিতে ছয়লাপ হয়ে গেল হুগলির চন্দননগরের পথঘাট। রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের তরফে মমতা এবং জগদ্ধাত্রী প্রতিমার ছবি সংবলিত ফ্লেক্স ঝোলানো হয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজোয় মাতোয়ারা শহরের বিভিন্ন পুজোমণ্ডপের সামনে। মমতার ছবি সংবলিত ফ্লেক্সে লেখা রয়েছে, ‘ধর্ম আমার...ধর্ম তোমার, উৎসব সবার’। নীচে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলায় স্বাক্ষর। ফ্লেক্সের বাঁ দিকের উপরে রয়েছে বিশ্ববাংলার লোগো।
এতদ্বারা ইন্দ্রনীলের একার ছবি সংবলিত হোর্ডিং নিয়ে যে ‘বিতর্ক’ তৈরি হয়েছিল তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র চন্দননগরে, তার অবসান হল। উৎসবের জৌলুসে উধাও হয়ে গেল হোর্ডিং সংক্রান্ত বিতর্ক।
মঙ্গলবার দুপুরে যখন আসন্ন আন্তর্জাতিক কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সাংবাদিক সম্মেলন করতে ব্যস্ত মন্ত্রী ইন্দ্রনীল, তখনই দেখা যায় চন্দননগরের ছবি বদলে গিয়েছে। গত রবিবার থেকে ইন্দ্রনীলের ছবি সংবলিত হোর্ডিং ঝুলেছিল গোটা চন্দননগর জুড়ে, যাতে লেখা, ‘আলোর শহর চন্দননগরে স্বাগতম, ইন্দ্রনীল সেন’। নীচে লেখা, ‘বিধায়ক, চন্দননগর বিধানসভা’। তার পরে জেলা তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল এই মর্মে যে, কেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বা দলের অন্যতম নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বাদ দেওয়া হল? জেলা তৃণমূলের অনেক প্রবীণ নেতাও কার্যত বিস্মিত হয়েছিলেন। যদিও প্রকাশ্যে কেউই কোনও মন্তব্য করেননি।
যদিও দলের মধ্যে বিতর্কের কথা মানতে চাননি ইন্দ্রনীল। তাঁর দাবি ছিল, এই প্রশ্ন যাঁরা তুলছেন, তাঁরা কেউ তৃণমূলের লোক নন। তাঁরা বিজেপি। ইন্দ্রনীল সোমবার বলেছিলেন, ‘‘‘মা জগদ্ধাত্রীর মূর্তি ছাড়া যেমন পুজো সম্ভব নয়, তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়াও আমরা জলছবি। মূল পুজো শুরু মঙ্গলবার থেকে। তখন ছবি বদলে যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকবে সব মণ্ডপের বাইরে।’’ বস্তুত, মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, এটা প্রতি বছরেরই ছবি। মূল পুজো যে দিন থেকে শুরু হয়, সে দিন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ফ্লেক্স বা হোর্ডিং লাগানো হয় চন্দননগরে। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে তেমনই দেখা গিয়েছে।
ইন্দ্রনীলের ঘনিষ্ঠদের একাংশের বক্তব্য ছিল, অনেক সময় দেখা যায়, পুজো শুরুর আগে থেকে ফ্লেক্স বা হোর্ডিং লাগালে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সেগুলি কেউ বা কারা খুলে নেয় বা ছিঁড়ে দেয়। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ফ্লেক্স আগে লাগিয়ে তা হতে দেওয়া হয়নি। সে কারণেই মূল উৎসব শুরুর সময়ে মমতার ছবি দেওয়া ফ্লেক্স টাঙানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। দলের মধ্যে যাঁরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁরা মন্ত্রী তথা বিধায়ক ইন্দ্রনীলকে ‘খাটো’ করতেই তা করেছেন বলে অভিমত তাঁদের।