Advertisement
E-Paper

ঘূর্ণাবর্তের খেল্‌! উত্তরে স্বস্তি, দহন দক্ষিণে

ফারাক গড়ে দিচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত! তাই রাজ্যের দুই প্রান্তে দুই ছবি।উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সে বৃষ্টি হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:১৪

ফারাক গড়ে দিচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত!

তাই রাজ্যের দুই প্রান্তে দুই ছবি।

উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সে বৃষ্টি হচ্ছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে দিনের পারদ সে-ভাবে বাড়ছে না। ভরা গ্রীষ্মেও স্বস্তির আবহাওয়া।

আর দক্ষিণবঙ্গে?

রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে নাগাড়ে তাপপ্রবাহ চলছে। পুকুর, নদী শুকিয়ে ফুটিফাটা হয়ে গিয়েছে মাটি। কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণবঙ্গে ক’দিন হল শুকনো গরমের জ্বালা কমেছে বটে। কিন্তু এখন বাড়তি তাপমাত্রার দোসর হয়েছে মাত্রাছাড়া আর্দ্রতা। রাস্তায় বেরোলেই ঘেমেনেয়ে একশা হতে হচ্ছে। বেলাগাম অস্বস্তিতে নাজেহাল সবাই। আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে এই অস্বস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে না আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার গড় করে অস্বস্তির মাত্রা বা অস্বস্তিসূচক নির্ধারণ করেন আবহবিদেরা। এই সূচক ৫৫ হলে স্বাভাবিক। ৬৫ হলে চরম অস্বস্তি। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে কলকাতার অস্বস্তিসূচক ছিল ৬২-৬৩। অর্থাৎ স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি শুধু নয়, চরম অস্বস্তির কাছাকাছি।

বাঁকুড়া, বীরভূম, আসানসোলে এখনও তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। হাওয়া অফিস জানায়, এ দিন বাঁকুড়ার তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ছয় ডিগ্রি বেশি। স্বাভাবিকের থেকে সাত ধাপ উঠে ৪৩.৬ ডিগ্রিতে দাঁড়িয়েছে শ্রীনিকেতনের তাপমাত্রা। এ দিন ৪৪ ডিগ্রি ছুঁয়েছে আসানসোলের পারদ!

রাজ্যের দু’প্রান্তের আবহাওয়ায় এতখানি ফারাক কেন?

আবহবিদদের একাংশের মতে, ফারাকটা গড়ে দিচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখা। যার হাত ধরে বাতাসে জোলো হাওয়া থিতু হচ্ছে এবং ঝড়বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কয়েক দিন আগেও এমন একটি অক্ষরেখা তৈরি হয়েছিল। এ দিন ফের একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। তার ফলেই নতুন করে স্বস্তির আবহাওয়া মিলছে তরাই-ডুয়ার্সের জেলাগুলিতে। আর দক্ষিণে ঘূর্ণাবর্ত বা অক্ষরেখা তো দূর অস্ত্, গোটা এপ্রিলে একটা কালবৈশাখীও হয়নি! অথচ হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, এপ্রিলে এখানে ৩-৪টি কালবৈশাখী হওয়ার কথা। এমন পরিস্থিতি কেন?

আবহবিজ্ঞানী বলছেন, এ বার গোড়া থেকেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে শুকনো গরমের দাপট ছিল। বঙ্গোপসাগরের উচ্চচাপ বলয়ও উধাও হয়ে যায়। ঢুকে পড়েছিল ঝাড়খণ্ডের গরম হাওয়া। ফলে জোলো হাওয়ার অভাবে কালবৈশাখীর মেঘ তৈরিই হতে পারছিল না। কয়েক দিন হল, প্রকৃতির মর্জি বদলের ফলে ফের জোলো হাওয়া ঢুকছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। শুকনো গরম উধাও।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানী বলছেন, এখন উত্তরবঙ্গ বা পড়শি রাজ্য ও়ড়িশায় তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ অক্ষরেখার দৌলতে জলীয় বাষ্প দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকছে বটে। কিন্তু তাতে বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে না। বরং মাত্রা ছাড়াচ্ছে অস্বস্তি।

এই পরিস্থিতিতে আবহবিদদের কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, লাগাতার জলীয় বাষ্প ঢোকার ফলে বাতাসে ঘন মেঘ তৈরির পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে আগামী মাসের গোড়ায় কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকায় বৃষ্টি হলেও হতে পারে। লাগাম পড়তে পারে পশ্চিমের তাপপ্রবাহে।

সত্যিই তেমনটা হবে কি?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন হাওয়া অফিসের কর্তারাও।

Depression South North
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy