দিন দশেক বাদে উত্তুরে বাতাস সবে একটু একটু বইতে শুরু করেছিল। শিরশিরে ঠান্ডার আমেজ গায়ে মাখতে না-মাখতেই ফের দুঃসংবাদ!
শোনা গেল, বঙ্গোপসাগরে আবার অতিথি এসেছে। নতুন এক নিম্নচাপ, যা কিনা ফের উত্তুরে হাওয়ার মুখে দেওয়াল তোলার ক্ষমতা রাখে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস: আন্দামান সাগরে জন্ম নেওয়া নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টায় অতিগভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরিমণ্ডলে দেদার জলীয় বাষ্প ঢোকার সম্ভাবনা। শীতের বারোটা বাজারও।
ক’দিন আগেই সাগরের জোলো হাওয়া এসে উত্তুরে হাওয়ার পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল। থার্মোমিটারের পারাও চড়ছিল তরতরিয়ে। কিন্তু রবিবার থেকে ফের হিমেল উত্তুরে বাতাস হাজির হয়ে তাপমাত্রা নামাতে থাকে। রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস— স্বাভাবিকের ৪ ডিগ্রি বেশি। চব্বিশ ঘণ্টা না-কাটতেই সোমবার তা এক লাফে নেমে এসেছে ১৭.৫ ডিগ্রিতে, স্বাভাবিকের মাত্র ১ ডিগ্রি উপরে।
স্বভাবতই শীতের আশায় মহানগর বুক বাঁধতে শুরু করেছে। তবে তাতে এক রাশ জল ঢেলে দিতে চলেছে সদ্যোজাত নিম্নচাপ। আলিপুর হাওয়া অফিসের আবহবিদেরা বলছেন, শীত থিতু হতে গেলে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে নামা চাই। নিম্নচাপের দৌলতে এ যাত্রায় যা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বস্তুত এ মরসুমে দক্ষিণবঙ্গে শীতের ভাগ্য অনেকটা ওই নিম্নচাপটির মতিগতির উপরে নির্ভর করছে বলে আবহবিজ্ঞানীদের একাংশের অভিমত। মৌসম ভবনের পর্যবেক্ষণ, আগামী দিন দুয়েকের মধ্যে সেটি অতিগভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হবে। তার পরে সাগর পা়ড়ি দিতে দিতে ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সে ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলের দিকে ধেয়ে এলে শীতের পথে আরও কাঁটা বিছোবে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আগামী দু’-তিন দিন এমনই ঠান্ডা ভাব থাকবে। তার পরে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে।’’
তা হলে শীত আসবে কবে?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের বক্তব্য: বর্ষার মতো শীত আসারও নির্দিষ্ট কোনও তারিখ নেই। তাপমাত্রা ওঠা-নামা করতে করতে এক সময় শীত জাঁকিয়ে পড়ে। কিন্তু এ বার পরের পর নিম্নচাপের বাধা কাটিয়ে দক্ষিণবঙ্গে শীত থিতু হতে হতে ডিসেম্বরের অর্ধেক গড়িয়ে যেতে পারে বলে আবহবিদদের অনুমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy