Advertisement
E-Paper

বৃষ্টির ঘাটতি কিছুটা সামলে দিতে পারে নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্ত

আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্ষা সমাগম এখনও অনেক দূরের ব্যাপার। তবে পুরোপুরি হতাশ হওয়ার কারণ নেই বলে আশ্বাস দিচ্ছে হাওয়া অফিস। মার্চ-এপ্রিলে কালবৈশাখী যত কৃপণতাই করুক, মে-তে তার দাক্ষিণ্য মিলছে মাঝেমধ্যেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৬ ০৩:৫১

আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্ষা সমাগম এখনও অনেক দূরের ব্যাপার। তবে পুরোপুরি হতাশ হওয়ার কারণ নেই বলে আশ্বাস দিচ্ছে হাওয়া অফিস। মার্চ-এপ্রিলে কালবৈশাখী যত কৃপণতাই করুক, মে-তে তার দাক্ষিণ্য মিলছে মাঝেমধ্যেই। আবহাওয়ার মতিগতি খতিয়ে দেখে আবহবিদেরা জানান, বজ্রগর্ভ মেঘের দৌলতে বৃষ্টি পাওয়া যাবে রাজ্যের দু’প্রান্তেই। সেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির ফলে ভ্যাপসা গরম সইতে হবে ঠিকই। তবে নাকাল করা তাপমাত্রা থেকে রেহাই পাবেন মানুষজন।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর, কয়েক দিন ধরে প্রায় রোজই দুপুর বা বিকেলের দিকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। তার ফলে বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির যে-ঘাটতি তৈরি হয়েছিল, তার কিছুটা পূরণ হচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টির ঘাটতি অনেকটাই মিটে যেতে পারে বলেও আশা করছেন আবহবিদদের অনেকে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাঞ্চলীয় ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ শুক্রবার জানান, উত্তরপ্রদেশ থেকে বিহার, ঝাড়খণ্ড, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। সেই সঙ্গে বিহার এবং লাগোয়া উত্তরবঙ্গের উপরে রয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। নিম্নচাপ অক্ষরেখা আর ঘূর্ণাবর্তের যুগলবন্দিতে দক্ষিণ ও উত্তর— বাংলার দু’প্রান্তেই বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হচ্ছে। তার ফলে মিলছে ঝড়বৃষ্টিও।

গোকুলবাবু বলেন, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সেও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সিকিমে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

বৃষ্টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আবহবিদেরা বলছেন, সাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প এ রাজ্যের পরিমণ্ডলে ঢুকিয়ে দিয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’। তার উপরে নিম্নচাপ অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের টানে বঙ্গোপসাগর থেকে আরও জলীয় বাষ্প ঢুকছে। বর্ধিত তাপমাত্রায় সেই জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে উঠে ঘনীভূত হয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করছে। তা থেকেই নামছে বৃষ্টি। এ দিন সকালেও কলকাতার লাগোয়া কোনও কোনও এলাকায় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছিল। তা থেকে অল্পবিস্তর বৃষ্টিও হয়েছে। রেডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, বিকেলে ঝাড়খণ্ড এবং লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের বিভিন্ন জেলাতেও বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তা থেকে ঝড়বৃষ্টিও হয়েছে কোনও কোনও এলাকায়।

দক্ষিণবঙ্গে এ বার বসন্তের শুরু থেকেই আবহাওয়ার মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল। তার জন্য ‘এল নিনো’ পরিস্থিতি অর্থাৎ প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকেই দায়ী করেছিলেন আবহবিদেরা। তার উপরে গরমের শুরুতেই বঙ্গোপসাগরের উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ উপকূল থেকে সরে গিয়েছিল। ফলে ঝাড়খণ্ড থেকে ‘লু’ বা শুকনো গরম হাওয়া এসে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল কলকাতায়। সেই সঙ্গে লাগোয়া জেলাগুলিতেও। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, এল নিনো পরিস্থিতি ইতিমধ্যে অনেকটা কেটে গিয়েছে। বঙ্গোপসাগরেও উচ্চচাপ বলয় ফিরে এসেছে। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর দৌলতে দক্ষিণবঙ্গে এখন জলীয় বাষ্পের রমরমা।

মৌসম ভবনের খবর, ১৯ মে থেকে ২৫ মে— এই সাত দিনে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ৩২.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা স্বাভাবিকের থেকে ৫৭ শতাংশ বেশি। তবে ১ মার্চ থেকে ২৫ মে— এই সময়ের মধ্যে বৃষ্টির ঘাটতি এখনও ২২ শতাংশ। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে গোটা মরসুমে মাত্র পাঁচ ‌শতাংশ ঘাটতি রয়েছে।

মৌসম ভবনের এক আবহবিদ বলছেন, ‘‘গরমকালে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে না, এটা ধরে নিয়েই পরিস্থিতি মোকাবিলার রূপরেখা তৈরি করা হয়। সেখানে বৃষ্টির ঘাটতি যতটা কমে, ততই মঙ্গল।’’

rain Depression
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy