Advertisement
E-Paper

ডেউচা: জোড়া লক্ষ্যে শাহের শরণে নবান্ন

রাজ্যের আধিকারিক মহলের খবর, পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ডেউচা নিয়ে সরাসরি অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৫৬
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র হাসিলের মৎস্যচক্ষু ভেদ আর বিরোধী শিবিরের মোকাবিলা একই সঙ্গে করার রাস্তা নিচ্ছে নবান্ন। ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা উত্তোলন নিয়ে বিরোধীদের একাংশ ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে। অথচ এই মুহূর্তে ওই প্রকল্প তৃণমূল সরকারের তুরুপের তাস। সেই প্রকল্পের সামনে প্রশাসনিক ‘বাধা’ দূর করতে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের ১৭ ডিসেম্বরের বৈঠকেই রাজ্যের তরফে এই বিষয়ে তদ্বির-তদারকির সূত্রপাত। তার পর থেকেই কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে চলেছে।

রাজ্যের আধিকারিক মহলের খবর, পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ডেউচা নিয়ে সরাসরি অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, ওই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে খনি এলাকার উপরিভাগের গ্রানাইট পাথরের স্তর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কাটতে হবে। তার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি লাগে। তাই তাঁদের ধারণা, পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকের লিখিত আলোচ্যসূচিতে এটি না-থাকলেও গ্রানাইট পাথরের স্তর কাটার অনুমতি যাতে মেলে, সেই জন্য হস্তক্ষেপ চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন ওই বৈঠকেই। শাহ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর।

দ্বিতীয় দফায় রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল সরকার যে-দু’টি বড় প্রকল্পকে পাখির চোখ করেছে, ডেউচা-পাঁচামির কয়লা খনি তার অন্যতম। অন্য প্রকল্পটি হল তাজপুরের গভীর সমুদ্রবন্দর। আদানি গোষ্ঠীকে ইতিমধ্যেই তাজপুরের বন্দর তৈরির ভার দিয়েছে রাজ্য। কিন্তু ডেউচার জট এখনও পুরোপুরি কাটেনি। এক দিকে প্রকল্পটি কতটা লাভজনক হবে, তা বুঝে নিতে হচ্ছে রাজ্যকে। অন্য দিকে রয়েছে জমি নিয়ে বিরোধিতার কাঁটা। রাজ্য সরকার ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ভাল শর্তে জমি নেওয়ার পথে হাঁটলেও বিরোধিতা এড়ানো যাচ্ছে না। এই নিয়ে বিরোধী শিবিরের দিকেই আঙুল তুলছে শাসক গোষ্ঠী।

এখানেই রাজ্য সরকারের তরফে প্রশাসনিক একটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রার্থনার বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, রাজ্য সরকার যে-অনুমতি চাইছে, কেন্দ্র তা দিয়ে দিলে বিরোধী শিবিরকে ‘বার্তা’ দেওয়া যাবে। শুধু তা-ই নয়, এই প্রশ্নে কেন্দ্র পাশে থাকলে রাজ্য সরকারের পক্ষে বাকি কাজও সহজ হবে।

পর্যাপ্ত আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তৃণমূল সরকারের আমলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে উল্লেখযোগ্য বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের খরা রয়েছে। তৃতীয় তৃণমূল সরকার শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানকে ঘোষিত অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখায় ডেউচা-পাঁচামির মতো বড় প্রকল্পের বাস্তবায়ন খুব জরুরি। কারণ, শেষ পর্যন্ত সব বাধা কাটিয়ে প্রকল্পটি লাভজনক ভাবে উঠে এলে তাতে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে। ওই প্রকল্পের সুবাদেই বীরভূম এবং তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে।

প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, ডেউচা-পাঁচামির ভূগর্ভে বিপুল পরিমাণ কয়লা মজুত রয়েছে ঠিকই। কিন্তু মাটির কতটা নীচে গেলে তবে উৎকৃষ্ট মানের কয়লার সন্ধান পাওয়া যাবে, সেই সমীক্ষার কাজ এখনও চলছে। ফলে এই পর্যায়ে গ্রানাইট প্থরের স্তর কাটার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি রাজ্য সরকারের কাছে খুব জরুরি।

deucha Mamata Banerjee Amit Shah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy