Advertisement
E-Paper

পড়ে টাকা, নিয়ম-ফাঁসে ইএসআই

এই টানাপড়েনে মার খাচ্ছে হাসপাতালের উন্নয়ন। টাকার অভাবে মাঝপথে থমকে আছে রোগীদের অপেক্ষা করার ঘর ও রোগীর আত্মীয়দের থাকার ঘর তৈরি, হাসপাতালের ভিতরে পাকা রাস্তা নির্মাণ, নিকাশি ব্যবস্থা ও ভেঙে পড়া সিলিং সংস্কার, নতুন শয্যা পাতার জায়গা তৈরি করা, ট্রান্সফর্মার বসানোর মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
টাকার অভাবে থমকে ইএসআই হাসপাতালগুলির উন্নয়ন।ছবি:সংগৃহীত।

টাকার অভাবে থমকে ইএসআই হাসপাতালগুলির উন্নয়ন।ছবি:সংগৃহীত।

রাজ্যের ইএসআই হাসপাতালগুলির সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বরাদ্দ টাকা সময়েই দিয়েছিল কেন্দ্রের ইএসআই কর্পোরেশন। কিন্তু সেই টাকা আটকে রেখেছেন রাজ্য সরকারের ইএসআই মেডিক্যাল বেনিফিট স্কিমের অধিকর্তা। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের ইএসআই হাসপাতালগুলি নিয়ম ভেঙে রাজ্য বা কেন্দ্রের পূর্ত দফতরের বদলে বেসরকারি ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে। কাজেই এ নিয়ে সরাসরি দিল্লির ইএসআই কর্পোরেশনের সবুজ সঙ্কেত না পেলে তিনি টাকা ছাড়তে পারবেন না।

এই টানাপড়েনে মার খাচ্ছে হাসপাতালের উন্নয়ন। টাকার অভাবে মাঝপথে থমকে আছে রোগীদের অপেক্ষা করার ঘর ও রোগীর আত্মীয়দের থাকার ঘর তৈরি, হাসপাতালের ভিতরে পাকা রাস্তা নির্মাণ, নিকাশি ব্যবস্থা ও ভেঙে পড়া সিলিং সংস্কার, নতুন শয্যা পাতার জায়গা তৈরি করা, ট্রান্সফর্মার বসানোর মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

গৌরহাটি, মানিকতলা, কামারহাটির মতো একাধিক ইএসআই হাসপাতালের সুপারেরা শ্রম দফতরে অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, এতে রোগীদের স্বার্থ ধাক্কা খাচ্ছে। গৌরহাটি ও মানিকতলা ইএসআই কর্তৃপক্ষের আরও অভিযোগ, যতটা কাজ হয়েছে, তার টাকাও ঠিকাদারদের দেওয়া যাচ্ছে না। এ দিকে, তাঁদের কাছে কোনও হাসপাতালের ৪ কোটি, কোনও হাসপাতালের ৬ কোটি টাকা মতো বকেয়া। পুজোর মুখে টাকা না পেয়ে ঠিকাদারেরা কর্মীদের বেতন ও বোনাস দিতে পারছেন না। ফলে সুপারদের উপরে প্রবল চাপ তৈরি হচ্ছে। হুমকিও পাচ্ছেন অনেকে।

চলতি আর্থিক বছরে ইএসআই হাসপাতাল সংস্কারে কেন্দ্র ৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে হাসপাতালগুলি ১৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকাই আটকে দিয়েছেন রাজ্যের ইএসআই (এমবি) স্কিমের অধিকর্তা মৃগাঙ্কশেখর কর। তাঁর যুক্তি, ‘‘২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ইএসআই কর্পোরেশন নির্দেশ জারি করে বলে, হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের কাজ এ বার থেকে শুধু কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর (সিপিডব্লিউডি) বা রাজ্যের পূর্ত দফতর (পিডব্লিউডি)-কে দিয়েই করাতে হবে। কিন্তু রাজ্যের অধিকাংশ হাসপাতাল বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থা মারফত কাজগুলি চালাচ্ছে। তাই আমি টাকা দিতে পারব না।’’

ইএসআই হাসপাতালের কর্তাদের পাল্টা যুক্তি, পিডব্লিউডি বা সিপিডব্লিউডি-কে কাজ দিলে সেই কাজ কবে শেষ হবে কেউ জানে না। কেন্দ্রীয় ইএসআই কর্পোরেশনের পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র স্টেট মেডিক্যাল কমিশনার মানবেন্দ্রনাথ রায় নিজে ‘জেনারেল ফিন্যানশিয়াল রুল-২০১৭’-র নির্দিষ্ট ধারা উল্লেখ করে মৃগাঙ্কবাবুকে লিখিত জানিয়েছেন যে, টাকা ছাড়তে সমস্যা নেই। কিন্তু মৃগাঙ্কবাবু অনড়। তাঁর কথায়, ‘‘আগে দিল্লির ইএসআই কর্পোরেশনের লিখিত অর্ডার বার করুন। তবে মানব।’’ যা শুনে মানবেন্দ্রবাবুর উক্তি, ‘‘অদ্ভুত পরিস্থিতি। নতুন জেনারেল ফিন্যানশিয়াল রুলে রয়েছে, হাসপাতালগুলি ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এক-একটি কাজ টেন্ডার ডেকে বাছাই করা যে কোনও সংস্থাকে দিয়েই করাতে পারে।’’ গত জুনে শ্রম দফতরের যুগ্মসচিব চিঠি দিয়ে জানান, ইএসআই হাসপাতাল সংস্কার-রক্ষণাবেক্ষণের কাজ আগের মতোই চলতে পারে। তাতেও টলানো যায়নি মৃগাঙ্কবাবুকে।

Health ESI Hospitals Development ESI Corporation ইএসআই কর্পোরেশন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy